ঘন ঘন প্রস্রাব পেলে ছয় খাবার ছাড়ুন
ঘন ঘন প্রস্রাব বা বারবার বাথরুমে যাওয়া—এ উপসর্গ দেখা দিলে সবাই শঙ্কিত হন। তার মানে কি ডায়াবেটিস হয়েছে? বয়স্ক ব্যক্তিদের বারবার বাথরুম যাওয়ার প্রবণতা বেশি। গর্ভবতী নারীরাও এ সমস্যায় ভোগেন। জেনে রাখুন, ডায়াবেটিসের একটি অন্যতম লক্ষণ হলেও ঘন ঘন বা অধিক প্রস্রাব অন্যান্য সমস্যায়ও হতে পারে।
একজন পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি দিনে চার থেকে আটবার মূত্রত্যাগ করে থাকেন। পরিমাণ যা-ই হোক না কেন, দিনে আটবারের বেশি প্রস্রাব করলে তাকে ঘন ঘন প্রস্রাব হিসেবে গণ্য করা হয়।
বিভিন্ন বয়সে প্রস্রাবের স্বাভাবিক পরিমাণ বিভিন্ন। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির প্রস্রাবের পরিমাণ ২৪ ঘণ্টায় তিন লিটার বা এর অধিক হলে তা অস্বাভাবিক এবং একে পলিইউরিয়া বলা হয়।
ঘন ঘন প্রস্রাব বা অধিক পরিমাণ প্রস্রাব—উপসর্গ দুটো আলাদা। অনেক ক্ষেত্রেই এ দুটো একসঙ্গে দেখা যায়। কেননা প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে গেলে প্রস্রাব ঘন ঘন হয়ে থাকে।
অনেক সময় ঘন ঘন প্রস্রাবের মূল কারণ হলো শুধু অধিক বা অস্বাভাবিক পরিমাণে পানি বা পানীয় গ্রহণ। একে সাইকোজেনিক পলিডিপসিয়া বলা হয়।
কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক কারণেই বেশি প্রস্রাব হতে পারে। যেমন: অতিমাত্রায় পানীয় বা অ্যালকোহল সেবন, ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় গ্রহণ, শীতকালে যখন ঘামের পরিমাণ কমে যায়, গর্ভাবস্থায়, প্রস্রাব বৃদ্ধিকারক ওষুধ সেবন, ১০ হাজার ফুট ওপরে ভ্রমণের সময়, অধিকমাত্রায় ভিটামিন সি ও বি২ গ্রহণ ইত্যাদি।
চিকিৎকদের মতে, ডায়াবেটিস ছাড়াও ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার (ওএবি) হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। যদিও ওএবি সমস্যার কোনো বিশেষ ডায়েটের কথা চিকিৎকরা বলছেন না। তাদের পরামর্শ, কিছু খাবার ব্লাডারে অস্বস্তি বাড়ায় যার ফলে এ সমস্যা হয় সেই খাবারগুলো ডায়েট থেকে বাদ দিলে বা কম খেলে ব্লাডারকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। খাবারগুলোর তালিকায় রয়েছে-
১. কফি: সকালে উঠে কফি থান? যদি আপনার ব্লাডার ইনফেকশনের সমস্যা থাকে তাহলে এই অভ্যাস ছাড়ুন। কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন ব্লাডারে অস্বস্তি বাড়ায়।
২. অ্যালকোহল: মদ্যপান করলে যে বেশি প্রস্রাব পায় তা যারা নিয়মিত মদ্যপান করেন তারা করেন। অ্যালকোহল যে শুধু পেটে অস্বস্তি হয় তা নয়, ব্লাডারেও অস্বস্তি তৈরি করে। তাই সংক্রমণের প্রবণতা থাকলে অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন।
৩. সোডা: ব্লাডার ফুলে যাওয়া, মূত্রনালির সংক্রমণ বা ওএবি থাকলে সোডা খেলে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই কার্বনেটেড বা সাইট্রাস সোডা থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকুন। তার বদলে যতটা সম্ভব জল খান।
৪. অ্যাসিডিক ফল: শরীরের পক্ষে ফল খাওয়া ভাল। কিন্তু যদি আপনার ব্লাডারের সমস্যা থাকে তাহলে অ্যাসিডিক ফল মূত্রনালির সংক্রমণ বাড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে কমলালেবু, আঙুর, লেবু, টোম্যাটো, পিচ, আপেল, আনারস থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
৫. স্পাইসি খাবার: যদি আপনার পিজায় এক্সট্রা চিলি ফ্লেকস বা চিকেন কারিতে অতিরিক্ত ঝাল খেতে ভাল লাগে তবে আপনার মূত্রনালিতে সংক্রমণ থাকলে একটু সাবধান থাকতে হবে। কারণ ঝাল, মশলাদার খাবার ব্লাডারে অস্বস্তি তৈরি করে।
৬. কৃত্রিম সুইটেনার: ক্যালরির পরিমাণ কমানোর জন্য অনেকেই খাবারে চিনির বদলে কৃত্রিম সুইটেনার যোগ করেন। তবে চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, যদি মূত্রনালিতে সংক্রমণ থাকে তাহলে কৃত্রিম সুইটেনার থেকে দূরে থাকুন। এতে সংক্রমণ বাড়তে পারে।