৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

কোলেস্টেরল যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে

রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগ, ব্রেন স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিওরের ঝুঁকিসহ নানা সমস্যা এড়ানো যায়। তবে প্রতিরোধ সব সময়ই প্রতিকারের চেয়ে ভালো। লিখেছেন ইউনাইটেড হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. ফাতেমা বেগম

কোলেস্টেরল রক্তে মিশে থাকে এবং রক্তের সঙ্গে রক্তনালি দিয়ে সারা শরীরে চলাচল করে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ রক্ত থেকে এই কোলেস্টেরল সংগ্রহ করে হরমোন ও প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করে। সুতরাং কোলেস্টেরল শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ, যা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত থাকা প্রয়োজন। তবে পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত হলে তা রক্তনালিতে জমে যায়। তখন রক্তনালি সরু হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।

বিশেষ করে হার্টের রক্তনালি জমে গেলে বুকে ব্যথা বা হার্ট অ্যাটাক, মস্তিষ্কের রক্তনালিতে জমলে স্ট্রোক, কিডনির রক্তনালিতে জমলে কিডনি ফেইলিওর—এ রকম অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রকমফের
এলডিএল, এইচডিএল, ট্রাইগ্লিসারাইড—এগুলো হলো কোলেস্টেরলের শ্রেণিবিভাগ। এলডিএল হলো শরীরের জন্য সবচেয়ে খারাপ কোলেস্টেরল, যা রক্তনালিতে জমে বেশি। এইচডিএল শরীরের জন্য ভালো কোলেস্টেরল, যা রক্তনালিতে চর্বি জমতে বাধা দেয়, আর ট্রাইগ্লিসারাইড রক্তে বেশি থাকলে অগ্ন্যাশয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে, আবার হার্টেও সমস্যা তৈরি করতে পারে। রক্তে বেশি মাত্রার কোলেস্টেরলের কারণ বংশগত হয়, আবার আয়েশী জীবনযাপন পদ্ধতিকেও এর জন্য দায়ী করা হয়।

নিরাপদ মাত্রা
সর্বমোট কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১৭০ মিলিগ্রামের নিচে, এলডিএল কোলেস্টেরল ডেসিলিটারে ১০০ মিলিগ্রামের নিচে, আর ট্রাইগ্লিসারাইড ডেসিলিটারে ১৫০ মিলিগ্রামের নিচে থাকা ভালো। আবার ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএলের মাত্রা ডেসিলিটারে ৪০ মিলিগ্রামের ওপর রাখা ভালো।

নিয়ন্ত্রণের উপায়
দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তন ও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন :  এ জন্য খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফলের পরিমাণ বাড়াতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া, বিশেষ করে খোসাসহ সবজি খাওয়া ভালো।

❏ খাদ্যতালিকা থেকে প্রাণিজ চর্বি যেমন—খাসির মাংস, গরুর মাংস, মুরগির চামড়া, কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, ডিমের কুসুম, চিংড়ি মাছ ইত্যাদি বাদ দিতে হবে।

❏ রান্নায় যথাসম্ভব কম তেল ব্যবহার করতে হবে। তেলে ভাজা খাবার কম খেতে হবে। ভাপে সিদ্ধ, গ্রিলড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো।

❏ ঘি, মাখন, পনির, মেয়নেজ, ড্রেসিং খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে।

❏ রিফাইন্ড খাবার বাদ দিয়ে ‘র’ খাবার খেতে হবে (যেমন—জুসের বদলে ফল, ভুসিসহ লাল আটা ইত্যাদি)।

❏ নিয়মিত কায়িক বা শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।

❏ প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন দ্রুত হাঁটতে হবে।

❏ বাসাবাড়ির টুকটাক কাজ নিজে করার অভ্যাস করতে হবে।

❏ কাছাকাছি জায়গায় রিকশা না নিয়ে হেঁটে যাওয়া, লিফটে না গিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটার অভ্যাস করা যেতে পারে।

❏ ধূমপান বা তামাকের ব্যবহার ছেড়ে দিতে হবে।

❏ ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ওষুধের মাধ্যমে : জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তনের দু-তিন মাস পরও যদি রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি জীবনযাত্রার অভ্যাসগুলোও মানতে হবে। মনে রাখতে হবে, যাদের পারিবারিকভাবে রক্তে অধিক কোলেস্টেরলের প্রবণতা আছে, তাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা অন্যদের চেয়ে অনেক কঠিন। তাই তাদের চেষ্টা করতে হবে অনেক বেশি।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে খাবার
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খাবারদাবারে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। এ জন্য কিছু করণীয় ও বর্জনীয় হলো—

বর্জন করতে হবে
আইসক্রিম, পোলাও, বিরিয়ানি, ননিযুক্ত দুধ, মাছের ডিম, ডিমের কুসুম, চর্বিজাতীয় খাবার, পনির, ঘি, মাখন, রেডমিট  (গরু ও খাসির মাংস), চিংড়ি মাছ, পরোটা, লুচি, চিপস, চকোলেট, মেয়নেজ, কেক, পেস্ট্রি, সস, জ্যাম, জেলি, কলিজা, সফট ড্রিংকস বর্জনসহ মদ্যপান, ধূমপান পরিহার করতে হবে।

গ্রহণ করতে হবে
শষ্য : ওটস, বার্লি, ভুট্টা, লাল আটার রুটি।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড জাতীয় খাবার : যেমন—ক্যানোলা, সানফ্লাওয়ার, জলপাইয়ের তেল, অ্যাভোকাডো ইত্যাদি।

সাইট্রাস বা ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় ফল : আপেল, কমলালেবু, বাতাবিলেবি, কাগজিলেবু, জাম্বুরা, স্ট্রবেরি, ক্রানবেরি, ব্ল্যাকবেরি, আঙুর, নাশপাতি, জলপাই, আমলকী।

বিটা ক্যারোটিনযুক্ত খাবার : গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেমন— বাঁধাকপি, ব্রুকোলি ইত্যাদি এবং গাঢ় হলুদ সবজি ও ফল, যেমন কুমড়া, মিষ্টি আলু, গাজর, আম, কাঁঠাল ও হলুদ পিচ ফল।

বীজজাতীয় খাবার : শিমের বিচি, মটরশুঁটি, ছোলা।

বাদাম : বিশেষ করে কাঠবাদাম, কাজুবাদাম ও ওয়ালনাট।

এ ছাড়া খেতে হবে সয়াবিন ও সয়াদুধ, সামুদ্রিক মাছ, রসুন, আপেল সাইডার ভিনেগার, গ্রিন টি, ডার্ক চকোলেট, ফ্যাটফ্রি দুধ, টকদই ইত্যাদি।

Comments

comments