রাগ নিয়ন্ত্রণের সহজ ৮টি উপায়
রাগ হওয়া স্বাভাবিক। আর রাগ হলে তা প্রকাশ করাটাও স্বাভাবিক। হাসি, কান্না, ঈর্ষার মতোই রাগ মানুষের প্রাকৃতিক আবেগ। যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি, যেখানে নিজের প্রতি অন্যায় হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখানে রাগ একেবারেই সহজাত একটি প্রতিক্রিয়া। তবে সমস্যাটা তখনই হয় যখন এই রাগ চলে যায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং তার প্রভাব পড়ে কাজকর্মে, ব্যক্তিগত সম্পর্কের ওপর। জেনে নিন রাগ হলে কীভাবে তা সামলাবেন তার কিছু কৌশল।
১) কারণ খুঁজে বের করুন
`অ্যাঙ্গার ট্রিগারস`গুলো খুঁজে বের করুন। অর্থাত্ কোথায় গেলে, কী হলে, কার সাথে দেখা হলে আপনার মাথা গরম হয়ে যায়। এতে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে পারবেন। যদি দেখেন কোনো পরিস্থিতিতে আপনি নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তাহলে কিছু করার আগেই সেখান থেকে চলে যান। মাথা ঠাণ্ডা হলে আলোচনার মাধ্যমে অনেক সমস্যারই সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়।
২) অনুভূতি লিখুন
রাগ হলে ঠিক কী রকম মনে হয়, তা লিখে রাখুন। এ কাজের জন্য একটা ডায়েরি রাখতে পারেন। রোজ যে ঘটনাগুলোর কারণে আপনার মাথা গরম হয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে রাখুন। আপনি যেভাবে প্রতিক্রিয়া করেছেন, সেগুলোও লিখে রাখুন। মাথা ঠাণ্ডা থাকলে একই পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রতিক্রিয়া করতেন সেটা কল্পনা করার চেষ্টা করুন। এবার আপনার এই দুই ধরনের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে তুলনা করলেই আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
৩) সময় নিন
রাগ হলে অনেক সময় যে কথাটা প্রথমে মুখে আসে আমরা তাই বলে ফেলি, কথা না বুঝেই শেষ কথা বলে ফেলি। সুতরাং যখন কোনো হচ্ছে বা বিতর্কিত আলোচনা করছেন, নিজেকে সংযত করুন। কিছু বলার আগে একবার ভেবে নিন, যেটা বলছেন সেটা কি যুক্তিসঙ্গত। ভালো করে শুনুন অপর পক্ষ কী বলতে চাইছেন। উত্তর দেয়ার জন্য সময় নিন।
৪) হিউমার
রাগ কমাতে `হিউমার` কিন্তু খুব ভালো কাজ করে। রাগ হলেই সাথে সাথে যদি কোনো মজার এসএমএস বা ইমেইল দেখে নেন, তাহলে কিন্তু রাগ কমতে বাধ্য। হাতে সময় পেলে হাসির বই পড়ুন বা সিনেমা দেখুন। দেখতে পারেন কার্টুনও।
৫) ব্যায়াম
রাগ কমাতে ব্যায়ামের জুড়ি নেই। রাগ হলে শরীরে যে হরমোনগুলো নিঃসৃত হয়, ব্যায়াম করলে সেগুলো কমে যায়। যে অতিরিক্ত এনার্জি আপনার মধ্যে তৈরি হয়েছিল তা রিলিজ হয়ে যায়। পেশির টেনশন কমে যায়। শরীর-মন শান্ত হয়ে আসে। রাগের যে বিস্ফোরণটা হতে পারত সেটা আটকানো যায়। মেডিটেশন করলেও মনের ওপর ভালো প্রভাব পড়ে।
৬) ইতিবাচক কথা ভাবুন
যখন খুব রাগ হবে তখন ইতিবাচক কথা ভাবুন। সেটা হতে পারে ছোটবেলার কথা বা আপনার প্রিয় কোনো মুহূর্তের কথা। যে সময়গুলো আপনি খুব উপভোগ করেছেন সেগুলোর কথা ভাবুন।
৭) আচরণে পরিবর্তন
নিজের আচরণ পরিবর্তনের চেষ্টা করতে পারেন। যদি দেখেন সবার সাথেই আপনার ঝামেলা হচ্ছে, কারো কোনো কথাই আপনি মেনে নিতে পারছেন না, তাহলে বুঝতে হবে আপনারই কোথাও ভুল হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো দরকার।
৮) পাঞ্চিং ব্যাগ
রাগ কমানোর জন্য পাঞ্চিং ব্যাগে ঘুঁষোঘুঁষি করা বেশ ভালো ফল দেয়। এই পদ্ধতি মনের মাঝে জমে থাকা ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলতে সাহায্য করে। এছাড়া উল্টো দিক থেকে গোনা বা ব্যাক কাউন্টিংও তাত্ক্ষণিক রাগ কমাতে সাহায্য করে।