অন্ধকার জীবনের মাশুল গুনছেন মিয়া খলিফা
মানুষের জীবনে কতই না ভুল থাকে। এরমাঝেও কিছু ভুল থাকে যেগুলো আর শোধরানো যায় না। অনুশোচনা করেই কাটাতে হয়। তেমন অনুশোচনার কথাই জানালেন পর্ন স্টার মিয়া খলিফা। ব্যক্তিগত হীনমন্যতা থেকেই এই সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এই পেশায় এসেছিলেন বলে জানান মিয়া।
বিবিসির ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা আমার ওজনের জন্য ভুগেছি এবং নিজেকে কখনও পুরুষের দৃষ্টি আকর্ষণের যোগ্য বলে মনে হতো না। আমার নারীত্বকে যেন কেউ অনুভব করতো না।’
পর্নোগ্রাফির জগৎ থেকে অনেক আগেই বের হয়ে এসেছেন। তবে নিজের জীবনের ভয়াবহ তিন মাসের অভিজ্ঞতা ভুলতে পারছেন না তিনি। আবার, তার সেই পরিচয়ও মানুষ ভুলছে না। এখনো লোকে তাকে সে চোখেই দেখে। মিয়ার মতে, এ পরিচয়টা মুছতে তার সময় লাগবে সেটা তিনি বুঝতে পারছেন। কিংবা হয়তো কোনো দিনই মুছবে না।
অল্প বয়সে অনেক টাকা রোজগার, অজানা রঙিন জগতে হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি থেকেই এই পেশায় গিয়েছিলেন মিয়া। প্রথম যখন পর্ন ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব পান তিনি বুঝতে পারেননি এটিকে কীভাবে প্রত্যাখ্যান করবেন। মোহভঙ্গ হয় মাত্র তিন মাসেই। মাত্র ১২ হাজার ডলার আয় করেছেন, বিনিময়ে তছনছ হয়ে গেছে গোটা জীবন। বাবা-মা ও পরিবারের লোকজন তাকে ত্যাগ করেছেন। পর্ন ছেড়ে দেওয়ার পরেও আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশকিছু মুসলিম অধ্যুষিত দেশে নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। আইএসআইএসের কাছ থেকে খুনের হুমকিও পান।
মিয়ার উপলদ্ধি, পর্নোগ্রাফির জগৎ থেকে বের হওয়াটা সহজ নয়। ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকার পর নানা ফাঁদে আটকে পড়ে অল্প বয়সী মেয়েরা। নারী পাচারকারীদের মাধ্যমেও কীভাবে ছোট ছোট মেয়েরা এ অন্ধকার জগতে আসতে বাধ্য হয় সেটিও বলেছেন মিয়া। কার মতে, বহু মেয়ে অপরিণত মনে, ভুল সিদ্ধান্ত ও কিছু মানুষের পাল্লায় পড়ে নিজের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমাকে এ ধরনের অনেক মেয়েই মেইল করে সেকথা জানিয়েছে। তাদের জীবনের গল্পগুলো ভয়ঙ্কর।
১৯৯৩ সালে লিবিয়ায় জন্ম নেন মিয়া খালিফা। ২০০১ সাল থেকে আমেরিকার বাসিন্দা। ২০১৪’র শেষ দিকে পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে খুব অল্পসময়ের জন্য কাজ করেছেন তিনি। দ্রুতই অন্ধকার জগতের নায়িকা হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। যে পরিচয় এখন তার কাছে অভিশাপ মনে হচ্ছে।
সূত্র: যমুনা টিভি