অনিয়মিত ঘুমে কিডনি ফেইলিওর
অনিয়মিত ঘুমের সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অবসাদ ও মাথাব্যথাসহ নানাবিধ স্বাস্থ্য সংকটের যোগসূত্রের বিষয়টি এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠিত। সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় এ তালিকা আরো একটু দীর্ঘ হলো। ওই গবেষণা বলছে, যারা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে (সিকেডি) ভুগছেন, অনিয়মিত ঘুমের ফলে তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়ে তা ক্রনিক রেনাল ডিজিজে পরিণত হতে পারে। অপরিমিত ঘুম এমনকি তাদেরকে কিডনি ফেইলিওরের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। খবর হেলথ নিউজ লাইন।
শিকাগোর ম্যাককরমিকে এএসএন কিডনি সপ্তাহ ২০১৬-এ উপস্থাপিত ওই গবেষণা জানাচ্ছে, অনিয়মিত ও অপরিমিত ঘুমের সঙ্গে সিকেডিতে আক্রান্ত রোগীদের কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার স্পষ্ট সংযোগ রয়েছে। এ গবেষণার আগে সিকেডিতে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ঘুম-সংক্রান্ত জটিলতার কথা জানা থাকলেও, এর পরিণতি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা ছিল না।
এ বিষয়ে গবেষণাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গবেষক শিকাগোর ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যানা সি. রিকার্ডো বলেন, ‘স্বল্প ও বিচ্ছিন্ন ঘুম গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা ক্রনিক কিডনি ডিজিজের ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।’
এ বিষয়ে গবেষণার জন্য ড. রিকার্ডো ও তার সহকর্মীরা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত ৪৩২ জন রোগীর ঘুমের ধরন নিয়ে পরীক্ষা করেন। তাদের সবার হাতে এক ধরনের মনিটর স্থাপন করা হয়। যার মাধ্যমে পাঁচ থেকে সাতদিন ধরে তাদের ঘুমের অভ্যাসের ওপর নজর রাখা হয়। এর পর গড়ে পাঁচ বছর ধরে তাদের স্বাস্থ্যাবস্থার ওপর নজর রাখেন তারা। এতে দেখা যায়, যারা এ সময়ের মধ্যে প্রতি রাতে গড়ে সাড়ে ৬ ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭০ জনের কিডনি ফেইলিওর হয়েছে। আর মারা গেছেন ৪৮ জন।
তারা আরো দেখতে পান, এর চেয়ে প্রতি ১ ঘণ্টার বাড়তি ঘুম কিডনি ফেইলিওরের সম্ভাবনা অন্তত ১৯ শতাংশ কমিয়ে দেয়।
গবেষণায় তারা আরো দেখতে পান, প্রতি ১ শতাংশ ঘুমে ব্যাঘাত বৃদ্ধির সঙ্গে কিডনি ফেইলিওরের সম্ভাবনা ৪ শতাংশ বেড়ে যায়। গবেষণাটি আরো জানাচ্ছে, যেসব রোগী দিনের বেলায় ঘুমঘুম বোধ করেন, তাদের মৃত্যুঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
ড. রিকার্ডো জানান, তাদের গবেষণা এটাই বলছে যে, কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতার জন্য নির্বিঘ্ন ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্তদের ঘুমের উন্নতির জন্য কী পদক্ষেপ নেয়া যায়, সে বিষয়ে এখনই চিন্তাভাবনা করা উচিত।