প্রসাবে ক্ষয় / ধাতু ক্ষয় / ঘন ঘন প্রসাবের কারণ, লক্ষন ও হোমিও চিকিৎসা।
প্রসাবে ক্ষয় / ধাতু ক্ষয় / ঘন ঘন প্রসাবের কারণ, লক্ষন ও হোমিও চিকিৎসা।
——————————————————————
আমাদের দেশের পুরুষদের মাঝে যৌনতা বিষয়ক তেমন কোন বিশেষ জ্ঞান না থাকার কারনে এবং যৌবনকালের শুরুতে নিজেদের কতৃক কিছু ভুলত্রুটির কারনে আমাদের সমাজের অধিকাংশ পুরুষদের মাঝেই যৌবনকালের মধ্যবর্তী বয়সে প্রসাবে ক্ষয় ( semen with urine ) নামক একটি রোগের উদ্রেক হয়, যা ধাতু দুর্বলতা / ধাতুক্ষয় / প্রদর রোগ নামেও পরিচিত । এই রোগটি সরাসরি / তৎক্ষণাৎ শরীরের উপর কোন প্রকার প্রভাব তৈরি করে না বিধায় এই রোগটির সৃষ্টি সম্পর্কে আক্রান্ত পুরুষ মানবদেহটি অনুভবও পারে না, বরংচ উক্ত রোগটি খুব ধীরে ধীরে শরীরের উপর প্রভাব ফেলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয় । এক কথায় বলতে গেলে – ইহা নিজে কোন রোগ নয় কিন্তু ইহা অন্যান্য অনেক শারীরিক রোগের সৃষ্টিকারী ।
আমাদের দেশের পুরুষদের মাঝে উক্ত সমস্যা সৃষ্টির প্রধান এবং অন্যতম কারন হল যৌবনকালের শুরুতে অধিক বেশী হস্তমৈথুন করা । এছাড়া অল্প বয়সে অতিরিক্ত যৌন মিলন করা । পাশাপাশি অধিক বেশী পর্ণ দেখা, খারাপ চিন্তা করা।স্বাভাবিক ভাবে হরমোনের অভাবে অথবা কৃত্রিম অতিরিক্ত মৈথন বা অস্বাভাবিক শুক্রপাত করতে থাকলে স্পারম্যাটোরিয়া সৃষ্টি হতে পারে। আবার অনেক সময় অপুষ্টি বা ভিটামিন প্রভৃতির অভাবে অথবা দীর্ঘদিন রক্তশূন্যতা বা নানা প্রকার রোগে ভোগার ফলে ইহা দেখা দিতে পারে। ইহার ফলে তাদের শুক্র নির্গত হলে দেখা যায় তাদের শুক্রে ঘনত্ব (viscosity) কম এবং তা দেখতে বেশ তরল। ইহাতে রোগীর ভয়ানক দুর্বলতা সৃষ্টি হয়।
লক্ষণসমূহ :- উক্ত রোগে আক্রান্ত রোগীর শুক্র অত্যন্ত তরল হয়, রোগী ধীরে ধীরে শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দেহের এবং চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট হয়।
* চেহারার লাবণ্যতা কমে যায়।
* মুখ মলিন এবং চক্ষু কোঠরাগত হয়ে পরে ।
* দেহে প্রয়োজনীয় প্রোটিন এবং ভিটামিনের প্রবল অভাব পরিলক্ষিত হয়।
* রোগীর জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে শরীরের ওজন কমে যায় ফলে শুকিয়ে যায় এবং নানা প্রকার রোগে অতি সহজেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
* দেহে যৌন হরমোন বা পিটুইটারি এড্রিনাল প্রভৃতি গ্রন্থির হরমোন কম নিঃসৃত হয় যার ফলে দেহে যৌন ক্ষমতা কমে যায় এবং শুক্র ধীরে ধীরে পাতলা হতে থাকে।
* দৈহিক এবং মানসিক দুর্বলতা বৃদ্ধি পায়।
* মাথার যন্ত্রণা দেখা যায়।
* আক্রান্ত ব্যক্তি সর্বদাই অস্থির বোধ করে, বসা থেকে উঠলেই মাথা ঘোরে এবং ক্ষুধা হীনতা ভাব দেখা দেয়।
* এ সময় পেনিস বা জননেদ্রীয় এতটাই দুর্বল হয়ে যায় যে, তার শুক্রের ধারণ শক্তি একেবারে কমে যায়।
* রাত্রে স্বপ্ন দেখে শুক্র ক্ষয় হয়, আবার দিনের বেলায়ও নিদ্রাকালীন স্বপ্ন দেখে শুক্রপাত হয় । * প্রসাবের আগে-পরে আঠালো জাতীয় ধাতু নির্গত হয়, সমস্যা ধীরে ধীরে কঠিন আকার ধারণ করলে সামান্য উত্তেজনায় শুক্রপাত হয়।
* স্ত্রীলোক দর্শনে বা স্পর্শে শুক্রপাত ঘটে।
* পায়খানার সময় কুন্থন দিলে শুক্রপাত হয়।
* স্মরণশক্তি কমে যায়, বুদ্ধিবৃত্তি কমে যায়, অকাল বার্ধক্য এবং ধ্বজভঙ্গ রোগের লক্ষণ দেখা ।
ধাতু ক্ষয় রোধে যা করতে হবে :
* হস্তমৈথুন করা বন্ধ করতে হবে।
* পর্নগ্রাফী বা মুভি এড়িয়ে চলতে হবে।
* দুঃশ্চিন্তা করা থেকে বিরত থাকুন এবং মেডিটেশন ব্যায়াম করুন।
* মদ্যপান বা অ্যালকোহল জাতীয় তরল পরিহার করুন।
চিকিৎসা
হোমিও মেডিসিন এ ধরনের প্রস্রাবের সাথে ধাতু ক্ষয় জনিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বহুল পরিচিত ও কার্যকরী।Acid phos, Arg Met, Lactic Acid, Salix nig, Selenium, Nat Phos, Nat Mur, Silicea, Damiana ইত্যাদি হোমিও মেডিসিন সমূহ সেবন করলে বীর্যক্ষয় দূর হয়। তবে মেডিসিন সেবনের পূর্বে অবশ্যয় একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
সূত্র: হোমিও চিকিৎসা ও পরামর্শ