১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সোমবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

শরীরে রক্ত চলাচল বাড়াতে সহায়ক ১৪টি প্রাকৃতিক উপাদান

মানবদেহের ওজনের ৭ শতাংশ আসে রক্ত থেকে। আর এই রক্ত শিরা-উপশিরাগুলোর মাধ্যমে আমাদের দেহে চলাচল করে সারাক্ষণই। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দেহে গড়ে ৪.৫ থেকে ৫.৫ লিটার রক্ত থাকে। তবে লিঙ্গ, ওজন, উচ্চতা এবং সার্কি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ভেদে এতে ভিন্নতাও থাকতে পারে।

মানবদেহের এই লাল তরলটি সত্যিই যাদুকরী নানা উপায়ে এবং আমাদের দেহের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদন করে। আমাদের দেহের নানা অংশে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যাওয়া, দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং জীবাণুর সংক্রমণ ও রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো কাজ করে রক্ত। ফলে যথাযথভাবে রক্ত চলাচলের গুরুত্ব অপরিসীম। ক্ষুধামান্দ্য, অনবরত নানা অঙ্গের অসাড়তা, হজম প্রক্রিয়ায় অব্যাখ্যাত সমস্যা, প্রায় প্রায়ই ক্লান্তি ও অবসাদ, ত্বকের বিবর্ণতা, চুল ও নখের ভঙ্গুরতা এবং শুষ্কতা প্রভৃতি রক্ত চলাচল ঠিকভাবে না হওয়ার লক্ষণ।

হৃৎপিণ্ড রক্তকে পাম্প করে শিরা-উপশিরাগুলোর মাধ্যমে দেহের নানা অঙ্গে ছড়িয়ে দেয়। হৃৎপিণ্ড এবং শিরা-উপশিরাগুলোই রক্তকে দেহে চলাচলের জন্য সবচেয়ে বগড় ভুমিকা পালন করে। ধমনী হৃদপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত নিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয়। আর শিরা-উপশিরাগুলো কার্বন ডাই অক্সাইডযুক্ত রক্ত পুনরায় হৃৎপিণ্ডে ফিরিয়ে আনে।

রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় যেসব কারণে
শরীরে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার প্রধান একটি কারণ হলো ধুমপান। সিগারেটে থাকা কার্বন মনোক্সাইড রক্তের কোষের স্তর ধ্বংস করে দেয়। ফলে শিরায় প্লাক এবং চর্বি জমে যায়। রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়।

আজকাল আমরা শারীরিকভাবে অনেক বেশি নিষ্ক্রিয় জীবন যাপন করি এবং শরীরচর্চা করার সময়ই পাই না। শরীরচর্চা না করা এবং সক্রিয়তার অভাবেও রক্ত চলাচল ব্যাহ হয়।

ফাস্টফুড খাওয়ার ফলে স্থুলতায় আক্রান্ত হওয়ার কারণেও রক্তচলাচল ব্যাহত হয়।

উচ্চ/নিম্ন রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলও রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ।

 

কীভাবে রক্ত চলাচল বাড়ানো যাবে

১. মদপান ত্যাগ করুন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে হৃৎপিণ্ডে সমস্যা হয়। সুতরাং আজই মদপান ত্যাগ করুন। তবে রেডওয়াইন জাতীয় হালকা মদ পান করা যেতে পারে। কেননা রেডওয়াইনে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে রেখে রক্ত চলাচলে সহায়তা করে। তবে পরিমি পরিমাণে রেডওয়াইন খেতে হবে।

২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
দেহকে সচল রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পান করতে হবে। পানি আমাদের দেহ থেকে ট্রক্সিন বা বিষ বের করে দিতে সহায়ক। আর দেহকে যে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়িয়ে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

৩. বাদাম খান
কাজুবাদাম এবং আখরোট খেলে রক্ত চলাচল বেগবান হয়। ভিটামিন এ, বি, সি ও ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বাদাম এবং ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ বাদাম খেতে হবে। বাদাম ধমনীতে প্রদাহ এবং পঁচনজনিত ক্ষয়রোধ করে রক্ত চলাচল বাড়ায়।

৪. গ্রিন টি
দুধ চা না খেয়ে বরং গ্রিন টি খান। যা আরো বেশি স্বাস্থ্যকর এবং দেহের কার্যক্রমতে উদ্দীপিত করে। গ্রিন টি রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে প্রশস্ত করে যার ফলে রক্ত প্রবাহের গতিও বাড়ে।

৫. স্নায়ু উত্তেজক উপাদান এড়িয়ে চলুন
ক্যাফেইন এর মতো স্নায়ু উত্তেজক উপাদান এড়িয়ে চলুন। তাহলে কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই আপনার দেহের সব অংশে রক্তচলাচল করতে পারবে। ক্যাফেইন শরীরকে শুষ্ক করে তোলে। কিন্তু রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য শরীরকে আর্দ্র রাখা জরুরি।

৬. লবণ খাওয়া কমান
অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বাড়ে এবং স্ফীতি দেখা দেয়। যার ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এজন্য ক্যানজাত খাবারের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফ্রিজে জমাট খাবার, কেচাপ সস বাদ দিতে হবে। কেননা এসবে উচ্চমাত্রায় সোডিয়াম থাকে।

৭. রসুন, আদা, পেঁয়াজ
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন, আদা এবং পেঁয়াজের পরিমাণ আরেকটু বাড়ান। এসব আপনার রক্ত চলাচল প্র্রক্রিয়ার স্বাস্থ্য উন্নত করবে। এছাড়া এসবে আছে প্রদাহরোধী এবং জীবাণুরোধী উপাদান যা হজম প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে। এছাড়া রোগ-জীবাণুর সংক্রমণের বিরুদ্ধেও কাজ করে এবং দেহকে বিষমুক্ত করে এসব উপাদান।

৮. ভেষজ খাওয়া বাড়ান
যে কোনো রোগের চিকিৎসায় ভেষজ অনেক বেশি নিরাপদ এবং কার্যকর। ভেষজ পরিবারেরই সদস্য জিনসেং মূলসমুহ যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং রক্ত চলাচল বাড়ায়।

৯. ডার্ক চকোলেট
এতে আছে কোকোয়া যাতে আছে ফ্ল্যাভোনয়েড। যা রক্ত প্রবাহ উন্নত করে।

১০. গোলমরিচ
গোলমরিচ বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করে। এবং ধমনি ও রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে শক্তিশালী করে।

১১. সূর্যমুখি বীজ
এই বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই থাকে। যা রক্তে জমাটবদ্ধতা প্রতিরোধ করে। এছাড়া জলপাই, বাদাম এবং তরমুজ বীজও উপকারী।

১২. সাইট্রাস ফল
কমলা, লেবু এবং জাম্বুরারে আছে ভিটামিন সি এবং সুগার ও প্রদাহ কমাতে সহায়ক। ফলে রক্ত চলাচল বাড়ে।

১৩. তরমুজ
এতে আছে লাইকোপেন নামের একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তচলাল উন্নত করে। টমেটো, অ্যাপ্রিকট এবং গোলাপি মোসাম্বি লেবুও রক্ত চলাচল অবাধ করে।

১৪. অ্যাভোকাডো
এতে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। যা হৃদযন্ত্রকে সচল রাখে এবং রক্ত প্রবাহের গতি বাড়ায়। এছাড়া কাঁচা চীয়া বীজ এবং শ্বেতবীজেও একই উপকারীতা আছে।

Comments

comments