হাত কাঁপা রোগের লক্ষণ ও করণীয়
আমাদের অনেকেরই মাঝে মাঝে হাত কাঁপে। একে ডাক্তারি ভাষায় বলে শেকি হ্যান্ড বা হ্যান্ড ট্রিমর। হাত কাঁপা কোনো মারাত্মক সমস্যা না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটি বিপত্তিকর এবং অনেক কাজের জন্য অসুবিধাজনক। মূলত স্নায়ুপেশি সন্ধিতে সমস্যার জন্য এই অসুখটি হয়।
হাত কাঁপা রোগের কারণ : হাত কাঁপার প্রধাণ কারণটি হলো বংশগত। কিছু রোগ যেমন- পারকিনসন্স ডিজিস, এসেনসিয়াল ট্রিমর, স্ট্রোক, থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা, ব্রেইন টিউমার, মৃগী রোগ, স্নায়বিক সমস্যা ইত্যাদি কারণে হাত কাঁপা হতে পারে। ঘুমের ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেওয়া, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাওয়া, অত্যাধিক ক্রোধ, দুশ্চিন্তা এসব থেকেও হাত কাঁপা হতে পারে। এছাড়া মদ্যপান, ধূমপান, অত্যাধিক চা, কফি পান ইত্যাদি কারন ও আছে।
হাত কাঁপা রোগের লক্ষণ : হাত কাঁপা সমস্যাটির লক্ষণগুলো সহজে বোঝা যায় না। সাধারণত অন্যান্য সমস্যার সাথে একীভূত হয়ে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো- লিখতে সমস্যা হওয়া, খেতে সমস্যা হওয়া, অস্থির লাগা, অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, ভারসাম্য রাখতে না পাড়া, কিছু ক্ষেত্রে মৃগী রোগ ও অত্যাধিক মাথা ব্যাথা হতে পারে।
হাত কাঁপার প্রতিকার : অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগটি যেহেতু বংশগত কাজেই কোনো প্রতিকার নেই। কিন্তু পূর্বে উল্লেখিত লক্ষণগুলো প্রকাশ পেলে সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে হবে। রোগীকে অবশ্যই মদ্যপান, ধূমপান ও অতিরিক্ত চা বা কফি পান ত্যাগ করতে হবে। নিয়মিত খাদ্যাভাস ও ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। কিছু ওষুধ এক্ষেত্রে কাজ দিয়ে থাকে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে গ্রহণ করতে হবে।
হাত কাঁপা রোগের জন্য কোনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন নেই। যদি কোনো ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক সমস্যা তৈরি করে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা এই পন্থা বেছে নিতে পারেন। ডিবিএস-Deep Brain Stimulation, থ্যালামটমি-এই ২ টি অপারেশন সাধারণত করে থাকেন চিকিৎসকেরা।
যদি কখনও হাত কাঁপা সমস্যা অনুভূত হয়, তবে দ্রুত আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ সমস্যাটি একবার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিটা কাজে প্রতি মুহূর্তে সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।