মেয়েরা স্বাভাবিক ভাবেই অনেক লাজুক। তাদের ছোট ছোট সমস্যাই শেয়ার করতে পারে না আর যৌন সমস্যা হলে তো কথাই নেই। মেয়েদের এমন কিছু ক’ষ্টের কথা নিয়েই সাজিয়েছি আজকের ছোট প্রবন্ধ।
বিবাহিত মহিলা ও যারা বিয়ের পায়তারা করছেন তাদের জন্য এটি বিশেষ উপকারী হবে বলেই মনে করছি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে, সমস্যা গুলোকে হালকা দৃষ্টিতে না দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়াই সমীচীন হবে।
অনেকেরই যৌ’ন চাহিদা হওয়া সত্ত্বেও যৌ’ন স্থান ভিজে না। পানিশূন্যতা, বিভিন্ন ধরনের ও’ষুধ ( কাউন্টার এন্টিহিস্টামিন), নার্সিং, মেনোপজের সময় হরমোন লেভেল পরিবর্তন এর উল্লেখযোগ্য কারণ।
চিকিৎসাঃ
পিচ্ছিল কারক পদার্থ ব্যবহার করতে হবে, পানি জাতীয় ব্যবহার করলে ভালো, কারণ ক’নড’ম এর জন্যে নিরাপদ। কিন্তু কেউ যদি তৈলাক্ত পিচ্ছিল কারক ব্যবহার করে তখন এটি ক’নড’মের স্থিতিস্থাপকতা ন’ষ্ট করে দিতে পারে। রঙ দেয়া, সেন্ট দেয়া ও ফ্লেভার জাতীয় লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। কারণ তা ইস্ট ইনফেকশন করে শুকনা ভাব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। অনেকের প্রশ্ন হতে পারে, ইস্ট ইনফেকশন কি তার পুরুষ সঙ্গীর শরীরেও ইনফেকশন করতে পারে? উত্তর হবে হ্যাঁ । এটি অনেক কমই হয়, কিন্তু হয়। একই রকম লক্ষণ যেমন- লাল হয়ে যাওয়া, চুলকানি, যৌ’নমি’লনের পর অস্বাভাবিক নিঃসরণ হতে পারে। কোন পুরুষের যদি ডায়াবেটিস থাকে, এন্টিবায়োটিক নিতে থাকে অথবা সে তার যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কোন কারণে কমে যায় তখন তার আ’ক্রান্ত হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। খৎনা করা না থাকলেও এর ঝুকি বেড়ে যায়। কারণ এর উপরের চামড়া ভেজা ভেজা অবস্থার সৃষ্টি করে যা ইস্ট বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে।
মিশনারি (পুরুষ উপরে থাকা ) পজিশনে যৌ’ন মি’লনে সমস্যা হওয়াঃ
শতকরা ২০ ভাগ মহিলার জরায়ু নরমালের উল্টো দিকে থাকতে পারে অর্থাৎ পেটের দিকে না থকে শিরদাঁড়ার দিকে থাকেতে পারে। এ ক্ষেত্রে টেম্পুন বা ডায়াফ্রাম ব্যবহার করা ক’ষ্টকর হয় কারণ তা জরায়ুর ভেতর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। তাই নারী উপরে থেকে মি’লনে ক’ষ্ট লাঘব হবে। আর মা হতে চাইলে যৌ’ন মি’লনের পর পেটের উপর অর্থাৎ উপুড় হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে তা স্পার্ম কে সাঁতরে জরায়ুমুখে যেতে সাহায্য করবে।
যৌ’ন চাহিদা কমে যাওয়াঃ
মেনোপজের কাছাকাছি বয়সের মহিলাদের এটি একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা। মেনোপজের আগে ইস্ট্রোজেন হরমোন লেভেল কমে যায়। লুব্রিকেশনের অভাবে ব্যথা ও ব্যথা থেকে আগ্রহ কমে যাওয়া এর প্রধান কারণ।
