বিয়ে করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, বলছে গবেষণা
বিয়ে মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিয়ের মাধ্যেমেই একজন নর এবং একজন নারী জীবনে পূর্ণতা লাভ করে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিয়ের সুফল এবং কুফল নিয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক চলে আসছে। অনেকে যেমন বিয়ের ভালদিকগুলো নিয়ে সওয়াল করেন, তেমন অনেকেই আছেন যারা বিয়ে না করার পক্ষে তাদের রায় দেন। তবে যাই হোক না কেন, বিয়ে করার কিন্তু সুফলই রয়েছে। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকরা। ব্রিটেনের কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের দাবি, বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে মানুষের মধ্যে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
জার্নাল হার্ট-এ প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রতিযোগীদের বয়স, জাতির নিরিখে এখনও পর্যন্ত এটিই হল সবচেয়ে বড় সমীক্ষা। ফলাফলকে আরও সুক্ষ্ম করতে সমীক্ষায় যথাসম্ভব বিস্তৃত ক্ষেত্রের মানুষজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে বলেও দাবি গবেষকদের।
প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, হৃদজনিত রোগের ৮০ শতাংশের প্রধান কারণ হল বয়স, লিঙ্গ, উচ্চ রক্তচাপ, অধিক কোলেস্টেরল, ধূমপান ও ডায়াবেটিস। তবে এটা পরিষ্কার নয়, বাকি ২০ শতাংশের কারণ ঠিক কী।
ব্রিটেনের কিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল তাদের গবেষণায় ৪২ থেকে ৭৭ বছর বয়সী প্রায় ২০ লাখ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তারা মূলত, ইউরোপ, স্ক্যান্ডিনাভিয়া, উত্তর আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং এশিয়ার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন।
পরে সব তথ্য একত্রিত করে পর্যালোচনা করার পর গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে যারা বিপত্নীক/বিধবা, ডিভোর্সি অথবা কখনও বিয়ে করেননি তাদের মধ্যে কার্ডিওভাস্কুলার বা হৃদজনিত রোগ এবং করোনারি আর্টারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার বিপদ বা সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি।
গবেষকদের দাবি, বিয়ে না করার ফলেও করোনারি হার্ট ডিজিজ বা স্ট্রোকে মৃত্যুর প্রবণতা অনেক বেশি। পর্যালোচনায় উঠে আসে, ডিভোর্সের ফলে নারী ও পুরুষ-উভয় ক্ষেত্রেই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। আবার বিপত্নীক/বিধবা হলে স্ট্রোকের বিপদ ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, স্ট্রোকে মৃত্যু- পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, সেখানে বিবাহিত ও অবিবাহিতদের মধ্যে কোনো ফারাক নেই। তবে হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে এই ফারাকটা স্পষ্ট। সমীক্ষায় উঠে এসেছে- অবিবাহিতদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৪২ শতাংশ।
তবে সমীক্ষায় সমলিঙ্গ বিবাহ, বৈবাহিক জীবনের গুণমান, লিভ-ইন সম্পর্ক-এসব বিষয়কে বাইরে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা।