বিয়ের পর মেয়েদের বেশি বয়স্ক দেখায় কেন?
কথাটা কেউ স্বীকার করতে না চাইলে ব্যাপারটি কিন্তু শতভাগ সত্য। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে অনেক বাঙালি নারীকেই তাদের বিয়ের পর বয়সের তুলনায় অধিক বয়স্ক দেখায়। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ৪০-এও একজন নারী থাকতে পারে আকর্ষণীয়া, সেখানে ৪০ মানে আমাদের দেশে মধ্যবয়স্কা।
শুধু তাই নয়, অনেক কমবয়সী বিবাহিতা মেয়েদেরও বয়সের তুলনায় অনেক বেশী বয়স্ক দেখায়। কেন? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদেরই কিছু ভুলের মাঝে। চলুন, জেনে নিই সেই ভুলগুলো।
১) অল্প বয়সে অধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়া
আমাদের দেশে খুব অল্প বয়সে বিয়ে এবং বিয়ের পর পড়ি একাধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি এখনো প্রচলিত। প্রথমত, খুব অল্প বয়সে বিয়েটাই নারীর জীবনে হওয়া উচিত নয়। আর বিয়ের পর দ্রুত সন্তানের মা হয়ে যাওয়া বা ঘনঘন সন্তান প্রসব নারীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য দুটোই নষ্ট করে ফেলে। সন্তান ধারণ অনেক ধকলের একটি কাজ। অধিক সন্তান হলে তার বিরূপ প্রভাব নারীর দেখে প্রকট হয়ে দেখা দেয়।
এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD
২) সন্তান হবার পর নিজের যত্ন না নেয়া
আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে এটি আরও বড় একটি সমস্যা। সন্তান হবার পর খুব কম সংখ্যক নারীই নিজের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য মেইনটেইন করেন। সন্তান হবার সময় যে বাড়তি ওজন হয়, সেটা ঝরিয়ে ফেলা খুবই জরুরী। নাহলে বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে। অন্যদিকে সন্তান হবার সময় ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয় অনেকেরই। সন্তানের যত্ন তো করতেই হবে। কিন্তু নিজের সৌন্দর্যের জন্যও সময় বের করতে হবে বৈকি। সুষম আহার, ব্যায়াম ও নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চাই এর সমাধান।
৩) ভুল নাকফুল নির্বাচন
আমাদের সমাজে বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ নাকফুল পরিধান করে থাকেন। কিন্তু ভুল নাকফুল নির্বাচনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নাকফুল বাড়িয়ে তোলে আপনার বয়স। যেমন, যাদের নাক বোঁচা বা একটু মোটা, তারা কখনোই বড় নাকফুল বা নোলক পরিধান করবেন না। নাকফুল যত ছোট হয়, ততই সুন্দর। যাদের নাক খব বেশী চিকন, তাঁরাও বড় নাকফুল পরিহার করুন। যত সিম্পল ডিজাইনের নাকফুল, বয়স দেখাবে ততই কম। যত বড় পরবেন, আপনাকে ততটাই বয়স্ক দেখাবে। নাকে একটু ফুটো আসলেই বাড়তি কয়েক বছর যোগ করে দেয় চেহারায়।
৪) ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকা
আমাদের দেশের নারীদের মাঝে ব্যায়ামের অভ্যাস খুব কম। কিন্তু আসলে অল্প বয়স হতেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। ব্যায়াম কেবল দেহের ওজনই ঠিক রাখে না, পাশাপাশি ত্বককে রাখে টানটান ও যৌবনদীপ্ত। শারীরিক ক্ষমতাও রাখে উচ্ছল।আমদের দেশের বিবাহিত নারীদের মাঝে সাধারনত বিয়ে হওয়ার পর মনে হয় আমার বিয়ে হয়ে গেছে এখন আমার সৌন্দ্রয কে দেখবে এবং বিয়ের পর নারীরা নিজের শরিরের যত্নশিল থাকেন না বরং এক দুটা বাচ্চা হলেই উদাশিন হয়ে যান ।নিজেকে তখন অভিভাবক অথবা সংসারের মুরব্বী হয়ে মুনশিয়ানা করতে গর্বিত বোধ করেন।
৫) অতিরিক্ত গহনা পরা
আমাদের দেশের বিবাহিত বাঙালি নারীদের কম বেশি প্রত্যেক বাঙালি নারীর অন্যরকম একটা গহনা প্রীতি আছে। বিয়ের পর এই প্রবণতা আরও অধিকতর হয়। সাধারনত অতিরিক্ত গহনা পরে বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ নিজের স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির অবস্থান জাহির করতে চায়।নিজের বয়স বিবেচনা না করে অতিরিক্ত সোনা রুপার গহনা পরা অর্জন করার প্রবনতা এদেশের নারীদের মধ্যে দেখা যায়। ভারী পরার আগে মনে রাখবেন, যতই সোনা রুপার জবড়জং গহনা পরবেন, আপনাকে ততই বয়স্ক দেখাবে।
৬) ভুল পোশাক নির্বাচন
বিয়ে এবং কয়েকটি সন্তান হয়ে যাওয়ার পর অনেক নারীই আর নিজের শরীর ও পোশাকের প্রতি মোটেই যত্নশীল হোননা এবং সেদিকে খেয়াল রাখেন না। এটি আমদের দেশের বিবাহিত নারীদের অবশ্যই একটি ভুল চিন্তাধারা। আপনার বয়স যতই হোক না কেন, ওজন যেমনই হোক না কেন, সুন্দরভাবে পোশাক পরলে সবই দৃষ্টিনন্দন মনে হবে। নিজের দেহের সাথে মানানসই কাট ছাঁট ও রঙের পোশাক নির্বাচন করুন। সুন্দর রঙের পোশাক পরিধান করুন। দেখেবন নিজের কাছেও নিজেকে দেখতে ভালো লাগছে।
৭) বাজে হেয়ার স্টাইল
চুলের কাট একজন মানুষের বয়সে বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনার সন্তান হয়েছে বলেই নিজের চুলগুলো কোনরকম বেণী বা খোঁপা করে ফেলে রাখবেন, এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন। ভালো পার্লারে গিয়ে সুন্দর একটি মানানসই হেয়ারকাট মেইনটেইন করবেন। চলে খুব বেশী রঙ না করিয়ে ন্যাচারাল রঙের কাছাকাছি শেড ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত রঙ ব্যবহারেও বয়স্ক দেখায়।
৮) প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের অভাব
নিজের খাওয়ার দাওয়ার দিকে নজর খুব কম বাঙালি নারীই দিয়ে থাকেন। সঠিক পুষ্টির অভাবে কেবল আপনার সৌন্দর্যই হারিয়ে যায় না, প্রভাব পড়ে আপনার স্বাস্থ্যেও। তাই নিজের জন্য একটি ব্যালান্সড খাদ্য তালিকা মেইনটেইন করা সব মেয়ের জন্য দরকার।