গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে বেঁচে থাকার উপায়
বাংলাদেশের গ্যাস্টিককে জাতিয় রোগ বলা হয়ে থাকে। ফলে গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগটির সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। ডাক্তারি ভাষায় এটাকে পেপটিক আলসার ডিজিজ কিংবা গ্যাস্ট্রিক আলসার ডিজিজ বলা হয়। তবে সাধারণ মানুষের কাছে এই রোগটি গ্যাস্ট্রিকের ব্যাথা, গ্যাসের ব্যাথা, পেটের আলসার, খাদ্যনালীর ঘা ইত্যাদি নামে পরিচিত। ডাক্তারের কাছে এসে রোগীরা সাধারণত এই নামেই সমস্যা উপস্থাপন করে। অগোছালো জীবন-যাপন, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, খাবার বাছাইয়ে অসতর্কতা ও অজ্ঞতা এ রোগের পিছনে বড় কারণ।
গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগের লক্ষণ
১। বুক ও পেটের উপরের অংশে ব্যাথা (পাকস্থলীর আলসারের ক্ষেত্রে খাবার খেলে এ ব্যাথা কমে যায়, কিন্তু অন্ত্রের আলসারের ক্ষেত্রে খাবার খেলে এ ব্যাথা সাধারণত বাড়ে)।
২। বুক জ্বালাপোড়া করা।
৩। টক অথবা তিক্ত স্বাদের ঢেকুর তোলা।
৪। অতিরিক্ত হেচকি ওঠা।
৫। মেরুদণ্ডে ব্যথা।
৬। পেটের উপরের অংশে গরম অনুভূত যাওয়া।
৭। ক্ষুধামন্দা।
৮। বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া।
প্রতিকারের উপায়
ডাক্তারি পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে সহজেই এ রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন প্রতিকারের কয়েকটি সহজ উপায় জেনে নেই-
১। ভাজাপোড়া ও মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা।
২। এলকোহল ও ক্যাফেইন যুক্ত খাবার যেমন: চা, কফি ইত্যাদি খাবার বর্জন করা।
৩। ভাতের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ (কাঁচা লবণ) না খাওয়া। কারণ খাবার লবণে যে অতিরিক্ত সোডিয়াম থাকে তা আলসার তৈরিতে সহায়তা করে।
৪। সামুদ্রিক তৈলাক্ত মাছ বেশি করে খাওয়া। কারণ এ ধরনের মাছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে যা প্রোস্টাগ্লাণ্ডিন তৈরিতে সাহায্য করে। এই প্রোস্টাগ্লাণ্ডিন আলসার শুকাতে সাহায্য করে।
৫। এসপিরিন ও ব্যাথানাশক ওষুধ এড়িয়ে চলা। এগুলো প্রোস্টাগ্লাণ্ডিনকে বাধা দেয়। ফলে নতুন করে আলসার তৈরি হয়।
৬। ভিটামিন-এ, সি ও ই যুক্ত ফল-মূল ও শাক-সবজি বেশি পরিমানে খাওয়া। এ সকল ভিটামিন আলসারের ঘা শুকাতে সাহায্য করে।
৭। বেশি পরিমাণ পানি পান করা। এতে অতিরিক্ত এসিড নিষ্ক্রিয় (নিউট্রালাইজ) হয়ে যাওয়ায় আলসারের ঝুঁকি কমে।