জটিল মাথাব্যথা, হতে পারে ফাইব্রোমায়ালজিয়া
কমবেশি মাথাব্যথায় ভোগেন নি, এমন মানুষ খুব কমই আছে। কারও ব্যথা নিয়মিত দীর্ঘস্থায়ী, কারোরটা আবার মাঝেমাঝে ব্যথা হয়। আমরা বেশিরভাগই মাথাব্যথাকে অতটা গুরুত্বের চোখে দেখি না। কিন্তু অনেক ব্যথাই যে কঠিন রোগের উপসর্গ নিয়ে আসতে পারে, সে বিষয়েও জানা থাকতে হবে।
আমাদের যাদের কঠিন এবং জটিল মাথাব্যথা হয়, তারা সাবধান। একটু খোঁজ খবরে নিয়ে জটিল মাথাব্যথার কারণ জেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে।
জটিল মাথাব্যথার পেছনে রয়েছে মাংসপেশীর অস্বাভাবিকতা। একে চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে ফাইব্রোমায়ালজিয়া। মেরুদণ্ড, কবজি, কনুই,ঘাড়-সহ শরীরে যেকোনো অংশ ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
ফাইব্রোমায়ালজিয়াকে টিউমারের একটি প্রাথমিক রূপ বলা যেতে পারে। শরীরের যে অংশে টিস্যু জমে ফাইব্রোমায়ালজিয়া সেখানে অস্ত্রোপচার করলে হয়তো রোগমুক্তি ঘটতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আবার একই জায়গায় বাসা বাঁধে ফাইব্রোমায়ালজিয়া।
আমরা ব্যস্ত জীবনে রোগব্যাধিকে অবহেলা করছি। সেই সুযোগে খুব অল্প সময়েই তীব্র মাথাব্যথা, অবসাদ, নিদ্রাহীনতা, ভুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ আমাদের গ্রাস করছে। তেমনভাবেই ফাইব্রোমায়ালজিয়ার হাত ধরেই এরা একে একে বাসা বাঁধছে মানবশরীরে।
ফাইব্রোমায়ালজিয়ার সূত্রে সবথেকে বেশি স্পর্শকাতর হলো মাথা। কোনো ধরনের মানসিক অবসাদ হলেই মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। গবেষণায় প্রমাণিত যে ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত কোনো অল্প শব্দও সহ্য করতে পারে না। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান ও পোহাং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে এমন অনেক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি জটিল মাথাব্যথায় ভোগেন। সামান্য শব্দ কানে গেলেই শুরু হয়ে যায় যন্ত্রণা। জটিল মাথা যন্ত্রণা রোগীকে আরও বেশি সংবেদনশীল করে তোলে। স্বাভাবিকভাবেই রোগী সবসময় তটস্থ হয়ে থাকে, ঘুম কমে যায়, ধীরে ধীরে অবসাদ ঘিরে ধরে।
রোগ নিয়ে বেশি ভাবনাচিন্তা করতে গিয়ে প্রাত্যহিক জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ রোগীর স্মৃতি থেকে উধাও হয়ে যায়। ফাইব্রোমায়ালজিয়ায় আক্রান্ত ১০জন মহিলার ওপর গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য এসেছে। এই মহিলাদের প্রত্যেকের মস্তিষ্কই সুস্থ মানুষের মস্তিষ্কের থেকে অনেকবেশি সংবেদনশীল। এই সংবেদনশীলতাই মাথা ব্যথাকে বাড়িয়ে দিয়ে জটিল রোগে পরিণত হয়েছে।
আর তাই কারও মধ্যে এই লক্ষণ দেখা দিলেই সাবধান। বসে না থেকে খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।