৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, রবিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

স্বতীচ্ছদ এর অবস্থা দেখে কি নারীর স্বতীত্ব বিচার করা যায়?

হাইমেন শব্দটি গ্রীক ভাষা থেকে এসেছে। যার বাংলা অর্থ স্বতিচ্ছদ । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় হাইমেন বা স্বতিচ্ছদ অর্ধচন্দ্রাকার একপ্রকার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী যা স্ত্রী যোনিমূখ ঘিরে থাকে। এটি শরীরের অতি জরুরী অঙ্গের একটি। বয়স যত বাড়তে থাকে স্বতীচ্ছদের মুখ/ছিদ্র ক্রমশঃ বড় হতে থাকে। এটি যোনীমুখের একদম সামনের দিকে অবস্থিত। দুই পা সম্পুর্ন ছড়িয়ে দিয়ে ছোট একটি আয়না সামনে রেখে আপনি এ পর্দটি নিজেই দেখতে পারেন। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞান বলেছে এটি নিছক একটি আংশিক আবরনকারী পর্দা – এমনকি অনেক নারী এ পর্দা ছাড়াও জন্ম গ্রহন করেন অথবা সাঁতার, খেলাধুলা সহ দৈনন্দিন কাজ কর্মের ফলে এটি চিরে যায়, তারপরও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ অঙ্গ এখনো নারীর স্বতীত্বের প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় – যা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন।

ভারত এবং জাপান সহ বিশ্বের অনেক দেশে স্বতিচ্ছদ পুনঃস্থাপন অস্ত্রপ্রচার (প্লাষ্টিক সার্জারী) খুব জনপ্রিয়।

স্বতিচ্ছদের কাজঃ

– বাচ্চা বয়সে মেয়েদের যৌনাঙ্গকে সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করা।

– মাসিক ঋজঃচক্র শুরু হবার পর রক্তের স্বাভাবিক বহিঃর্গমন নিশ্চিত কর।।

স্বতিচ্ছদের প্রকারবেধঃ

১. ছিদ্রহীন স্বতিচ্ছদ:

সাধারনত এই প্রকার স্বতিচ্ছদ সম্পুর্ন যৌননালীকে ঢেকে রাখে। এতে কোন প্রকার ছিদ্র থাকেনা, তাই ঋজঃচক্রের রক্ত বাহিরে আসেতে পারেনা।

ভারত এবং জাপান সহ বিশ্বের অনেক দেশে স্বতিচ্ছদ পুনঃস্থাপন অস্ত্রপ্রচার (প্লাষ্টিক সার্জারী) খুব জনপ্রিয়।

স্বতিচ্ছদের কাজঃ

– বাচ্চা বয়সে মেয়েদের যৌনাঙ্গকে সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করা।

– মাসিক ঋজঃচক্র শুরু হবার পর রক্তের স্বাভাবিক বহিঃর্গমন নিশ্চিত কর।।

স্বতিচ্ছদের প্রকারবেধঃ

১. ছিদ্রহীন স্বতিচ্ছদ :

সাধারনত এই প্রকার স্বতিচ্ছদ সম্পুর্ন যৌননালীকে ঢেকে রাখে। এতে কোন প্রকার ছিদ্র থাকেনা, তাই ঋজঃচক্রের রক্ত বাহিরে আসেতে পারেনা।

