নারীর বাড়তি মেদ এবং ছয় হরমোন
আজ ৬টি হরমোন সম্পর্কে আপনাদের জানানো হবে যা নিতম্ব, কোমর, পেট, বাহু এবং আরো অন্যান্য জায়গায় বাড়তি মেদ সৃষ্টির জন্য এবং ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় জানা গেছে যে এগুলো প্রি-মিন্সট্রুয়াল সিন্ড্রোম(PMS), গর্ভাবস্থা, মেনোপোজ বা প্রতিদিনের মানসিক চাপের সঙ্গে জড়িত।
গবেষণায় আরো দেখানো হয়েছে যে খাবার ইচ্ছা, ওজন কমা, বিপাক ক্রিয়া এবং নারী হরমোন একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই নারীদের জৈবিক চক্রে এবং দৈনন্দিন জীবনে হরমোনের একটি বড় প্রভাব রয়েছে।
চলুন তাহলে জেনে নিই কোন কোন হরমোনের প্রভাবে নারীদের ওজন বৃদ্ধি হয়-
কর্টিসল হরমোন: এই ধরনের হরমোনকে স্ট্রেস হরমোনও বলা হয়ে থাকে। যখন নারীরা অনেক বেশি পরিমান মানসিক চাপের মাঝে থাকে কর্টিসল হরমোন ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয় যার ফলে খাবার গ্রহনের পরিমান বেড়ে যায় ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই যখনই মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাবে খাবার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে চেষ্টা করুন অন্যভাবে সেটা সামাল দিতে। কিছুক্ষন হাঁটুন, সম্ভব হলে খোলা বাতাসে দাঁড়ান এবং নিজেকে ঠাণ্ডা করুন।
টেস্টোস্টেরন হরমোন: অনেক নারীরাই পলিসিস্টিক অভারিয়ান সিন্ড্রোমে (PCOS) ভুগে থাকেন। এই রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় অত্যাধিক ওজন বৃদ্ধি, মুখে অবাঞ্ছিত চুলের বিস্তার এবং অত্যাধিকভাবে পেশী জমাট বেধে থাকে। এইসব হয়ে থাকে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারনে। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবন যাপনের মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব।
ইস্ট্রোজেন হরমোন: এটিই হচ্ছে অনেক হরমোনের মাঝে একটি যা নারীদের ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। নারীদের মেনোপোজের সময়কালে ইস্ট্রোজেন হরমোনের মাত্রা কমে যায় এর ফলে তাদের ওজন বৃদ্ধি পায় বিশেষ করে পেটের চারপাশের মেদ বৃদ্ধি পায়।
ইন্সুলিন হরমোন: নারী দেহে উচ্চ মাত্রার ইন্সুলিন হরমোন তাদের ওজন বৃদ্ধি অন্যতম মাধ্যম। কারণ ইন্সুলিন দেহের শর্করা এবং ফ্যাট নিয়ন্ত্রনের জন্য দায়ী।
প্রজেস্টেরন হরমোন: আরো একটি হরমোন যা নারী দেহর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে তা হচ্ছে প্রজেস্টেরন হরমোন। এই হরমোনটিও যখন নারীরা মেনোপোজ পর্যায়ে যান তখন এর মাত্রা কমতে শুরু করে। যার ফলে দেহের পানি ধরে রাখার প্রবণতা বাড়তে থাকে এবং দেহের ওজনও বৃদ্ধি পায়।
থাইরয়েড হরমোন: যদি কোনো নারী হাইপো থাইরয়েডিজমে ভোগেন তবে তার ফলাফল স্বরূপ দেহের ওজন বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে ক্লান্ত অনুভূত হবে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দিতে পারে। তবে এই সমস্যায় মোকাবেলায় চিকিৎসা নিলে অনেকটা ভালো থাকা সম্ভব।
লেখক: জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ; এক্স ডায়েটিশিয়ান,পারসোনা হেল্থ; খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান(স্নাতকোত্তর)(এমপিএইচ); মেলাক্কা সিটি, মালয়েশিয়া।