করোনাভাইরাস: লকডাউনে বিপুল চাহিদা বেড়েছে কন্ডোম ও জন্ম-নিরোধকের
নয়াদিল্লি: কথায় বলে কারও পৌষমাস তো কারও সর্বনাশ। ২১ দিনের চলতি লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি কাজকর্ম সব শিকেয়। গোটা দেশে সব অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কার্যত স্তব্ধ। অর্থনীতিতে জোর ধাক্কা লেগেছে। কিন্তু লকডাউনের জেরে সকলে গৃহবন্দি। অর্থাৎ হাতে এখন অফুরন্ত সময়। সরকারের নির্দেশ ‘সোশাল ডিস্টান্সিং’ বজায় রাখতে হবে। ফলত, বাইরে যাওয়ার জো নেই। এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রেমকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় মগ্ন দেশের বিভিন্ন শহরে বসবাসকারী হাজার হাজার যুগল। তরুণ দম্পতিরা এখন তাই এই ফাঁকে ‘ক্লোজ কোহ্যাবিটেশন’-এর উষ্ণতায় ভেসে যেতে তৎপর। এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD মনোস্তত্ত্ববিদদের মতে, বর্তমান যুগের ব্যস্ততর জীবনে বহু দম্পতি নিজেদের জন্য ঠিক সময় বের করতে পারেন না। দিনভর ঠাসা শিডিউলের ফলে চলে আসে ক্লান্তি। সব মিলিয়ে যৌনমিলনের সময় বা ইচ্ছে, কোনওটাই অবশিষ্ট থাকে না। এখন লকডাউনের ফলে হারানো সময় ফিরে পেতে মরিয়া। এটা নিছক কাল্পনিক ধারণা নয়, রীতিমতো সমীক্ষা চালিয়ে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা থেকেই স্পষ্ট, যুগলরা এই সময়ে একে অপরের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ও ঘনিষ্ঠ মুহূর্ত কাটাতে চাইছেন। পরিসংখ্যান শুনলে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হবে। বহু ওষুধের দোকান ও অনলাইন এবং ই-কমার্স স্টোরের তরফে দাবি করা হয়েছে, লকডাউনের এই সময়ে বিপুল পরিমাণ কন্ডোম ও অন্যান্য গর্ভ-নিরোধক বিক্রি হয়েছে। করোনাভাইরাস মানুষের মধ্যে ভয় ও আতঙ্কের সৃষ্টি যে করেছে এতে কোনও সন্দেহ নেই। অনেকেই ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান। ফলে সেখান থেকে জন্ম নিচ্ছে স্ট্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রেস কমাতে যৌনমিলনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মনোস্তত্ত্ববিদেরাও জানিয়েছেন যুদ্ধ ও মহামারীর সময় যৌনমিলনের হার অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই বিভিন্ন দোকানে যেমন খাবার মজুত করা বা মাস্ক-কেনার হিড়িক চোখে পড়েছে, তেমনই কন্ডোম ও গর্ভনিরোধক ওষুধের বিক্রিও ব্যাপকহারে বেড়ে গিয়েছে। মুম্বইয়ের এক ওষুধের দোকানের মালিক জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহে তাঁর দোকানে কন্ডোম বিক্রির হার বেড়ে গিয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। তিনি বলেন, আগে কন্ডোমের ছোট প্যাক (তিনটে) বেশি বিক্রি হত। কিন্তু লকডাউনে বড় প্যাকের (১০ বা ২০টা) বিক্রি বেড়েছে। একই তথ্যের প্রতিফলন অনলাইন স্টোরেও। সেখানেও কন্ডোম ও বিভিন্ন জন্ম-নিরোধকের অর্ডারের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন এমনই একটি বিপণীর শীর্ষ আধিকারিক। শুধু কন্ডোম বা কন্ট্রাসেপ্টিভ নয়। তিনি জানান, সম্প্রতি ভায়াগ্রা জাতীয় ওষুধ এবং ‘সেক্স টয়’-এর চাহিদাও তুঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এই প্রবণতার আঁচ করেছিলেন। অনেকে বলেছেন, এই লকডাউনের ফলে আগামী ডিসেম্বরে আরেকটা জন-বিস্ফোরণের সাক্ষী হতে পারে দেশ। বিশেষজ্ঞদে পরিভাষায় ‘করোনাভাইরাস বেবি বুম’ — যা এই ১৩০ কোটির ভারতের ওপর আরও চাপসৃষ্টি করবে। লকডাউন কেবলমাত্র যে ভারতে হচ্ছে তা নয়। বিশ্বের একাধিক দেশে এই প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষজ্ঞরা এটাও বলেছেন যে, গোটা বিশ্বেই এই বিস্ফোরণ ঘটবে। ২০৩৩ সালে গিয়ে বিশ্ব দেখবে ‘কোয়ারান্টিন’-এর গোটা প্রজন্মকে (২০৩৩ সালে গিয়ে যখন এই শিশুরা ‘টিনেজার’ হবে, তখন তাদের এই নামেই ডাকা হবে)। সূত্র- আনন্দ
|