যে কারণে আপনার রক্ত হয়ে পড়ে দূষিত
রক্তের প্রবাহকে ইংরেজিতে বলা হয় – The river of life। এই প্রবাহ যত সুষ্ঠুভাবে হবে ব্যক্তির দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যও তত ভালো থাকবে। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলে, ব্যক্তির রক্তের স্বাস্থ্য যেমন, ব্যক্তির স্বাস্থ্যও হবে তেমনি। রক্তে দূষণ এসে গেলে ব্যক্তির সুস্থতায় বিপর্যয় আসে। এবং এ বিপর্যয় সামান্য অসুস্থতা থেকে শুরু করে হৃদরোগ, এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। রক্তে যখন বিষধর্মী বা দূষিত (toxic) পদার্থ থাকে, তখন রক্তের সেই অবস্থাকে বলে Toxemia। আর toxemia-র সঙ্গে যখন আবার অতিরিক্ত কোলেস্টেরল এবং লিপিড থাকে, তখন তাকে বলা হয় Lipo-toxemia। জেনে নিন রক্তদূষণের প্রধান কারণগুলো –
(১) স্বাস্থ্যবিরোধী আহার
এ ধরনের খাদ্য গ্রহণের ফলে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ফ্যাট এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশে গিয়ে ধীরে ধীরে ধমনীর গায়ে জমা হয়। আবার রক্তস্রোতে উপস্থিত অতিরিক্ত ফ্যাটে রক্ত কণিকা ও প্লেটলেটগুলো জমাট বেঁধে যায়। এর ফলে রক্তের ঘনত্ব বা blood viscosity বেড়ে যায়, কমে যায় অক্সিজেন পরিবহনের ক্ষমতা, সর্বোপরি রক্তপ্রবাহ মন্থর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যেসব ধমনী দূষিত পদার্থ জমে সংকুচিত হয়ে গেছে, সেখানে রক্তের স্বাভাবিক গতি বাধা পায় মারাত্মকভাবে।
(২) মদ্যপান
মদ্যপানের ফলেও রক্তকণিকাগুলো জমাট বেঁধে যায়, রক্তে ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে যায়, নষ্ট হয় বহু প্রয়োজনীয় nutrients। সেই সাথে কয়েকটি এনজাইম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ার ফলে ব্যাহত হয় অক্সিজেন সরবরাহ।
(৩) ধূমপান
ধূমপানের ফলে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস রক্তে মিশে রক্তের অক্সিজেন অপসারিত করে। তাছাড়া ধূমপানে নষ্ট হয় ভিটামিন সি, রক্ত চলাচলে যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এছাড়া আছে নিকোটিন যা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, ধমনীগুলোকে সংকুচিত করে।
(৪) থাইরয়েডের ত্রুটি
থাইরয়েড গ্ল্যাণ্ডের কর্মক্ষমতা নিম্নমানের হলে স্নেহ পদার্থের বিপাক ঠিকমতো হয় না। ফলে রক্তে কোলেস্টেরল ও ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে গিয়ে রক্ত দূষিত হয়ে পড়ে। থাইরয়েডের কর্মক্ষমতা নিম্নমানের হয় খাদ্যগত আয়োডিন অথবা ভিটামিন বি১-এর অভাবে। অতিরিক্ত শর্করা গ্রহণ করলেও ভিটামিন বি১-এর অভাব ঘটতে পারে।