রূপ না গুণ, মেয়েদের কোনটা আগে?
ছেলেরা মুখে বলে যে, তারা কোনো মেয়ের ভিতরের সৌন্দর্য্যটাই চায়৷ তবে আসলে নাকি তারা মেয়েদের শারীরিক সৌন্দর্য্যের দিকেই তাকিয়ে থাকে এবং গুরুত্ব দেয়৷ সঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রেও কি এই কথা প্রযোজ্য?
প্রযুক্তির ব্যবহার : আজকের দিনে প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে শরীর বা চেহারাকে ইচ্ছেমতো বদলে ফেলা যায়৷ আর ছবিতে স্থূল আকৃতির নারীকে স্লিম করা বা বেশি স্লিম মেয়েকে খানিকটা মোটা করা কোনো ব্যাপারই নয়! তাই ছবি দেখিয়ে কাউকে মুগ্ধ করতে চাইলে ফটোশপের মাধ্যমে চেহারার অনেক ক্রুটি ঢেকে নিজেকে রূপসীভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব৷
অন্তরের সৌন্দর্য্যই আসল সৌন্দর্য্য : কথায় বলে ‘অন্তরের সৌন্দর্য্যই আসল সৌন্দর্য্য’৷ কথাটা কতখানি সত্যি? এটা কি একটু পুরনো আমলের কথা বলে মনে হয়? আসলে মোটেও তা নয়৷ অন্তত লন্ডনের ওয়েষ্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ড. ভিরেন স্বামীর করা গবেষণা তাই বলে৷ অন্তরের সৌন্দর্য্যই আসল বলেই তিনি মনে করেন৷
ব্যক্তিত্ব নাকি ফিগার, কোনটা আগে? : ড. স্বামীর গবেষণায় প্রায় দুই হাজার পুরুষকে প্রথমে স্থূল, রোগা, স্লিম সব ধরণের নারীর দৈহিক সৌন্দর্য্যের ছবি দেখানো হয়েছিল৷ এরপর ছবির সঙ্গে তাদের পরিচয়, ব্যক্তিত্ব, চরিত্র ইত্যাদিও জানানো হয়৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দ্বিতীয়বার সব পুরুষের মনেই নারী চরিত্রের প্রভাব বেশি পড়েছে অর্থাৎ চেহারার চেয়ে স্বভাব-চরিত্রকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন গবেষণায় অংশ নেয়া পুরুষরা৷
মতের পরিবর্তন হতে পারে দ্রুত : গবেষণাটি ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল৷ তারপর থেকে এর বিপক্ষে তেমন কোনো তথ্য প্রকাশিত হয়নি৷ তবে অ্যামেরিকার নিউ জার্সির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী ড. গ্যারি লেভান্ডভস্কি সংবাদ মাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘একজন নারীকে প্রথমবার খুব সুন্দর লাগলেও পরেরবার তাকে তেমন সুন্দর লাগে না, এমনটাও হতে দেখা যায়৷’
নারীর চেহারা : মনোবিজ্ঞানী ড. গ্যারি লেভান্ডভস্কি আরো বলেছেন, ‘আমি গবেষণায় দেখেছি, কোন পুরুষের কাছে একজন নারীকে চেহারা পছন্দ হলেও পরের বার সে, নারীর আন্তরিকতা, মন এবং বুদ্ধির দিকে খেয়াল করেছেন৷ প্রথম ওপর এবং পরমুহুর্তেই অন্তরের বা ভিতরের খবর জানতে চান৷ যা দেখে আমি নিজেই বেশ অবাক হয়েছি৷’
সুন্দর ব্যবহার : ভাল ব্যবহার, আন্তরিকতা ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন কোনো নারীকে যখন ভালো লেগে যায় তখন তার নাকটা একটু বাঁকা নাকি সে দেখতে একটু মোটা, তা নগণ্য হয়ে যায়৷ প্রথম পরিচয়ে তো আর কেউ শুধু গায়ের রং বা চেহারা দেখে না, ব্যবহারটাও তখন বড় ব্যাপার হয়, যা কিছুটা মেশা বা কথাবার্তা বলে তবেই বোঝা সম্ভব৷
সুন্দর হাসির জয় সর্বত্র : সুইজারল্যান্ডের বার্ন বিশ্ববিদ্যালের মনোবিজ্ঞানী ইয়ানেক লোম্বায়ের মতে, ‘সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নারীর হাসি মুখের কদর পুরুষদের কাছে অনেক বেশি৷ শতকরা প্রায় ৯০ জন পুরুষই হাসি মুখের পক্ষে৷ এমনো দেখা গিয়েছে, হাসি মুখের নারীটি হয়তো হাসি ছাড়া নারীর চেয়ে কম সুন্দরী তবুও৷ আসলে মানুষ হাসলে অন্যের কাছে সে সহজে গ্রহণযোগ্যতা পায় এবং তাকে কিছুটা নরম ও বন্ধুত্বসুলভ বলে মনে হয়৷’
মেকআপ-বাড়ির পেন্টিং-এর মতো : নারীদের প্রতি, মনোবিজ্ঞানী ড. গ্যারি লেভান্ডভস্কি-র পরামর্শ – যদি নিজেকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় দেখাতে চান তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব, চরিত্র ও সুন্দর ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিন৷ মূল কথা, নিজেকে গ্রহণযোগ্য করতে প্রয়োজন সুন্দর অন্তরের, ওপরের মেকআপ নয়! মেকআপ হচ্ছে অনেকটা বাড়ির পেন্টিং-এর মতো৷