১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শনিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

পর্যটকশূন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে বেড়াচ্ছে গোলাপি ডলফিন

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কাছে ভেসে বেড়াচ্ছে ডলফিন। দলে দলে ডলফিন মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আবার কখনও ডিগবাজি খায়।

প্রতিদিন দলে দলে হাজারো পর্যযটকের ঢল যখন নামতো কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। তখন এই ডলফিনের দেখা মিলেনি। কোভিড-১৯; করোনাভাইরাসের প্রভাবে যখন পর্যটকশূন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। তখনই দেখা মিললো এই ডলফিনের।

দুটি দলে প্রায় ২৫টার মত ডলফিন দেখা যায়। এর একটি দলে বড় আকারের একটি গোলাপি ডলফিনের দেখা মিলে।

২৩ মার্চ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্টের কাছে ডলফিনের দুটি দলকে খেলা করতে দেখে স্থানীয়রা।

সৈকতের কাছেই ডলফিনের আনাগোনার বিষয়টি জানতে পেরে নিজের কায়াক নিয়ে সাগরে যান সৈকত লাগোয়া সায়মন বিচ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব রহমান রুহেল।

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “কলাতলী পয়েন্টের কাছে ডলফিন দেখা গেছে বলে খবর পাই। শুনে আমি নিজের কায়াকটি নিয়ে সাগরে যাই। সেগুলোর কাছে যাওয়ার সময় দেখি তারা সুগন্ধা পয়েন্টের দিকে চলে যাচ্ছে। সেখানে আগে থেকে ডলফিনের আরেকটি দল ছিল। অনুসরণ করে সেগুলোর কাছে গিয়ে দেখতে পাই দুটি দলে সেখানে মোট ২০-২৫টা ডলফিন আছে।”

মাহবুব রহমান বলেন, “কিছুক্ষণ তাদের অনুসরণ করার পর দেখি তারা আমার কাছে কাছেই ঘুরছে। ওই দলে একটি গোলাপি ডলফিনকে দেখেছি। সেটি ছিল আকারে সব থেকে বড়। মাথাটা পুরো গোলাপি, শরীরের বেশিরভাগ সাদা ও ধুসর রঙের।

“প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় আমি সেখানে ছিলাম। সেগুলো আমার আশেপাশেই ছিল। এরমধ্যে গোলাপি ডলফিনটিও কাছাকাছি ছিল।”

ওই দিন ডলফিনদের একটি ভিডিও ধারণ করেন মাহবুবুর রহমান।

তার করা তিন মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ভিডিওটির দুই মিনিট ২৫ সেকেন্ড ও দুই মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের সময় একটি বড় আকারের গোলাপি ডলফিনকে দেখতে পাওয়া যায়।

গোলাপি ডলফিনটি ছিল আকারে অন্যগুলোর তুলনায় বড়।

সৈকতে থাকা লাবণী পয়েন্ট সার্ফার ক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদিন ভুট্টো বলেন, ডলফিনের দুটো দল দেখেছি। একটা দলে একটু ছোট আকারের কালো রঙের ডলফিনগুলো ছিল। সেগুলো বাতাসে ডিগবাজি দিচ্ছিল।

“আর অন্য একটা দলে গোলাপি রঙের ডলফিনটা ছিল। ওইটা অনেক বড়। ওই দলে সাদা ধূসর কয়েকটা ডলফিন ছিল। গোলাপিটার সাথে একটা কালো বড় ডলফিন বেশিরভাগ সময় ছিল। দুই দলে ২৫টার মত ডলফিন ছিল।”

গোলাপি ডলফিন হলো ইন্দো প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিন। বাংলাদেশের সাগরে যে ছয় ধরনের ডলফিন আছে তার মধ্যে এটি একটি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, ওই ভিডিওটি দেখেছি। সেখানে যে গোলাপি ডলফিনটি দেখা গেছে সেটি পূর্ণ বয়স্ক। ওই দলে থাকা অন্যগুলোও একই প্রজাতির- গোলাপি ডলফিন।

“সেগুলো আরও বড় হলেই তাদের গায়ের রঙ গোলাপি হবে। এরা সচরাচর উপকূলের কাছাকাছি থাকে। তবে সৈকতের এতটা কাছাকাছি তারা আসে না। এখন নিরিবিলি থাকায় হয়ত কাছে চলে এসেছিল। বাংলাদেশে যে ক’ধরনের ডলফিন আছে তারমধ্যে এটি অন্যগুলোর চেয়ে কম দেখা যায়।”

বাংলাদেশে গোলাপি ডলফিনের দেখা মিলেছে হাতেগোনা কয়েকবার।

২০০২ সালে প্রথম বাংলাদেশে ইন্দো প্যাসিফিক হাম্পব্যাক ডলফিনে (গোলাপি ডলফিন) অস্তিত্বের কথা জানায় ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন সোসাইটি।

এরপর ২০১১ সালে বঙ্গোপসাগরে একবার এবং ২০১৮ সালে সুন্দরবনের পশ্চিম অংশে আরেকবার গোলাপি ডলফিনের দেখা পাওয়া গিয়েছিল। এরপর এবার কক্সবাজার সৈকতের কাছে গোলাপি ডলফিন দেখা গেল।

জুওলজিক্যাল সোসাইটি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার দে বলেন, সুন্দরবনের দক্ষিণ অংশে এবং সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে আগে গোলাপি ডলফিন দেখা গেছে। কক্সবাজার সৈকতের এ অংশে তাদের আগে খুব একটা দেখা যায়নি।

“সাগরের এ অংশে জরিপ হওয়া উচিত। তাতে এদের বিষয়ে জানা যাবে। গভীর সাগরে ট্রলিং করে মাছ ধরার কারণে গোলাপি ডলফিন মারা যায়। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে।”

অধ্যাপক মনিরুল এইচ খান বলেন, কক্সবাজার সৈকতসহ আশেপাশের এলাকায় অতিরিক্ত মানুষের উপস্থিতির কারণে তারা হয়ত আগে আসেনি। কিন্তু এসব এলাকায় এমনই থাকার কথা। সঠিক ব্যবস্থাপনা করা গেলে মানুষের চিত্ত বিনোদন ও প্রাণিদের সহাবস্থান সম্ভব।

মাহবুব রহমানের ধারণ করা ভিডিও লিংক

লবণাক্ত পানির বাসিন্দা গোলাপি ডলফিন আকারে অন্য ডলফিনের চেয়ে খানিকটা বড় হয়। দৈর্ঘ্যে ৮-১০ ফুটের এই ডলফিনের ওজন হয় ৯০ কেজির মতো।

চায়না হোয়াইট ডলফিন নামেও এই ডলফিনটি পরিচিত বিভিন্ন অঞ্চলে।

সূত্র: আই নিউজ

Comments

comments