চিকিৎসাঃ হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি , ইস্ট্রোজেন ক্রিম ও সাপোজিটরি আর লুব্রিকেন্ট (পিচ্ছিল কারক) কাজ দিতে পারে।
যৌ’ন মি’লনের পর প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াঃ কারণঃ
চা’পে ঘষা লেগে মূত্রনালিতে ইরিটেশন হলে জ্বালাপোড়া হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ মি’লন আর যৌ’ন স্থানের শুষ্ক ভাবও এর গুরুত্বপূর্ণ কারণ। প্রস্রাব নালীতে ইনফেকশন হলেও এই সমস্যা হতে পারে। যদি প্রস্রাব যৌ’ন স্থানে লাগার পর জ্বালাপোড়া হয় তবে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মুত্রথলি খালি হওয়ার সাথে সাথে ব্যথা বাড়তে থাকলে মুত্রথলি ইনফেকশনের ব্যাপারেই স’ন্দেহ বেড়ে যায়।
চিকিৎসাঃ
যৌ’ন মি’লনের পর বাথ টাব ভর্তি কুসুম গরম পানিতে বসে থাকলে ব্যথা কমতে পারে। তাছাড়া পিচ্ছিল কারক ব্যবহারেও মাঝে মাঝে উপকার পাওয়া যেতে পারে। যদি এসব কিছুতেই লাভ না হয় তবে ডাক্তার দেখাতে হবে কারণ তখন কারণটা ইনফেকশনের দিকেই বেশি ইঙ্গিত করে। পানি বেশি পান করলে পিচ্ছিলতা ও ইনফেকশন থেকে মুক্তি দুইটা জিনিসেই উপকার পাওয়া যায়।
যৌনমিলনের পর তীব্র দুর্গন্ধ ও চুলকানিঃ কারণঃ
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এমন হতে পারে। নতুন বা একাধিক মি’লন সঙ্গীর কারণে এমন হতে পারে। যৌ’ন স্থানের ভেতরে কিছু দেয়া থাকলে ( যেমন চিকিৎসার জন্যে বা রোগ নির্ণয়ে কোন কিছু ব্যবহার করা হলে ) তা থেকেও হতে পারে। এর পাশাপাশি ইনফেকশনের আরও কিছু লক্ষণ থাকতে পারে যেমন অস্বাভাবিক নিঃসরণ, জ্বালাপোড়া। চিকিৎসা না করা হলে ডেট এর আগেই ডেলিভারি হওয়া, স্বল্প ওজনের বাচ্চা জন্ম নিতে পারে।
চিকিৎসাঃ
এন্টিবায়টিক, যেমন- মেট্রোনিডাজল বা ক্লিন্ডামাইসিন ব্যবহারে লাভ হতে পারে। যাদের বাচ্চার জন্মকালীন ওজন কম বা যাদের ডেট এর পূর্বেই সন্তান জন্ম নিয়েছে তাদের স্ক্রিনিং করাতে হবে।
আরো পড়ুনঅনিয়মিত পিরিয়ড কি সন্তান ধারণে জন্য সমস্যা?
শেষ করার আগে একটা ছোট্ট টিপস দিতে চাই। অনেকেই মনে করেন পিল খেলে মোটা হওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। দীর্ঘ দিন ব্যবহারের জন্যে পিলের উপরে কিছু নেই। আর নতুন বাজারে আসা পিল গুলোর সাইড ইফেক্ট-ও কম। ক’নড’ম ছিড়ে গিয়ে লিক করতে পারে। সেইফ পিরিয়ড মেনে যৌ’ন মি’লন শুধু রেগুলার পিরিয়ড হওয়া মেয়েদের জন্যেই কার্যকরী। তাও সেইফ থেকে ঠিক আনসেইফ পিরিয়ড হওয়ার সময়-ও ভুলবশত গর্ভধারণ হয়ে যেতে পারে কারণ এতটা হিসেব মেনে সেইফ আনসেইফ বের করা সম্ভব হয় না আর জরায়ুর ভেতরে জন্মনিয়ন্ত্রক ডিভাইস রেখে দিলে তার সাইড ইফেক্ট এর তো শেষ নেই। তাই সিদ্ধান্ত আপনার। নিরাপদ থাকুন।