স্ট্রোক সম্পর্কে যা জানা দরকার
প্রাণঘাতী রোগ স্ট্রোক বা পক্ষাঘাত রোগ অনেকাংশে প্রতিরোধযোগ্য। বিশ্বে যতগুলো স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে, তার ৯০ শতাংশই প্রতিরোধ করা যায়। এ জন্য দরকার জীবন অভ্যাসে পরিবর্তন।
মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে বা কখনো রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে মস্তিষ্কের কোনো অংশের কোষে যে স্থায়ী ক্ষতি হয়, সেটাই স্ট্রোক। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য, ধূমপান ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। সময়মতো স্ট্রোকের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে ও দ্রুত চিকিৎসা নিলে ক্ষতিকর দিকগুলো অনেকটাই এড়ানো যায়।
চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেটের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৫৩ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। ২১ শতাংশ মানুষ ধূমপান করে। প্রায় ১০ শতাংশ মানুষের রক্তে প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা, অর্থাৎ তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২২ শতাংশ মানুষ বাতাসে ভাসমান বস্তুকণা ও ৩০ শতাংশ মানুষ জ্বালানি-সংশ্লিষ্ট দূষণের শিকার।
কেউ স্ট্রোক করলে মুখের একদিক বেঁকে যায়। কোনো হাত ঝুলে পড়ে বা হাতের শক্তি কমে যায়। কথা জড়িয়ে যায়। এই উপসর্গগুলো টের পেলে দেরি না করে সময়মতো চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে।
বয়স্কদের পাশাপাশি অল্প বয়সী ব্যক্তিদেরও স্ট্রোক হয়। স্ট্রোকের গড় বয়স গত কয়েক দশকে ৭১ বছর থেকে কমে ৬৯ বছরে এসেছে। তরুণ-যুবাদের মধ্যে (২০ থেকে ৫৪ বছর) এই হার ১৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ শতাংশ হয়েছে। ৪৫ বছর বয়সের আগে যদি কারও স্ট্রোক হয়, তবে চিকিৎসকেরা তাকে বলেন যুবক বয়সীদের স্ট্রোক। বিশ্বে প্রতি এক লাখ স্ট্রোক-আক্রান্ত ব্যক্তির ১৫ শতাংশের বয়সই এই ৪৫-এর নিচে।
সাবধানতা: ওজন বেড়ে যাচ্ছে কি না খেয়াল করুন এবং ওজন কমাতে সচেষ্ট হোন। নিয়মিত রক্তচাপ মাপুন, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। রক্তে শর্করা ও চর্বি নিয়মিত পরীক্ষা করুন। তেল-চর্বিযুক্ত খাবার যথাসম্ভব কম খান এবং শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার রাখুন দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায়। অ্যালকোহল, ধূমপান ও যেকোনো ধরনের নেশাদ্রব্য পরিহার করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
সূত্র: অমৃতবাজার