রোগ প্রতিরোধে বসন্তসেনারা
গরম এখনও পুরোপুরি এসে পড়েনি। বসন্ত যাই-যাই করছে। এ সময়ে চিকেন পক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো বসন্তের চেনা অসুখ এড়াতে আগে থেকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। ঠান্ডা লাগলেও অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এখন। সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বরও ভয়ের আকার নিচ্ছে করোনাভাইরাসের জেরে। পাশাপাশি চিকেন পক্সের প্রকোপও বাড়ে। তাই রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এমন খাবারদাবারই এ সময়ে দরকার।
মরসুম মেনে খান
যে সময়ের ফলন যেমন, সেই অনুযায়ী বাজারের ব্যাগ ভর্তি করুন মরসুমি ফল ও আনাজপাতি দিয়ে। অ্যান্টি-পক্স হিসেবে সবচেয়ে চেনা উপকরণ নিম এবং সজনে। ডক্টর অরুণাংশু তালুকদার বললেন, ‘‘বসন্তের বেশির ভাগ অসুখই যেহেতু ভাইরাসঘটিত, তাই ভিটামিন আর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবারদাবার প্রয়োজন এ সময়ে। যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় মরসুমি ফল আর সবুজ পাতাযুক্ত আনাজ থেকেই।’’
স্নানের জল থেকে খাবারের পাতে… নিম এখন অপরিহার্য। প্রত্যেক দিন খাবারের প্রথম পাতে নিমপাতা, উচ্ছে, করলা বা অন্য যে কোনও তেতো খাওয়া ভাল এ সময়ে। সজনে ফুলও অ্যান্টি-পক্স হিসেবে কার্যকর। সজনের ডাঁটা দিয়ে পাতলা নিমঝোল খেতে পারেন। নিম-বেগুন খেতেও সুস্বাদু। অ্যান্টিভাইরাস হিসেবে এই সব পদের জুড়ি নেই। পাঁচমিশেলি তরকারিতে ডাঁটা, ডাঁটা পোস্ত, ডাঁটা চচ্চড়ির মতো পদ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খান। খাদ্যতালিকায় রাখুন শিম, রাঙা আলু, বেরি জাতীয় ফল, দই ইত্যাদি। পর্যাপ্ত ভিটামিন সি পেতে রোজ একটি করে লেবু খান, যে কোনও ধরনের। সাইট্রিক অ্যাসিডযুক্ত যে কোনও ফলই উপকারী। সকালে কাঁচা হলুদ খাওয়ার সুঅভ্যেস গড়ে তুলতে পারেন। জল খেতে হবে বেশি করে।
অনাক্রম্যতা বাড়াতে
ডায়াটিশিয়ান সুবর্ণা রায়চৌধুরী জানালেন, চিকেন পক্স বা ফ্লুয়ের মতো ভাইরাল অসুখ প্রতিরোধে এমন খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। ‘‘রোজ একটি করে মরসুমি ফল খেতেই হবে। অনেকেরই জল খাওয়া কম হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ফলের রস রাখুন ডায়েটে।’’ তবে প্রিজ়ার্ভেটিভ দেওয়া ফ্রুট জুস একেবারেই নয়। টাটকা মরসুমি ফল আর তাজা আনাজপাতির কোনও জুড়ি নেই। চিকেন পক্সের সঙ্গে উচ্চ-প্রোটিনযুক্ত খাবারের কোনও বিরোধ নেই, মনে করিয়ে দিলেন সুবর্ণা। তাই মাছ-মাংস চলতে পারে সবই।
সিজ়ন চেঞ্জের সময়ে অ্যাক্টিভ হয়ে ওঠে যে কোনও ভাইরাস। তাই নিজের ইমিউনিটি সিস্টেম জোরালো করাই সুস্থ থাকার একমাত্র পন্থা।