৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

মাইগ্রেন থেকে বাঁচার উপায়

মাইগ্রেনের ব্যথায় অনেকেই ভোগেন। তবে অভ্যেস বদলে ওষুধ ছাড়াও এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়

মাসের তিন-চারটে দিন বাঁধা ধরা। কোনও কোনও মাসে দু’-তিন বার এমন যন্ত্রণা হয় যে, রোজের কাজ করা দুষ্কর হয়ে ওঠে। এ দিকে মাথাব্যথা খুবই সাধারণ উপসর্গ। কোন মাথাব্যথা মাইগ্রেনের, কোনটা নয়, তা বুঝতে রোগীর অনেকটা সময় লেগে যায়। তবে চিকিৎসকেরা এটির উপসর্গ স্পষ্ট ভাবে নির্ধারণ করে দিচ্ছেন।

মাইগ্রেনের উপসর্গ

এ ক্ষেত্রে মাথা দপদপ করে। মনে হয়, মাথার ভিতর থেকে ব্যথা হচ্ছে। জেনারেল ফিজ়িশিয়ান সুবীর কুমার মণ্ডলের কথায়, ‘‘মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত মাথার এক দিকে হয়, ডান অথবা বাঁ। সময়বিশেষে দিক পরিবর্তিত হতে পারে।’’ তবে মাথার দু’দিকেই যে এ ব্যথা হতে পারে না, তা-ও নয়। বমি-বমি ভাব থাকতে পারে।

চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ সুমিত চৌধুরী জানালেন, ব্যথা শুরু হওয়ার আগে চোখেও অস্বস্তি হয়। অনেকের ক্ষেত্রে, চোখের সামনে আলোর ঝিলিক ওঠে। যেন কিছু একটা চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায়। এ ছাড়া অনেক গ্লকোমা রোগীরও মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে।

এই ব্যথার উৎস কী? মাইগ্রেন জিনঘটিত রোগ। পরিবারের কারও থাকলে, হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। মস্তিষ্কের ট্রাইজেমিনাল নার্ভ উত্তেজিত হলে এই ব্যথা হয়। সেরেটোনিন নামক কেমিক্যালের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে এই ব্যথা হয় বলে মত চিকিৎসকদের।

কাদের বেশি হয়?

পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। তার কারণ হরমোনগত বিভেদ। মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণেই মাইগ্রেনের প্রকোপ বেশি। তাই অনেক মেয়ের বয়ঃসন্ধিক্ষণে প্রথম ঋতুস্রাবের সঙ্গেই মাইগ্রেনের সমস্যাও পাশাপাশি শুরু হয়। আবার অনেকের মেনোপজ়ের পরে এই সমস্যা দূর হয়ে যায়। যে সব মহিলারা ওরাল কনট্রাসেপটিভ পিল খান, তাঁদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি দেখা যায়। আবার মহিলাদের জরায়ুতে অস্ত্রোপচার হলে, অনেক সময় হরমোন থেরাপির কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রেও তাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা নতুন করে দেখা দেয়।

চিকিৎসা

সাধারণত মাইগ্রেনের ব্যথায় পেনকিলার দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘ দিন ধরে তা খেলে অন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। রোগী নিজে থেকে যদি কোনও পেনকিলার খেতে শুরু করেন, তার পরিণাম আরও ভয়াবহ হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ সর্বাগ্রে প্রয়োজন। প্রেশার, টেনশনের রোগীদের সংশ্লিষ্ট ওষুধের ডোজ় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়।

• খাদ্যাভ্যাস বদলে মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যাঁদের মাইগ্রেন রয়েছে, অতিরিক্ত কফি তাঁদের জন্য ক্ষতিকর। তবে মাইগ্রেনের অনেক ওষুধে কফির উপাদান থাকে। তাই পরিমিত কফি মাইগ্রেনের ব্যথায় উপশম দেয়। চকলেট, রেড ওয়াইন‌, ড্রাই ফ্রুটস, চিজ় জাতীয় খাবারও তাঁরা এড়িয়ে চললে ভাল।

• উপকারী তেল: ইউক্যালিপটাস অয়েল, মিন্ট অয়েল দিয়ে মাথায় মাসাজ করলে আরাম পাওয়া যায়। পাশাপাশি আরও যে উপসর্গ থাকে, তা-ও কম হয়। ল্যাভেন্ডার অয়েল যদি রোগী সেবন করেন, তা পনেরো মিনিটের মধ্যে কাজ করে।

• রোগীর বিচক্ষণতা: এমন অনেক সুগন্ধী আছে, যা রোগীর যন্ত্রণা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো সব সময়ে ব্যক্তিভিত্তিক। তাই রোগীকে বুঝতে হবে, কোন খাবারে সমস্যা হচ্ছে, কোন গন্ধে ব্যথা বাড়ছে। তবেই চিকিৎসক সাহায্য করতে পারবেন।

• পথ্য: কাজুবাদাম, ওয়ালনাট ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ হয় বলে খেতে পারেন। আদা কুচি চিবোলে উপকার পাওয়া যায়। সানফ্লাওয়ার অয়েলে রান্না করলেও রোগীর জন্য ভাল।

• চশমার ব্যবহার: মাইগ্রেনের রোগীরা অনেক সময়ে আলো সহ্য করতে পারেন না। চোখ যেন ঠান্ডা থাকে, সেই জন্য টিন্টেড গ্লাসের চশমা তাঁদের দেওয়া হয়। এতে রোগীর চোখ অনেক আরাম পায়।

মাইগ্রেনের ব্যথা পুরোপুরি নিরাময় হয় না। তবে লাইফস্টাইল বদলে এই ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

ব্যথার উপশমে

• মাইগ্রেনের ব্যথায় বমি-বমি ভাব থাকে। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত বমি হয় না। বমির তোড় বেশি হলে তা অন্য কোনও রোগের লক্ষণ হতে পারে

• মাইগ্রেনের ব্যথা পিরিয়োডিক। যখন হবে টানা তিন-চার দিন থাকবে। তার পরে পুরোপুরি সেরে গিয়ে আবার ফিরে আসবে। মাসে একাধিক বার হলে বা তীব্রতা বাড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের সাহায্য নিন

• এই ব্যথা নিয়েই যেহেতু চলতে হবে, তাই যতটা সম্ভব রোগীর নিজের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। খাদ্যাভাস বদলে, জীবনধারণের পদ্ধতিতে বদল এনে ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণে রাখাই শ্রেয় বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা

Comments

comments