১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সোমবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

লাল মাংস এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি

লাল মাংস পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। অনেক অসুস্থ মানুষ যাদের ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগ আছে তারাও লাল মাংসের চরম ভক্ত। গরু, খাসি এবং ভেড়া প্রভৃতি পশুর মাংসকে রেড মিট বা লাল মাংস বলে। এসব মাংস দেখতে টকটকে লাল। লাল মাংসে কিন্তু প্রচুর আয়রন, প্রোটিন, বিভিন্ন ভিটামিন ,জিংক ও খনিজ রয়েছে। এদের মধ্যে কিছু উপাদান শরীর গঠনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। লাল মাংসের খারাপ দিক হচ্ছে এগুলোতে সম্পৃক্ত চর্বির মাত্রা থাকে অনেক বেশি।

লাল মাংসের অতি উচ্চ মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড থাকে। এছাড়া থাকে এলডিএল। এলডিএল ক্ষতিকর কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত। এই কোলেস্টেরল ধমনির প্রাচীরকে পুরু করে তোলে। ফলে ব্রেনে রক্ত সঞ্চালন অনেক কমে যায়। এভাবে চলতে থাকলে একপর্যায়ে হয়ে যায় স্ট্রোক। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে লাল মাংস স্ট্রোকের ঝুঁকি ১১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।

মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্ত সরবরাহের ঘাটতি দেখা দিয়ে যদি আক্রান্ত অংশের কোষ নষ্ট হয় তবে তাকে স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোক বলে। বর্তমান বিশ্বে স্ট্রোক মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। মস্তিষ্কের অংশ বিশেষ নষ্ট হওয়ায় রোগীর দেহে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। সবার যে একইরকম উপসর্গ দেখা দেয় তা কিন্তু নয়। একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হয়। কারো ক্ষেত্রে শরীরের ডান বা বাম অংশ অবস হয়ে যায়। আবার কারো কারো কথা বলতে বা কথা বুঝতে সমস্যা হয়। অনেক সময় রোগী বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে। কথা জড়িয়ে আসা, একটা চোখে অথবা দুই চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, চলাফেরা করতে না পারা, চলাফেরায় ভারসাম্য নষ্ট হওয়া, বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রমে অসামঞ্জস্য দেখা দেওয়া, তীব্র মাথাব্যথা ইত্যাদিও কিন্তু স্ট্রোকের উপসর্গ ।

স্ট্রোকের কিছু কারণ আছে যা পরিবর্তন করা যায় । আবার কিছু কারণ আছে যা পরিবর্তন সম্ভব নয়। যেমন বয়স বাড়লে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে । কিন্তু বয়স কি কমানো সম্ভব? নিশ্চয় নয়। তাই যেসব ফ্যাক্টর পরিবর্তন করা যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সম্পৃক্ত চর্বি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় । রেড মিটে প্রচুর সম্পৃক্ত চর্বি থাকে। তাই রেড মিট বা লাল মাংস অবশ্যই কম খেতে হবে।

স্ট্রোক থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, ধূমপান বর্জন করতে হবে। কোলেস্টেরলমুক্ত খাবার, পরিমিত ব্যায়াম, হার্টের অসুখের চিকিৎসাসহ দুশ্চিন্তামুক্ত হয়ে জীবনযাপন করতে হবে। সবাই সচেতন হলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে আসবে। লাল মাংস কাটার সময় যতটা সম্ভব চর্বি কেটে বাদ দিতে হবে। রান্নার সময় মাংসের গায়ে লেগে থাকা জমাট সাদা চর্বি তুলে ফেলতে হবে। লাল মাংস চর্বি ছাড়িয়ে রান্না করলে এর সম্পৃক্ত চর্বির মাত্রা কমে যায়। লাল মাংস বা রেড মিট যে একেবারেই খাওয়া যাবেনা তা কিন্তু নয়। কম খেতে হবে এবং নিয়মিত খাওয়া যাবেনা । তাই বলা যায় একটু সচেতন হলেই স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমানো সম্ভব।

লেখক : চিকিৎসক, পাবনা মেডিকেল কলেজ।

সূত্র: অমৃতবাজার

Comments

comments