হলুদ, জিরা, গোলমরিচে বাড়ে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা!
শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রুখে দিতে পারে করোনাকে। শরীর দুর্বল থাকলে ধরবে ওই রোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা যায়। তার জন্য হাতের কাছেই রয়েছে হলুদ, জিরা, গোলমরিচ, তুলসি। এই ভেষজ উপাদানগুলোর সাহায্যে শরীরকে রোগমুক্ত রাখা যায়।
ভারতের বিখ্যাত আয়ুর্বেদাচার্য ডা. অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বললেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হালকা গরম দুধে এক গ্রাম হলুদ মিশিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও জীবাণু সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা বাড়ে। কাঁচা হলুদ বয়স অনুযায়ী আধ গ্রাম থেকে পাঁচ গ্রাম চিবিয়ে খেলে আরো বেশি উপকার হয়। যারা শুধু হলুদ খেতে পারেন না, তারা আখের গুড় দিয়ে খেতে পারেন। তবে ডায়াবেটিস থাকলে গুড় চলবে না। করোনার আবহে প্রতিটি রান্নায় হলুদ দেওয়া উচিত।
হজমশক্তি বাড়লে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যায়। ভারতের আরেক আয়ুর্বেদাচার্য ডা. রবীন আদকের কথায়, খাওয়ার পর আধ চামচ থেকে এক চামচ হালকা ভাজা জিরা খেলে হজমশক্তি বাড়ে, খিদে বাড়ে। গ্যাস-অম্বল কমে। ঘুম ভালো হয়। তরকারিতে গোলমরিচ দিলে বা গোলমরিচ যে কোনো উপায়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে।
আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের মতে, ওজন অনুযায়ী আধ থেকে এক চামচ পর্যন্ত চ্যবনপ্রাশ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যাদের ঠান্ডা লাগার ধাত, হালকা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত সকালে তুলসি, দারচিনি, শুকনো আদা, গোলমরিচ ফুটিয়ে চায়ের মতো করে খেলে খুবই উপকার পাবেন। যে পরিমাণ তুলসি দেওয়া হবে, তার অর্ধেক দারচিনি, অর্ধেক শুকনো আদা এবং শুকনো আদার অর্ধেক গোলমরিচ দিতে হবে। এই মিশ্রণ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতেও কাজে দেবে। ভিটামিন সি–এর জন্য খাওয়ার সময় একটুকরো পাতিলেবু বেশ ভালো কাজ করে।
ইমিউনিটি বাড়াতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে প্রোটিন। যেমন মাছ, মাংস, ডাল, দুধ, সয়াবিন। মুসুর ডালের পানি খুব উপকারী। চাল, ডাল, আলু, সবজি একসঙ্গে খিচুড়ির মতো খেলে পেটও ভরে, প্রয়োজনীয় ক্যালরিও পাওয়া যায়। রান্নায় হলুদ, জিরা, রসুন, লবঙ্গ এবং গোলমরিচ ব্যবহার করা জরুরি। ভিটামিন সি–সমৃদ্ধ খাবার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খুব কার্যকরী।
করোনা সংক্রমণ হলে যতটা না শারীরিক ক্ষতি হয়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মানুষ ভয় পেয়ে যান বলে। মানসিক দৃঢ়তা আনতে শরীরচর্চার একটা বিশেষ ভূমিকা আছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যোগ ন্যাচারোপ্যাথি পর্ষদের সভাপতি ড. তুষার শীল বলেন, রোজ সকালে যে কোনও আসন, প্রাণায়াম, ধ্যান মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। আমাদের শরীরের ফুসফুসে বাতাস ধারণ করার ক্ষমতাও বাড়ে। ন্যাচারাল কিলার সেলের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।
সূত্র: আজকাল।