পেপটিক আলসরের কারণ ব্যথার ওষুধ
পেপটিক আলসরের অন্যতম প্রধান কারণ ব্যথার ওষুধ। কিভাবে ব্যথার ওষুধ পেপটিক আলসার করে তার সব কারণ জানা না গেলেও বেশ কিছু কারণ জানা গেছে। ব্যথার ওষুধ পাকস্থলী বা ডিত্তডেনামের মিউকোসাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে আলসার হয়। ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করলে প্রস্টাগ্লান্ডিন কমে যায়।
ব্যথার ওষুধ ও পেপটিক আলসার
প্রস্টাগ্লান্ডিন মিউকাস ও বাইকার্বনেট নি:সরণ করতে সাহায্য করে। ফলে মিউকোসা অক্ষত থাকে। কিন্তু ব্যথার ওষুধ যেহেতু প্রস্টাগ্লান্ডিন কমায় তার ফলে দেখা দেয় পেপটিক আলসার। গবেষণায় দেখা গেছে ১০০ জন রোগীকে উচ্চমাত্রার ব্যথার বডি দেয়া হয়েছিল। বিভিন্ন অসুখ যেমন রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস এবং অস্টিও আর্থ্রাইটিসের জন্য এ ব্যথার ওষুধ দেয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ২০ জনের পরবর্তীতে এন্ডোস্কোপি করে ক্ষত ধরা পড়েছিল। সুতরাং ব্যথার ওষুধ খেলেই সবার আলসার হবে এ ধারণা সঠিক নয়।
ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করলে যাদের মধ্যে আলসার হবার সম্ভাবনা বেশী তাদের মধ্যে আছে-
১. যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশী।
২. উচ্চ মাত্রায় যারা ব্যথার ওষুধ খান।
৩. ব্যথার ওষুধ ও স্টেরয়েড একত্রে খান।
৪. হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি ব্যকটেরিয়া দিয়ে যিনি আক্রান্ত।
৫. প্রতিদিন যদি ব্যথার ওষুধ খান।
৬. প্রতিদিন যদি স্বল্প মাত্রায় এসপিরিন গ্রহণ করেন। এমনকি ‘লো ডোজে’ অর্থাত্ ৭৫ মিলিগ্রাম করেও যারা গ্রহণ করেন তাদেরও আলসার হবার সম্ভাবনা বেশী।
৭. ব্যথার ওষুধের সাথে যদি ক্লপিডগ্রেল এবং ওয়ারফেরিন জাতীয় ওষুধ খান।
ব্যথার ওষুধ থেকে যেন আলসার না হয় তার জন্য স্বল্পমাত্রার ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। একটানা খাওয়া যাবেনা। মাঝেমাঝে খেতে হবে।
চিকিৎকরা বেশীর ভাগ সময় ব্যথার ওষুধের সঙ্গে এমন কিছু ওষুধ দেন যা ব্যথার ওষুধের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। যেমন-
১. প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (ওমিপ্রাজল, রেবিপ্রাজল, ইসোমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ল্যানসোপ্রাজল)।
২. প্রস্টাগ্লান্ডিন এনালগ (মিসোপ্রস্টোল)।
৩.এইচ-২ রিসেপ্টর ব্লকার (রেনিটিডিন, ফ্যামোটিডিন)।
যার পাকস্থলীতে হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি ব্যাকটেরিয়া আছে তার ব্যথার ওষুধ বেশী ক্ষতি করে। দীর্ঘমেয়াদে ব্যথার ওষুধ দিতে হলে অবশ্যই দেখতে হবে। ব্যথার ওষুধ হুটহাট করে খাওয়া ঠিক নয়। চিকিৎকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ওষুধ গ্রহণ করলে ভয়াবহ বিপদ হতে পারে।