ছড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর ভাইরাস ‘সুপার ম্যালেরিয়া’!
এবার ‘সুপার ম্যালেরিয়া’ নামে এক ধরনের ভয়ঙ্কর ভাইরাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল ‘দ্যা ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজেস’এ প্রকাশিত এক নিবন্ধের বরাত দিয়ে এই খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এদিকে সারাবিশ্বে এইড সুপার ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে গবেষকরা বলছেন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের প্রধান ওষুধগুলোও বিপদজ্জনক ধরনের এই ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে মারতে পারছে না।
রাশিয়ার সংবাদ মাধ্যম আরটি নিউজ জানায়, সুপার ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই রোগ ২০০৮ সালে কম্বোডিয়ায় প্রথম ধরা পড়ে। এরপর থাইল্যান্ডের কয়েকটি অংশ ও লাওসে ধরা পড়ার পর এটি এখন দক্ষিণ ভিয়েতনামেও ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাংককে কর্মরত দি অক্সফোর্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন রিসার্চ ইউনিটের গবেষকদলের বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যালেরিয়ায় আরোগ্য না হয়ে ওঠার বিপদ পর্যন্ত রয়েছে।
গবেষকদের প্রধান অধ্যাপক আর্জেন দনদর্প বলেন, আমরা একে বড় ধরনের হুমকি বলেই ভাবছি। পুরো (দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়) অঞ্চলে এত দ্রুত এর দুর্ভোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে এটা আশঙ্কার।এটা আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও আমরা শঙ্কায় রয়েছি। ল্যানসেটের নিবন্ধে গবেষকরা সুপার ম্যালেরিয়া যে ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত ওষুধ আর্টেমিসিনিন প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে তার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
অধ্যাপক দনদর্প জানান, ভিয়েতনামের রোগীদের এক তৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই সুপার ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা ব্যর্থ হচ্ছে। আর কম্বোডিয়ার কোনো কোনো অঞ্চলে ব্যর্থতার হার ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। আফ্রিকায় ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার হার মহামারী আকারে দেখা দিতে পারে। পৃথিবীতে যত ধরনের ম্যালেরিয়া আছে, তার ৯২ শতাংশ হয়ে থাকে আফ্রিকায়। তিনি বলেন, ম্যালেরিয়া আবার চিকিৎসারোধী হয়ে ওঠার আগেই একে আমাদের নির্মূল করতে হবে। আমরা অনেক মৃত্যু দেখেছি। যদি সত্যি বলি, আমি আসলে এটা নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন।
ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় পিপারকুইনের সমন্বয়ে আর্টেমিসিনিনই প্রথম পছন্দ। তবে সুপার ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে আর্টেমিসিনিনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় এটির জীবাণুরা পিপারকুইনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে তারও প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। সুপার ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে ওষুধে ব্যর্থ হওয়ার হার বাড়ছে বলে ওই নিবন্ধে বলা হয়। প্রসঙ্গত প্রতিবছর বিশ্বে ২১ কোটি ২০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। রক্তচোষা মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়ার জীবাণু ছড়ায়; এটি শিশু মৃত্যুর একটি বড় কারণ। সূত্র: নিরাপদ নিউজ