৬ কারণে হতে পারে স্তনে ক্যান্সার
স্তন ক্যান্সারে নারীদের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। সাধারণত ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হচ্ছে এতোদিন এই ক্যান্সারের ব্যাপারে নারীদের সচেতন করার জোরটা ছিল বেশি, কিন্তু এখন পুরুষদেরকেও সচেতন করার জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কারণ, পুরুষদের মধ্যেও স্তন ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। যদিও পুরুষদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার খুবই কম। এক হিসেবে দেখা যায় যুক্তরাজ্যে প্রতিবছর ৪১ হাজার মহিলা স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, সেই তুলনায় মাত্র ৩০০ জন পুরুষ এই রোগে আক্রান্ত হন। কিন্তু জানেন কি আমাদের দৈনন্দিন জীবন-যাপনের পদ্ধতিও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। দেখে নিন প্রয়োজনীয় সেই তথ্যগুলো:
১.শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা করলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এতে যেমন নিরোগ থাকা যায় তেমনি মনও থাকে চাঙ্গা। আর নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ইস্ট্রজেন এবং ইনসুলিন নির্গত হতে বাধা দেয়। ফলে ক্যান্সারের প্রবণতা কমে যায়। সুতরাং, ব্রেস্ট ক্যান্সারের হাত থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত শরীর চর্চা করুন বা হাঁটুন।
২. মদ্যপান ও ধূমপান: মদ্যপান ও ধূমপান থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। মদ্যপান স্তন ক্যান্সার-সহ অন্যান্য অর্গানের ক্যান্সার ঝুকি বাড়ায়।
৩. হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (এইচআরটি) এবং গর্ভনিরোধক ঔষধ: হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি ও নিয়মিত গর্ভনিরোধক ঔষধ ব্যবহারের ফলে স্তন ক্যান্সারের প্রবনতা বাড়িয়ে দেয়।
৪. কর্মক্ষেত্রে নাইট সিফ্ট: অনিয়মিত লাইফস্টাইলের কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা থাকে। আমাদের সমাজে অনেকেই আছেন যাঁরা অফিসে রাতে কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৫. ওজন বৃদ্ধি: বয়ঃসন্ধির আগে থেকেই সুস্থ খাওয়া শুরু করুন। নিজের ওজন উপর নিয়ন্ত্রণ রাখুন। যাঁরা অতিরিক্ত বার্গার বা ফ্যাট জাতীয় খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তাঁদের মেনোপজ পরে স্তন ক্যান্সার হতে পারে।
৬. অন্যান্য: কিছু অন্যান্য কারণ আছে যেগুলি মহিলারা উপেক্ষা করতে থাকে। তা হল অতিরিক্ত ডিওড্রেন্ট, পারফিউম ব্যবহার। গর্ভপাত, স্তন প্রতিস্থাপন যা স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।তাহলে এবার থেকে নিজের যত্ন নিন আর ব্রেস্ট ক্যানসারের মতো রোগ থেকে দূরে সুস্থ থাকুন।”
লক্ষণ বা উপসর্গ:
*স্তনের কোনো অংশ চাকা চাকা হয়ে যাওয়া অথবা কোনো লাম্প দেখা যাওয়া।
*স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন।
*স্তনবৃন্তের আকারে পরিবর্তন।
*স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বা তরল পদার্থ বের হওয়া।
*স্তনবৃন্তের আশেপাশে রাশ বা ফুসকুড়ি দেখা যাওয়া।
*বগলে ফুলে যাওয়া বা চাকা দেখা দেওয়া।
*স্তনের ভেতরে গোটা ওঠা বা শক্ত হয়ে যাওয়া।
ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাফি: ৫০ থেকে ৭০ বছর বয়সী নারীদের প্রতি তিনবছর পর পর ব্রেস্ট স্ক্রিনিং বা ম্যামোগ্রাম করানো উচিত। ম্যামোগ্রাম হচ্ছে এক্স-রে’র মাধ্যমে নারীদের স্তনের অবস্থা পরীক্ষা করা। সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার এতো ছোট থাকে যে বাইরে থেকে সেটা বোঝা সম্ভব হয় না। কিন্তু ম্যামোগ্রামের মাধ্যমে খুব ছোট থাকা অবস্থাতেই বা প্রাথমিক পর্যায়েই ক্যান্সার নির্ণয় করা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পরলে ক্যান্সার থেকে সুস্থ্য হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রচুর থাকে। আর এই পরীক্ষার জন্য মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগে।