নারীদের জন্য তৈরি ‘কনডমে’ আস্থা নেই নারীদের!
একটি স্কুটির বিজ্ঞাপনে বলা হয়, সব মজা শুধু ছেলেদের জন্য কেন? সত্যিই তো, সমাজ যখন এত এগিয়ে গিয়েছে, তখন নারীরা দু’কদম পিছনে থাকবেন কেন? যে কোনো চাহিদা পুরুষদের মতো মহিলাদেরও তো থাকে। আমাদের সমাজে এখনো অনেকেই যৌনতা নিয়ে কথা বলতে গেলে বেশ অস্বস্তিতে পড়েন। অথচ বাকি আর পাঁচটা জৈবিক ক্রিয়ার মতো যৌনতাও তো একটা শারীরিক প্রয়োজন, তাই না?
আর এই যৌনজীবনে পুরুষ চাইলেই সবটুকু, আর না চাইলেই নয়, একবিংশ শতকে এসে সে কথা আর মানতে রাজি নন স্বাধীনচেতা নারীরা। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই মহিলাদের কনডমও তৈরি হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। এখনো যাঁরা এ বিষয়ে জানেন না বা শোনেননি, তাঁরা জেনে নিন মাত্র ১০০ টাকায় বাজারে এই কনডম পাওয়া যায়।
এক দিক বন্ধ, নরম, আলগা, রাবার জাতীয় উপাদান দিয়ে তৈরি হয় এই কনডম। এর দু’টি প্রান্তে দু’টি নমনীয় পলিইউরোথেন রিং লাগানো থাকে। একটি জরায়ুর দিকের বন্ধ প্রান্তে ও অন্যটি যোনির বাইরে খোলা দিকে। যোনি কপাট ও পুরুষাঙ্গের মুখের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এটি সুরক্ষাকে আরো বেশি কার্যকর করে। এতে থাকা রাসায়নিক যোনিতে শুক্রাণুর প্রবেশে বাধা দেয়। এটি যৌনসঙ্গমের আগে যোনিতে প্রবেশ করানো হয়। মহিলারা কোনো রকম যৌনসংসর্গের আগেই এই কনডম পরে নিতে পারেন। যৌনসঙ্গমের পর খুব সাবধানে এটি খোলা দরকার, যাতে উঠে দাঁড়ানোর আগে যোনিতে বীর্য পড়ে না যায়। পুরুষদের কনডমের মতোই মহিলাদের কনডমও একবারই মাত্র ব্যবহার করা যায়।
মহিলা–কনডম শুধু যোনির দেওয়ালই নয়, জরায়ুকেও ঢেকে রাখে। পুরুষদের কনডমের মতো এটি যে শুধু জন্ম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর তা–ই নয়, এটি এইচআইভি বা যৌন সংক্রমণও প্রতিরোধ করে। এটির আরো সুবিধা হল যে, যৌনসঙ্গমের আগেই এটি পরে নেওয়া যায়, কাজেই সঙ্গম ব্যাহত হয় না। এটি একই মাপে পাওয়া যায়। তাই এটি পরার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তবে যেহেতু এটিতে ক্লিটোরিস ঢাকা পড়ে, তাই অনেক মহিলারই যৌন আনন্দ কমে যায় ও অসুবিধা বোধ হয়। তবে মহিলাদের জন্য তৈরি বিশেষ এই কনডম আমাদের দেশে এখনো ততটা সহজলভ্য নয়। এটি সাধারণত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি বেশি বিলি করে।
মহিলা কনডমের গ্রহণযোগ্যতার হার মহিলাদের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ। যদি প্রতিবার একটি কনডম ব্যবহার করেন তবে অভ্যন্তরীণ কনডমের কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশ হারে থাকে। তবে বাস্তব জীবনে এবং কার্যত এগুলি প্রায় ৭৯ শতাংশ কার্যকর, কারণ লোকেরা এটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন না।
গবেষণা বলছে, জন্মনিয়ন্ত্রণের প্রধান পদ্ধতি হিসাবে অভ্যন্তরীণ কন্ডোম ব্যবহার করা ১০০ জনের মধ্যে ২১ জন প্রতি বছর গর্ভবতী হয়ে থাকেন। অন্যদিকে পুরুষ কনডমের নিখুঁত ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুই শতাংশ এবং সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ব্যর্থতা হার রয়েছে।