অতিরিক্ত ঘাম যেসব রোগের লক্ষণ
শরীর ঘর্মাক্ত হওয়া স্বাভাবিক দেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কারন এতে দেহের দূষিত বা অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত ঘামা আবার ভালো নয়। এমন অনেক মানুষ আছেন যারা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি ঘামেন।
যে পরিবেশ সবাই দিব্যি স্বস্তিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেখানেই দুই-একজনকে একটু পর পর ঘাম মুছতে হচ্ছে। দ্বিতীয় দলের মানুষগুলো আসলে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা অতিরিক্ত ঘামেন তাদের শরীরের বিশেষ অবস্থার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে এর মাধ্যমে। তা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি মারাত্মক হতে পারে।
সাধারণত চিকিৎসকরা থাইরয়েডে কিছু হলো কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবেন। এছাড়াও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যারা বেশি ঘামছেন তারা নিচের শঙ্কাপূর্ণ অবস্থা থেকে দূরে নন হয়তো। এই অবস্থা আরো কী কী অবস্থা নির্দেশ করতে পারে তার সম্পর্কে ধারণা নিন।
১. ডায়াবেটিস কিংবা লো ব্লাড সুগার
টাইপ ১ এবং ২ উভয় ধরনের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে ঘামের মাধ্যমে। আবার গর্ভাবস্থা এবং অন্য বিশেষ অবস্থার কারণে ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, যাকে বলে গ্যাস্টেশনাল ডায়াবেটিস। ইনসুলিন উৎপাদনে সমস্যা এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ঝামেলা হলেও এমনটা দেখা যায়। আবার অনেকের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়েও অনেক কম থাকে। এতেও দেহে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ঘামা রক্তে নিম্নমাত্রার গ্লুকোজের লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে।
২. হার্ট অ্যাটাক
যদি কেউ হঠাৎ করেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামতে থাকেন তো তার কার্ডিয়াক সমস্যার কথা বিবেচনায় আনতে হবে। হঠাৎ করে অস্বাভাবিক ঘাম হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পেতে পারে। কাজেই এ অবস্থাকে অবহেলা না করে জরুরিভিত্তিতে বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হতে হবে। বিশেষ করে বয়স ৪৫ এর বেশি হলে কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ঘাম হার্ট অ্যাটাকের সমূহ সম্ভাবনা প্রকাশ করে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপানের অভ্যাস কিংবা পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে তো কথাই নেই। কোনো শারীরিক অসুবিধাতে সবাই ঘামতে পারেন। কিন্তু তা স্বাভাবিক হতে হবে। নইলে চিন্তার বিষয়।
৩. সংক্রমণ
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ সবসময় প্রাণঘাতী হয় না। হলেও অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের নিরাময় করে। সংক্রমণের ধরন অনুযায়ী কিছু মানুষ আবার জ্বর, শীত লাগা, অতিরিক্ত ঘামাম এবং আরো অনেক কিছুতে আক্রান্ত হতে পারেন। মারাত্মক সংক্রমণে সেপসিস হতে পারে। সময়মতো শুশ্রূষা না হলে তা সেপটিক শকে চলে যেতে পারে। কাজেই বেশি ঘামলে সংক্রমণের চিন্তা মাথায় রেখে চিকিৎসকের কাছে যান।