৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, বৃহস্পতিবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

করোনার মূল আক্রমণ স্থল ফুসফুস, যত্ন নেবেন যেভাবে

ফুসফুস আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। শ্বাস-প্রশ্বাস, রক্তে অক্সিজেন প্রবেশ, কার্বন-ডাই অক্সাইড নির্গমনসহ দেহের অনেক জরুরি কাজ করে। ফুসফুস প্রাণীর চালিকাশক্তি।

সুস্থ ফুসফুসের কারণে মানুষ সুস্থভাবে জীবনযাপন করে থাকে। বর্তমান বিশ্বের এক বড় আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের মূল আক্রমণ স্থলও ফুসফুস। এই ভাইরাস নাক বা মুখের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে ফুসফুসের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় এবং ধীরে ধীরে এর কার্যক্ষমতা নষ্ট করে রোগীকে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ইত্যাদি জটিলতা, এমনকি মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে যেভাবে আপনার ফুসফুস যত্ন নেবেন, জেনে নেওয়া যাক।

১। খাবার প্রসঙ্গে আসা যাক। ফুসফুসের জন্য ভিটামিন-এ, সি, ই (বিটাক্যারোটিন ও ক্যারোটিনয়েডস), ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, সোডিয়াম, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকদের মতে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অর্থাৎ ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই ফুসফুসের জন্য মহৌষধ। আদা, রসুন, রঙিন শাকসবজি, ফল, তৈলাক্ত মাছ, টক ফল, সরিষা, আমলকী, আপেল, কমলা, ব্রোকলি, ডিম, ফুলকপি ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল আছে।

এসব অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে উজ্জীবিত করে, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস হ্রাস করে সেল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে এবং ফুসফুসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ফুসফুস তথা পুরো দেহের সুস্থতা নিশ্চিত করে। এসব খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রতি কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ৩০ থেকে ৪৫ মিলি লিটার পানি প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ কারও ওজন ৬০ কেজি হলে তার দৈনিক পানির চাহিদা হবে ন্যূনতম ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৭ লিটার। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তির পাশাপাশি দেহ টক্সিনমুক্ত থাকবে এবং কোষকে উজ্জীবিত রাখতে সাহায্য করবে।

২। ফুসফুসের যত্নের কথা বললে প্রথমেই বলতে হয় ধূমপান ত্যাগের কথা। ধূমপায়ীদের ফুসফুসের কোষ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দুর্বল হয়ে থাকে বলে তাদের শ্বাসতন্ত্রের রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও সবার থেকে বেশি থাকে। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাসের ‌‘অ্যাট রিস্ক’ বা ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, অর্থাৎ সাধারণ মানুষ অপেক্ষা ধূমপায়ীরা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, যার জন্য ধূমপান ত্যাগ আবশ্যক। এই আপৎকালীন সময়টা ধূমপান ছাড়ার অভ্যাসের জন্য আদর্শ সময়।

৩। ফুসফুস ভালো রাখতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা। ব্যায়াম করলে দেহে প্রচুর অক্সিজেন প্রবেশ করে এবং বারবার সম্প্রসারণ-প্রসারণের ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট জোরে হাঁটা, প্রাণায়াম, বড় করে শ্বাস নেওয়া এবং সময় নিয়ে শ্বাস ছাড়া, মেডিটেশন ইত্যাদি ব্রিদিং এক্সারসাইজ একই সঙ্গে ফুসফুস এবং সম্পূর্ণ দেহের জন্য ভালো। পাশাপাশি প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা নির্বিঘ্ন ঘুমও সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

মোট কথা ধূমপান না করা, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত বিশ্রামে ফুসফুস ও সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, যা শুধু করোনাই নয় যেকোনো ধরনের অসুস্থতা থেকেই আমাদের সুরক্ষা দেবে।

এ ছাড়া খাদ্যতালিকায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। এ দুটি উপাদান প্রাকৃতিকভাবেই ফুসফুস পরিষ্কার করে। তাই আনারসের জুস নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি।

ধূমপায়ীদের ফুসফুস পরিষ্কারে সাহায্য করে আদা। প্রতিদিন এক টুকরো আদা চিবুলে শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুস থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়।

ফুসফুসকে পরিষ্কার করতে গাজরের জুস পান বেশ সাহায্য করে। প্রতিদিন দুই বেলা এই জুস খেলে ফুসফুস পরিষ্কার থাকে।

প্রতিদিন লেবুর শরবত খেলে ফুসফুস শক্তিশালী হয় এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়।

প্রতিদিন গ্রিন টি পান ফুসফুসকে পরিষ্কার করে। এ ছাড়া গ্রিন টি অন্ত্রের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয়।

গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়। নিয়মিত যোগব্যায়াম করলে ফুসফুস শক্তিশালী হয় এবং প্রাকৃতিকভাবে ফুসফুস পরিষ্কার হয়।

Comments

comments