এই ছোট খাবারের রয়েছে অনেক গুণ
ছোট মুখে বড় কথা শুনতে ভালো না লাগলেও, এই ছোট খাবারের রয়েছে অনেক গুণ। কিশমিশকে ‘প্রাকৃতিক ক্যান্ডি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জানানো হয়, শুধু মুখের স্বাদের জন্যই নয় সারাদিনের কর্মশক্তির অন্যতম উৎস হতে পারে এই শুকনা ফল। আঙুর ফলের শুকনা রূপই হচ্ছে কিশমিশ। যা তৈরি করা হয় সূর্যের তাপ অথবা মাইক্রোওয়েভ ওভেনের সাহায্যে। তাপের কারণে আঙুরের ফ্রুক্টোজগুলো জমাট বেঁধে পরিণত হয় কিশমিশে।
এটি রক্তে শর্করার মাত্রায় ঝামেলা তৈরি করে না। আর শতকরা ৭০ ভাগ খাঁটি এই ফ্রুক্টোজ সহজেই হজমযোগ্য।
এছাড়া আঙুরের বিভিন্ন পুষ্টিগুণ যেমন ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিংক, লৌহ, ফ্লোরাইড, পোটাসিয়াম, ফোলাট, নিয়াসিন, কোলিন, ভিটামিন বি সিক্স, সি, কে এবং রিবোফ্লাবিন কিশমিশেও পাওয়া যায়। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে জন্য খাদ্যতালিকায় কিশমিশ রাখতে পারেন। প্রতিদিন এই পিচ্চি শুকনা ফলের ১২টি খেলেই যাদুমন্ত্রের মতো কাজ করবে।
এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD
* ভালো রাখে মুখের স্বাস্থ্য
ক্যান্ডির মতো দাঁতে লেগে থাকেনা কিশমিশ, ফলে থাকে না ক্যাভিটি তৈরির আশঙ্কা। বরং কিশমিশের পাইথোনিউট্রিয়েন্ট, অলিয়ানলিক এসিড নামে পরিচিতি যা ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরি দাঁতের ক্যাভিটি ধ্বংস করে মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
* রক্তশূন্যতা রোধ করে
রক্তে লৌহের পরিমাণ কম হলে অবশাদ, দুর্বলতা, হতাশায় ভুগতে পারেন, ব্যহত হতে পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে লৌহ আছে যা রক্তশূণ্যতায় ভোগা রোগির খুবই উপকারি।
এছাড়া রক্ত ও লোহিত কণিকা তৈরি জন্য দরকার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও কপার, যা কিশমিশে থাকে। এককাপ কিশমিশ ৬মি.গ্রা. লৌহের যোগান দেয়, যা প্রতিদিনের লৌহের চাহিদার ১৭ শতাংশ পূরণ করত পারে।
* হাড় সুস্থ রাখে
আজকাল অস্টিওপোরোসিস রোগে অনেকেই ভুগে থাকেন। হাড়ের এই রোগ প্রতিরোধ করতে বোরন নামের খনিজ পদার্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর কিশমিশ বোরনের অন্যতম উৎস। বোরনে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম— যা হাড় গঠনের পাশাপাশি শরীরে টেসটোসটেরন এবং ইস্ট্রোজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
* অ্যাসিডিটি স্বাভাবিক করে
অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি বা রক্ত দুষিত হওয়াকে বলে অ্যাসিডোসিস, যা থেকে আরথ্রাইটিস, চামড়া রোগ, হৃদরোগ এবং ক্যান্সার হতে পারে।
অ্যান্টাসিডস হিসেবে পরিচিতি দুটি উপাদান ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম শরীরের ক্ষরীয়ভাব স্বাভাবিক করে অ্যাসিডোসিসের হাত থেকে বাঁচায়। আর এই উপাদানগুলো কিশমিশে রয়েছে।
* আঁশে পূর্ণ
কোলোরেক্টাল ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকার জন্য যারা খ্যাদ্যাভ্যাসে আঁশযুক্ত খাদ্য রাখতে চান তাদের জন্য কিশমিশ হতে পারে আদর্শ খাবার। কারণ এক টেবিল-চামচ কিশমিশ আপনাকে দিতে পারে এক গ্রাম হজম সহায়ক আঁশ।
* দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে
নিয়মিত কিশমিশ খেলে বৃদ্ধ বয়সে দৃষ্টিহীন হওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। পাশাপাশি কিশমিশে থাকা পলিফেনল উপাদান ক্ষতিকারক ফ্রি-রেডিকেলস ধ্বংস করে চোখকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
* অ্যান্টি কোলেস্টের উপাদান
কিশমিশে কোলেস্টেরলের পরিমাণ শূন্য। শুধু তাই নয়, এতে আছে অ্যান্টি কোলেস্টেরল উপাদান যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। এছাড়া কিশমিশে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার যকৃত থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সহায়তা করে। এককাপ কিশমিশ থেকে ৪ গ্রাম দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায়।
তাছাড়া কিশমিশে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পলিফেনল কোলেস্টেরলকে শরীর থেকে এনজাইম শোষণ করা থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে।
* মস্তিষ্কের খাদ্য
কিশমিশে থাকা বোরন মস্তিষ্কের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া বোরন মনোযোগ বৃদ্ধি, চোখের সঙ্গে হাতের সামঞ্জস্য বাড়ানো স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। একশ গ্রাম কিশমিশ থেকে ২.২ মি.গ্রা. বোরন পাওয়া যায়।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
বিষাক্ত পদার্থ দূর করে রক্ত শুধু পরিষ্কারই করে না, পাশাপাশি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে কিশমিশ। মূলত কিশমিশে থাকা পটাসিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
সাধারণত উচ্চ মাত্রার সোডিয়াম শরীরে রক্তচাপ বাড়ায়। কিশমিশ শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।