ছোট ছিদ্র স্বতিচ্ছদ অতি পাতলা একটি কোষ দিয়ে গঠিত, যা প্রায় যোনীমুখ পুরা ঢেকে রাখে – তবে এতে খুব ছোট একটি ছিদ্র থাকে। এই স্বতীচ্ছদ ঋজঃচক্রের রক্ত প্রবাহ সম্পুর্ন বন্ধ করে দিবেনা, তবে এটি কঠিন করে তুলবে, খুব আস্তে এবং যন্ত্রনাদায়ক ঋজঃচক্র হতে পারে। ছোট ছিদ্র স্বতীচ্ছদে Tampon (ঋজঃস্রাবের রক্ত চুষে নেবার জন্য আঙুলের মত দেখতে একপ্রকার প্যাড – যা ঋতুকালীন যৌনাঙ্গে পুরে রাখা যায়) ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়না, যদিও কেউ ঠিক মত খালি Tampon ঢুকাতে পারে , অতপরঃ এটি পুরে গেলে তাদের জন্য বাহির করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। যেসকল নারীর ছোট ছিদ্র স্বতিচ্ছদ সমস্যা আছে তাদের স্বতিচ্ছদের ছিদ্র ছোট হবার কারনে রক্ত প্রবাহ খুব আস্তে আস্তে হয়। তাই তাদের দীর্ঘ সময় ঋজঃস্রাব হয়ে থাকে। অনেক সময় কিশোরী মেয়েরা অনুমানও করতে পারেনা তাদের ছোট ছিদ্র স্বতিচ্ছদ আছে। ছোট্র একটি অস্ত্রপ্রচারের সাহায্যে স্বাভাবিক আকারের ছিদ্র তৈরি করার মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যায়।

৩. দুই ছিদ্র যুক্ত স্বতিচ্ছদ :

যে স্বতিচ্ছদের স্বাভাবিক ছিদ্রের মাঝে অন্য একটি স্তর পরিলক্ষিত হয় তাকে দুই ছিদ্র যুক্ত স্বতিচ্ছদ বলে, যার ফলে একটির বদলে দুইটি ছোট ছোট ছিদ্র সৃষ্টি হয়। এটি স্বতিচ্ছদ উপরোল্লিখিত সমস্যার তুলনায় খুবই কাদাচিৎ (কম মাত্রায়) দেখা যায়। এমনকি এ সমস্যা ২০০০ হাজার নারীর মধ্যে মাত্র একজনের দেখা যেতে পারে। ছিদ্রহীন(১) স্বতিচ্ছদের মত ছোট্র একটি অস্ত্রপ্রচারের মাধমে এ সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া সম্ভব। এই অস্ত্রপ্রচারে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মত সময় লাগে। এবং একই দিন হাসপাতাল ছেড়ে ঘরে চলে আসতে পারে। ২/১ দিনের মাথায় ওই অঞ্চল স্বাভাবিক হয়ে যায়।

একজন ডাক্তারই সঠিকভাবে বলতে পারবেন আপনার স্বতিচ্ছদ ফেটে গেছে কিনা? যাইহোক, কিছু লক্ষন থেকে আপনি অনুমান করতে পারেন স্বতীচ্ছদ সত্যিকারেই ফেটে গেছে নাকি এখনো বিদ্যমনঃ

* দুই পা ফাঁক করে বসুন। এবার আঙুলের সাহায্যে ভগাঙ্কুরের ভাজ দুটিকে দুই দিকে সরিয়ে ধরুন এবং ছোট একটি আয়না যোনীর সামনে রেখে লক্ষ করুন রিং আকারের পাতলা একটি পর্দা দেখতে পান কিনা? যদি দেখা যায় তবে বুঝবেন আপনার স্বতিচ্ছদ এখনো ঠিক আছে।

* আপনি চাইলে আস্তে (জোরে চাপ না দিয়ে) আস্তে মধ্যমা আঙুল যোনীতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করুন। যদি আঙুল স্বাভাবিক ভাবে ১ থেকে ১.৫ ইঞ্চির বেশি না ঢুকে এবং মনে হয় কিছু একটা জিনিস আপনার আঙুলকে পিছনের দিকে ঠেলে বাহির করে দিচ্ছে, তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার স্বতিচ্ছদ বিদ্যমান আছে।

* স্বতিচ্ছদ ছিড়ে যাবার সময় রক্তপাত হয় এবং সামান্য ব্যথা-যন্ত্রনা অনুভুত হয় এবং সে থেকে জানতে পারেন আপনার স্বতীচ্ছদ কবে ফেটেছিল।

