পুরুষদের তুলনায় নারীদের মস্তিষ্ক বেশি সক্রিয়!
সম্প্রতি জার্নাল অফ আলঝেইমার’স জিজিজে প্রকাশিত একটি গবেষণা নারী-পুরুষের বুদ্ধির পার্থক্য সংক্রান্ত সেই পুরোনো বিতর্কটি আবারো উস্কে দিয়েছে। এবারের এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মস্তিষ্ক অনেক বেশি সক্রিয় থাকে এবং তাদের মস্তিষ্কে পুরুষদের তুলনায় বেশি রক্ত প্রবাহিত হয়।
৯টি ভিন্ন ভিন্ন মেডিকেল সেন্টার থেকে সংগৃহীত মস্তিষ্কের ৪৬ হাজার ছবি বিশ্লেষণ করে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। ছবিগুলো তোলা হয়েছিল নারী এবং পুরুষরা কেন ভিন্ন ভিন্ন মস্তিষ্কের রোগে ভোগেন।
পুরুষদের মস্তিস্কের রোগের উচ্চ ঝুঁকি
নারীদের মধ্যে সাধারণত আলঝেইমার’স, উদ্বেগজনিত মানসিক বিশৃঙ্খলা, অনিদ্রা এবং অবসাদ রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। সেখানে পুরুষদের মধ্যে ADHD (attention deficit hyperactivity disorder) এবং আচরণগত সমস্যা বেশি দেখা যায়। এমনকি প্রকৃতপক্ষে পুরুষদের মধ্যে আচরণগত সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি নারীদের তুলনায় ১৪০০ গুন বেশি।
ইতিহাসে এটি মস্তিষ্ক সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় গবেষণা
SPECT (Single Photon Emission Computed Tomography) প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকরা মস্তিষ্কের ১২৮টি এলাকা নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষণাটি করা হয় দুটো অবস্থায়- বিশ্রামের সময় এবং যখন সরল কোনো জ্ঞানীয় তৎপরতায় লিপ্ত থাকে মস্তিষ্ক।
গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সে পুরুষদের তুলনায় বেশি রক্ত প্রবাহিত হয়। মস্তিষ্কের এই অংশটি অনুপ্রেরণা নিয়ন্ত্রণ, উন্নত মনোযোগ, সহানুভূতি এবং স্বজ্ঞমূলক তৎপরতার জন্য দায়ী।
এছাড়া লিম্বিক অঞ্চলেও রক্ত প্রবাহ বেশি। এই অঞ্চলটি তাদের আবেগের ভরকেন্দ্র।
অন্যদিকে, পুরুষদের মস্তিষ্কের সেরেবেল্লাম এবং অন্যান্য এলাকায় রক্তপ্রবাহ বেশি থাকে। যার কাজ মূলত দৃষ্টির তীক্ষ্ণতা বাড়ানো এবং সমন্বয়ের কাজ করে থাকে। ব্রেন ট্রমা. সিজোফ্রেনিয়া, এডিএইচডি এবং অন্যান্য মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্তদের মধ্যেও একই রক্তপ্রবাহ দেখা গেছে।
নারী এবং পুরষ কি মৌলিকভাবেই ভিন্ন?
বিজ্ঞানীদের গবেষণায় অনেক আগেই ধরা পড়েছে, শুধু মাংসপেশি আর জননাঙ্গ নয় বরং আরো নানাভাবে নারী ও পুরুষের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। যেমন…
১. নারী শিশুরা মানুষের চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকতে বেশি পছন্দ করে। অন্যদিকে, পুরুষরা গতিমান কোনো বস্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে পছন্দ করে।
২. নারীরা বেশি ভালোভাবে শুনতে পান। অন্যদিকে, পুরুষদের নির্ভুলভাবে দেখার এবং স্থানিক সমন্বয়ের সক্ষমতা বেশি।
৩. নারীরা তাদের আবেগগুলো ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন। কেননা তারা তাদের নেতিবাচক আবেগগুলো সেরিব্রাল কর্টেক্সে প্রক্রিয়াজাত করে। অন্যদিকে, পুরুষরা তা পারেন না। কেননা তাদের নেতিবাচক আবেগগুলো প্রিমিটিভ অ্যামিগডালাতে প্রক্রিয়াজাত হয়।
৪. নারীরা বেশি সহযোগিতামূলক। অন্যদিকে, পুরষরা বেশি প্রতিযোগিতাপ্রবণ। সূত্র: সায়েন্স ডেইলি