৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

যখন আপনার দেহে আর কাজ করবে না অ্যান্টিবায়োটিক

মানব সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে ও এর সুরক্ষায় চিকিৎসাবিজ্ঞান এক অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। ইতিহাসে অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার অনবদ্য। কিন্তু এটি যখন কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে তখন তা বড়ই চিন্তার বিষয়।

ভারতের সেন্টার ফর ডিজিস ডাইনামিক্স, ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিসি’ পরিচালিত ‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড অ্যান্টিবায়োটিকস ২০১৫’-এ বলা হয়, অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতার কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ ৩০০ মিলিয়ন মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। সময়ের সঙ্গে রোগ প্রতিরোধের চিকিৎসা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠবে। অ্যান্টিবায়োটিক কাজ না করলে সামান্য রোগেই মানুষের মৃত্যু ঘটবে।

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি? : দেহে রোগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বেড়ে ওঠা প্রতিরোধে এবং নিয়ন্ত্রণে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু এটি প্রয়োগের পরও যদি ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত না হয়, তবে ওষুধ কাজ করছে না বলেই জানান ফোর্টিসের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর সুপ্রদীপ ঘোষ।

কি কারণে হয়? : বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দেহে নানা রোগ সৃষ্টি করে। ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তনের কারণে প্রচলিত অ্যান্টিবায়োটিক আর কাজ করবে না বা করছে না বলে মনে করা হচ্ছে। মানুষের দেহে বাস করার জন্যে মিলিয়ন বছর ধরে জীবাণু নিজেকে খাপ খাইয়ে নিয়েছে। এমনকি মানুষ পৃথিবীতে আসার বহু আগে থেকেই জীবাণুর অস্বিস্ত ছিল। প্রাণীর মতো জীবাণুও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে নিজেদের বদলে নেয়। আর তাই ঘটেছে।

ডিএসএম সিনোকেম ফার্মাসিউটিক্যালস-এর বিজনেস ইউনিট ডিরেক্টর অনুরাগ রয় জানান, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ার রিজিস্ট্যান্স বা অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বর্তমান বিশ্বের গ্লোবাল হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক যদি জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে না পারে, তবে মানুষ রোগে আক্রান্ত হলে সুস্থ হতে পারবে না। সামান্য সংক্রমণ প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে।

যা মনে রাখতে হবে : বহু বছরের গবেষণায় অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয়েছে। আরো অনেক বছর লেগেছে এগুলোতে নিরাপদ করতে। এসব অ্যান্টিবায়োটিক অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করবে বলেই নিশ্চিত বিজ্ঞানীরা। এরা আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠার আগেই নতুন প্রকৃতির অ্যান্টিবায়োটিক প্রস্তুত করা প্রয়োজন। এই ওষুধ কাজ না করলে সাধারণ সংক্রমণ মারাত্মক হয়ে উঠবে। চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাবে, কিন্তু মৃত্যুঝুঁকি বাড়বে। শুধু আমেরিকাতেই সংক্রমণের কারণে ২৩ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছে অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতার কারণে।

প্রকোপ বৃদ্ধির কারণ কি? : অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, অ্যান্টিবায়োটিকের এলোমেলো ব্যবহারের কারণেই দেহে তা সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই সঠিক ওষুধ দেওয়া পরামর্শ দেন বিজ্ঞানীরা। যেমন- ঠাণ্ডা-সর্দি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকলেও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

ডিএসএম-এর মতে, বহু ওষুধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অসচেতনভাবে অ্যান্টিবায়োটিক এবং সংশ্লিষ্ট বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে দিচ্ছে। এগুলো পরিবেশে মিশে যাচ্ছে এবং এদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে শিখছে ব্যাকটেরিয়া। তা ছাড়া ওষুধ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যমূলক আচরণের কারণেও অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ঘটছে।

করণীয় : ম্যাক্স হেলথকেয়ার-এর ইন্টারনাল মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর ড. মনিকা মহাজান জানান, রোগীর রোগের ধরন ও ওজন অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা উচিত। এর কোর্স শেষ করা খুবই জরুরি। আরো যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে-

১. ভাইরাসঘটিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে ভাইরাসের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপ থাকলে চিকিৎসক তা দিতে পারেন।

২. কিছু অ্যান্টিবায়োটিক গর্ভাবস্থা, কিডনি ও এপিলেপসি রোগীদের জন্যে নিরপদ নয়। এগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

৩. বিশেষ অ্যান্টিবায়োটিক অ্যালার্জির কারণ হলে ওই ধরনের যেকোনো ওষুধ বাদ দিতে হবে।

৪. মূত্রথলীতে সংক্রমণের মতো কিছু সাধারণ ব্যাকটেরিয়ার প্রকোপে একাধিক ওষুধের প্রয়োগ ঘটে। তা ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত প্রয়োগও ঘটছে। এগুলো সামাল দিতে হবে।

৫. রোগ প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন আগে ব্যবহার করতে হবে।

৬. খাবার রান্নায় সাবধান হতে হবে। ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে যে তাপ প্রয়োজন, সে তাপে রান্না করতে হবে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া

Comments

comments