স্বতিচ্ছদ পুনঃপ্রতিষ্ঠা কিংবা মেরামত করাঃ

নরীর স্বতীচ্ছদ শাররীক মিলন অথবা সাঁতার, শরীরচর্চা, খেলাধুলা ইত্যাদি থেকে ফেটে যেতে পারে। tampon ব্যবহারের ফলেও অনেক সময় স্বতীচ্ছদ ফেটে যায়। চিরে কিংবা ফেটে যাবার পর হাইমেনোপ্লাষ্টি দ্বারা স্বতীচ্ছদ পুনরায় মেরামত/পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। হাইমেনোপ্লাষ্টি সাধারনত জাতিগত, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারনে করে থাকে – যার মধ্যে “স্বতীচ্ছদ নারী স্বতীত্বের প্রমান” এমন গুরুত্বপুর্ন ধারনা কারন হিসেবে নিহিত থাকে। হাইমেনোপ্লাষ্টি দ্বারা ছিদ্রহীন স্বতীচ্ছদেরও অস্ত্রপ্রচার হয়ে থাকে।

স্বতীচ্ছদ – সত্যিকার বিষয়গুলি…

প্রতি ১০০০ হাজার মেয়ে শিশুর ১ জন স্বতীচ্ছদ ছাড়াই ভুমিষ্ঠ হয়।

শতকরা ৪৪% নারীর-ই প্রথমবার মিলনে কোন প্রকার রক্তপাত হয়না।

স্বতীচ্ছদ খেলাধুলা কিংবা অন্যকোন কারনে প্রাকৃতিক ভাবেই ফেটে যেতে পারে।

মাসিক ঋজঃস্রাবের সময় স্বতীচ্ছদে অবস্থিত ছিদ্র রক্ত প্রবাহকে স্বাভাবিক রাখতে প্রাকৃতিক ভাবেই বড় হয়ে যায়।

Tampon (টেমপুন) ব্যবহারের ফলে স্বতিচ্ছদ ছিড়ে যেতে পারে।

অনেক নারী যাদের ছোট কিংবা ইলাষ্টিক টাইপ স্বতিচ্ছদ থাকে তাদের কখনো স্বতীচ্ছদ ফাটে না। এমনকি সন্তান জন্ম দেবার পরও স্বতীচ্ছদ অক্ষত থাকে।

স্বতীচ্ছদ ফাটলেই রক্তক্ষরণ হবে – এটি ভুল ধারনা। রক্তক্ষরণ ছাড়াও স্বতীচ্ছদ চিরে যেতে পারে।

নারীর হাইমেন বা সতিচ্ছদনারীর হাইমেন বা সতিচ্ছদনারীর স্বতিচ্ছদ বা Hymen

পরিশিষ্টঃ

আমাদের দেশে এখনো বাসর রাতে সাদা রঙের বিছানার চাদর ব্যবহার করতে দেখা যায়। যার অলিখিত উদ্দেশ্যই হল – প্রথম মিলনে রক্তপাত হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করা। অনেক সু-শিক্ষিত মানুষকেও দেখি তার সদ্য বিবাহকরা স্ত্রীর স্বতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন – রক্তক্ষরণ কিংবা মিলনকালে নারী স্বাভাবিক থাকলে।

ভাই দিন বদলেছে – মানুষের অন্ধকারে বসবাসের সময়ও পরিবর্তন হয়েছে। তার পরও কি মান-দাত্বার আমালের চিন্তাধারা নিয়ে থাকবেন?

পশ্চিমা বিশ্ব এমনকি ইরান সহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে অস্ত্রপ্রচারের মাধ্যমে কিশোরী মেয়েদের স্বতিচ্ছদ অপসারাণ করে ফেলা হয়।

Comments

comments