কল্পনা করে দেখুন তো গ্রামের এক দস্যি মেয়ে সাবিলা নূর। তাও রবীন্দ্রনাথের ‘সমাপ্তি’ গল্পের সেই পাগলী মেয়েটা। সবসময় শহুরে চরিত্রে যাকে দেখে অভ্যস্থ সেই সাবিলাই এবার হলেন রবীন্দ্রনাথের নায়িকা। শুধু তাই নয়, এই ঈদেও তিন ধরণের বৈচিত্রময় চরিত্রে হাজির হচ্ছেন তিনি। নিজেকে বদলাতে চাইছেন সাবিলা। শ্রাবনী ফেরদৌসের পরিচালনায় রবীন্দ্র রজতজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মানাধীন ‘সমাপ্তি’ নাটকের শুটিং করছিলেন। মানিকগঞ্জের জমিদার বাড়ি থেকে কথা বললেন রবীন্দ্রনাথের নায়িকা সাবিলা।
রবীন্দ্রনাথ পড়া হয় আপনার?
খুব একটা পড়া হয়না এখন। আগে পড়া হতো। গল্প পড়তাম রবীন্দ্রনাথের।
রবীন্দ্রনাথের নাটকে কাজ করছেন, কেমন প্রস্তুতি ছিলো?
খুব টাফ। বেশ কিছুদিন স্ক্রিপ্ট পড়েছি। প্র্যাক্টিস করেছি। সবসময় তো শহুরে চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটাই প্রথম গ্রামের মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করছি। ডায়ালগগুলো, এক্সপ্রেশনগুলো নিয়ে ভেবেছি। দর্শক একটু ভিন্নভাবেই দেখবে আমাকে এবার। তাছাড়া, সজল ভাইর সঙ্গেও এটা আমার প্রথম কাজ। স্পেশাল কাজ আমার জন্য এটা।
শহুরে সাবিলা এখন গ্রামের দস্যি মেয়ে?
ক্যারেক্টারটার সঙ্গে আমার মিল আছে। আমিও একটু দুষ্টু টাইপের। ফলে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়নি। এখানে জমিদার বাড়িতে, নদীর ঘাটে শুটিং চলছে। গরমে কষ্ট পাচ্ছি শুধু।
অন্য কাজের খবর কি?
ঈদের জন্য তিনটা নাটকের কাজ করলাম। ইফতেখার আহমেদ অসিনের ‘পলায়ন বিদ্যা’। মাসুদ সেজানের সাত পর্বের ধারাবাহিক ‘লাভ এন্ড কোং’, মনিরুজ্জামান রিপনের ‘যেমন খুশি তেমন সাজো’। তিনটা নাটকেই আমার চরিত্রগুলো অন্যরকম।
যেমন?
‘পলায়ন বিদ্যা’তে আমাকে দেখা যাবে পালিয়ে বিয়ে করা একটা মেয়ে। বউ সাজে দেখা যাবে। নাটকের শেষে মজার একটা টুইস্ট আছে। লাভ এন্ড কোং এ দেখা যাবে- বয়ফ্রেন্ডকে প্যারা দেয়া টাইপের একটা মেয়ের ক্যারেক্টারে। আর যেমন খুশি তেমন সাজোতে দেখা যাবে ঢাকাইয়া মেয়ের চরিত্রে। ঢাকাইয়া মেয়ের চরিত্রতে কাজ করতে গিয়ে খুব এনজয় করেছি।
ভাষা শিখলেন কিভাবে!
ঢাকাইয়া ভাষা সম্পর্কেতো আগে থেকেই একটু আইডিয়া ছিলো, কিন্তু তার আগে পুরান ঢাকার বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্র্যাক্টিস করেছি। খুব একটা সমস্যা হয়নি।
তাহলে সাবিলা বদলে যাচ্ছে?
হ্যাঁ, সবসময় একই টাইপের কাজ করতে ভালো লাগে না। ঈদে চেয়েছি দর্শকের কাছে একটু অন্যভাবে উপস্থাপিত হতে। তাছাড়া এই নাটকটাও আমার ক্যারিয়ারের জন্য স্পেশাল একটা নাটক।
এই সময়ে দেখা যাচ্ছে তারুণ্য নির্ভর নাটকের দিকে ঝুঁকছে নির্মাতারা। তারুণ্যের প্রতিনিধি হিসেবে আপনার মন্তব্য কি?
এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া। কিন্তু একই টাইপের গল্প বেশি হয়ে যাচ্ছে। আরবান টাইপ গল্প বেশি হয়ে যাচ্ছে। বৈচিত্রময় চরিত্র, বৈচিত্রময় গল্প আসছে না। কিন্তু তবু বলবো, কাজের সুযোগ পাচ্ছি এটা অনেক বড় প্রাপ্তি আমাদের জন্য।
বয়সটাতো হৈ-হুল্লোড় করার, অভিনয়ের ব্যস্ততায় ডুবে গেলেন। চাপ মনে হয়?
আমি নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে থার্ড সেমিস্টারে পড়ছি। পড়াশোনার চাপ আছে। দেখা যায় ক্লাস শেষ করেই শুটিংয়ে দৌড়াতে হচ্ছে। ফ্রেন্ডরা বলে, সারাজীবন শুটিংই করে গেলি। কিন্তু আমার অভিনয়টা ভালো লাগে। অভিনয়টাই করে যেতে চাই। পড়াশোনাটাও শেষ করতে হবে এর পাশাপশি।
এ পর্যন্ত যে কাজগুলো করেছেন, এর মধ্যে প্রিয় কোনগুলো?
তিনটা কাজ আমার খুব পছন্দ- রেদোয়ান রনির ‘ইউটার্ণ’। ‘রাহাত রহমানের ‘মাঙ্কি বিজনেস’, মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘শত ডানার প্রজাপতি’। এই কাজগুলোর ব্যাপারে আমার অন্যরকম ভালো লাগা আছে।