১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

ধুমপান করে সন্তানের কাছে গেলেই মহাবিপদ!

সর্দিকাশি থেকে শুরু করে দাঁতের ক্ষয়, এমনকা হজমের সমস্যা বা ডায়রিয়া, বাচ্চাদের নানা অসুখবিসুখের অন্যতম কারণ সিগারেটসহ তামাকের ধোঁয়া। এমনকি, এক বছরের কমবয়সী শিশুদের আচমকা মৃত্যুর (Sudden infant death syndrome বা SIDS) অন্যতম কারণ হতে পারে বাবা অথবা বাড়ির বড়দের ধুমপান।

সিগারেট না টানলেও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি থাকে। এ যেনো অন্যের দোষে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দেওয়া। সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়া প্রবেশ করে শিশুদের শরীরে নানা অসুখবিসুখের সঙ্গে ক্যানসার ডেকে আনতে পারে। সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বড় হরফে ক্যানসারের কারণ লেখা থাকলেও ধূমপায়ীদের কেউই খুব একটা গা করেন না। তাঁদের নিজেদের ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ করে তুলছেন বাচ্চাদের।

ধোঁয়ায় আছে ৭০০০ রাসায়ানিক!

দু’চারটে নয়, সাত হাজার ক্ষতিকর রাসায়ানিক পাওয়া গিয়েছে সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়ায়। এদের মধ্যে ১০০টি অত্যন্ত ক্ষতিকর। ৭০টি কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ ক্যানসার ডেকে আনতে সিদ্ধহস্ত। হবু মায়েদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা থাকলে গর্ভস্থ ভ্রূণ ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক সময় গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়ে নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্তান বেরিয়ে আসে। হবু মায়ের সামনে যদি বাড়ির অন্য সদস্যেরা সিগারেট টানেন, তা হলেও বাচ্চার সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকী, অন্য ঘরে সিগারেটের ধোঁয়া টানলেও সন্তানসম্ভবার শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি থাকে।

সাইড স্ট্রিম বেশি ক্ষতিকর

সিগারেটের ধোঁয়া দু’ভাবে অধূমপায়ীর শরীরে প্রবেশ করে। সিগারেট টেনে ধোঁয়া ছাড়া হলে তা যখন অন্য জন বাতাসের সঙ্গে টেনে নেন, তাঁকে বলে মেন স্ট্রিম। আর সিগারেট জ্বালিয়ে রাখা আছে, তার থেকে ধোঁয়া সরাসরি বাতাসের সঙ্গে টেনে নিলে তাকে বলে সাইড স্ট্রিম। এই ধোঁয়ায় আরও বেশি কার্সিনোজেনিক, অর্থাৎ ক্যানসার উৎপাদনকারী বিষাক্ত রাসায়ানিক থাকে। অত্যন্ত ক্ষতিকর এই ধোঁয়া ছোটদের ভয়ানক শারীরিক ক্ষতি করে। বড়রাও ক্ষতিগ্রস্ত হন।

শ্বাসনালী ও ফুসফুসের কষ্ট

লক্ষ্য করে দেখবেন, বাচ্চারা খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। তাই সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়া চট করে ওরা টেনে নেয়। শিশুদের শ্বাসনালী আকারেও অনেকটা ছোট। তাই নিজেদের অজান্তে বুক ভরে টেনে নেয় বাবা-কাকা-মামার মতো নেশাড়ুদের ছেড়ে দেওয়া বিষ ধোঁয়া। সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোকিংয়ের ফলে বাচ্চার অত্যন্ত সংবেদনশীল শ্বাসনালী আর ফুসফুস ‘ইরিটেটেড’ হয়ে পড়ে। শুরু হয় সর্দিকাশি। এ রকম চলতে থাকলে বারে বারে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের প্রদাহ হয়ে ক্রনিক সর্দিকাশি, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ে। যে সব শিশুর অ্যাজমা আছে, তামাকের ধোঁয়ায় তাদের বারে বারে অ্যাটাক হয়। অনেক সময় ইনহেলার বা ওষুধে কোনও কাজ হয় না। নিউমোনিয়ায় কাহিল হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। বাচ্চার ভোগান্তির শেষ থাকে না। হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করে রিলিফ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বরাবরের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শ্বাসযন্ত্র।

আচমকা শেষ নিঃশ্বাস পড়ার ঝুঁকি থাকে

মা, বাবা অথবা বাড়ির অন্য সদস্যদের ধূমপানের কুপ্রভাবে এক বছরের কমবয়সী বাচ্চাদের আচমকা (Sudden infant death syndrome বা SIDS) মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শুরুতে মা ধূমপান করলে অথবা পরোক্ষ ভাবে সিগারেটের ধোঁয়ার মধ্যে থাকলে এক বছরের কমবয়সী শিশুদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হবু মা ধূমপায়ী হলে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অধূমপায়ীদের থেকে ৫৮% বেশি। সুতরাং সাবধানতা নিতেই হবে।

নাক-কান-দাঁতের অসুখ থেকে ক্যানসার

হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, সিগারেটের বিষ ধোঁয়া শুধুই যে ফুসফুসের বারোটা বাজায় তা নয়, শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে বিকল করে দিতে পারে। নাক-কান-গলায় সংক্রমণ, কানের ইউস্টেশিয়ান টিউবে বাধা, অটাইটিস মিডিয়া, মধ্য কর্ণের সংক্রমণ থেকে ক্রমশ বধির হয়ে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কথা বলার সমস্যা তো হয়ই, মানসিক বিকাশও ব্যাহত হতে পারে। এ ছাড়া দাঁতের ক্ষয়, গন্ধের অনুভূতি নষ্ট হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে লিউকোমিয়া সমেত নানা রক্তের অসুখ ও ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে।

বাড়ির বারান্দায় সিগারেট ধরালেও শিশুর ক্ষতি

নিকোটিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে কিছুটা ওয়াকিবহাল শিশুর নিকটাত্মীয়েরা অনেক সময় বাড়ির বারান্দায় গিয়ে সিগারেট টেনে এসে বাচ্চাকে কোলে নেন। মনে রাখবেন, এর ফলেও শিশুর শরীরে সিগারেটের বিষ প্রবেশ করে। ধূমপানের পর জামাকাপড়ে ও ধূমপায়ীর শরীরে বিষাক্ত রাসায়ানিক থেকে যায় কমপক্ষে ঘণ্টা চারেক। তাই বারান্দায় সিগারেট টানলেও বাচ্চার ক্ষতির পরিমাণ বহাল থাকে পুরোদমে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে সিগারেট নামক মহাশত্রুকে জীবন থেকে গেট আউট করুন প্লিজ!

সূত্র: অমৃতবাজার

Comments

comments