দৈনন্দিন জীবনে ভিটামিন সি এর প্রয়োজনীয়তা
ভিটামিন সি… সব চাইতে বহুল প্রচলিত ভিটামিনের নাম। খেতে হবে সকলেই জানি, কিসে কিসে মেলে তাও জানি। কিন্তু কেন খেতে হবে এই ভিটামিন সি সঠিক ভাবে কেউ জানি কি? আসুন, জেনে নেয়া যাক সেই গুণাবলি গুলো। জানলে নিজেই অবাক হবেন যে কিভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে এই ভিটামিন সি।
-ভিটামিন সি’র আরেক নাম অ্যাসকরবিক এসিড। এই কারণেই ভিটামিন সি শরীরে বয়সের ছাপ পড়াকে পিছিয়ে রাখতে পারে। ফলে যৌবন ধরে রাখা যায় দীর্ঘদিন।
-আমাদের শরীরে প্রতিনিয়ত যে ক্ষয় হয়, বয়সের যে পরিবর্তন আসে তা মূলত অক্সিডেশনের জন্য। ভিটামিন সি’তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা কোষাবরণকে মজবুত করে, সহজে ভেঙে যেতে দেয় না। এভাবে শরীর ও ত্বক রক্ষা পায় দ্রুত বুড়িয়ে যাবার হাত থেকে।
-ভিটামিন সি কোলেস্টেরলের মাত্রাকে আয়ত্তে রাখে ও হৃৎপিন্ডকে রক্ষা করে।
-দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী রোগী, পক্ষাঘাতগ্রস্থ ও বেড সোরের রোগীর জন্যও দরকার ভিটামিন সি।
-ক্যান্সার রোগাক্রান্তদের জন্য পরোক্ষভাবে লড়াই করে ভিটামিন সি।
-চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় ভিটামিন সির অবদান ভীষণ। এটি চুলকে শুষ্কতা ও ভঙ্গুরতার হাত থেকে রক্ষা করে। চুলের স্বাভাবিকতা বজায় রাখে।
-রোদে পোড়া ত্বকের জন্য ভিটামিন সি উপকারী। রোদ্দুরে ঝলসানো ত্বক, শরীর ঠিকমতো ভিটামিন সি পেলে তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। বেশি করে ভিটামিন সি খেলে রোদে পোড়া ভাব তাড়াতাড়ি চলে যায় ও ত্বক সুস্থ হয়ে ওঠে।
-কোনো রোগ না থাকলেও সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য ভিটামিন সি প্রয়োজন। কোলাজেন তৈরিতে ভিটামিন সির মুখ্য ভূমিকা আছে। ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে কোলাজেনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ; তাই সজীব, সুন্দর ত্বকের জন্য প্রয়োজন ভিটামিন সি।
-যারা সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান, তারা সপ্তাহ তিনেক আগে নিয়মিত ভিটামিন সি খেলে শ্বাসতন্ত্রের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
-শারীরিক ও মানসিক পীড়নেরও উপশম ঘটায় ভিটামিন সি। খুব বেশি টেনশনে আক্রান্ত কিংবা অবসাদগ্রস্থ রোগীকে ভিটামিন সি দিয়ে ভালো ফল পাওয়া গেছে।
-ভিটামিন সি শরীরকে আয়রন গ্রহণ করতে সাহায্য করে। আয়রন ফেরাস অবস্থায় থাকলে শরীর সহজে তা গ্রহণ এবং ব্যবহার করতে পারে। ভিটামিন সি আয়রনকে সেভাবে রাখতে বিশেষ সহায়ক। এটি অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া অ্যামাইনো এসিড মেটাবলিজমেও ভিটামিন সি দরকার।
– নানা ধরনের ভাইরাল ইনফেকশনের সাথে ভিটামিন সি মোকাবিলা করতে পারে ও অসুখের উপসর্গ কমিয়ে দেয়। সাধারণ সর্দি কাশি ও ঠান্ডা লাগাতেও ভিটামিন সি ভালো কাজ দেয়। ভিটামিন সি শরীর প্রতিদিন ঠিক মাত্রায় পেলে চট করে একটু বয়স হলেই চোখে ছানি পড়ে না।
কোথায় পাবেন ভিটামিন সি??
প্রধানত সবুজ শাকসবজি, টক ফলে রয়েছে ভিটামিন সি। পালংশাক, নটেশাক, পেয়ারা, কমলালেবু, আমলকী, লেবু, আম, পেঁপে এসবে রয়েছে ভিটামিন সি। এ ছাড়া অঙ্কুরিত ছোলা, শিম বীজ ও ডালেও পাওয়া যাবে। কাঁচা মরিচেও মিলবে ভিটামিন সি।
নিয়ম করে প্রতিদিন শাকসবজি ও মৌসুমি ফল দুবেলা খেলে ভিটামিন-সি-এর চাহিদা পূর্ণ হবে। এ ছাড়া কাঁচা সবজি বা সালাদ খাবার অভ্যাসও গড়ে তুলতে হবে। তাজা সবজি, তাজা ফলে যতটা ভিটামিন-সি আছে বাসি ফল ও সবজিতে নেই। তাই তাজা ফল ও সবজি খাবেন।
ভিটামিন সি শরীরে সংরক্ষণ করে রাখা যায় না। তাই দৈনিক শরীরে এই ভিটামিনের জোগান দিতে হয়।
Related Posts
Comments
comments