৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

অতিরিক্ত চিনি খেলে যে ৭টি মারাত্মক ক্ষতি হয়

চায়ের পেয়ালা থেকে সুস্বাদু নানা পদ, সব কিছুতেই চিনির অবাধ বিচরণ। কারণ চিনি কেবল স্বাদ বাড়ায় না, সেই সঙ্গে মুখ মিষ্টি করতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। কিন্তু এই খাবারটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। আর এই তথ্যটি যে একেবারে ঠিক, তা একাধিক গবেষণাতেও প্রমাণিত হয়ে গেছে। সম্প্রতি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে আমেরিকার পাশাপাশি প্রায় সমগ্র বিশ্বেই দৈনিক চিনি খাওয়ার প্রবণতা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। গড় হিসেবে প্রায় সিংহভাগ বিশ্ববাসী প্রতিদিন কম-বেশি প্রায় ২২ চামচ চিনি খেয়ে থাকেন, যা বিপদ সীমার থেকে অনেক ওপরে। প্রসঙ্গত, এত মাত্রায় চিনি খাওয়ার কারণে শরীরের মারাত্বক ক্ষতি হয়ে থাকে। আসুন কী সেই ক্ষতিগুলো তা জেনে নেওয়া যাক…

১. শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমে যায়
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে চিনি শরীরে প্রবেশ করে ফ্রুকটোজে রূপান্তরিত হয়ে যায়, যা লিভারে মেদ জমাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে রক্তেও ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ে। ফলে একটা সময়ে গিয়ে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে লিভারের কর্মক্ষমতাও কমতে শুরু করে। তাই অতি মাত্রায় চিনি মেশানো পানীয় খাওয়া চলবে না। সেই সঙ্গে রান্নাতেও চিনির পরিমাণ কমাতে হবে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

২. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়
প্লাস ওয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে চিনি খাওয়ার মাত্রা যত বাড়তে থাকে, তত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। কারণ চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর নিমেষে সুগার লেভেলকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আর এমমনটা চলতে থাকলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যে মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আর একবার যদি ডায়াবেটিস শরীরে এসে বাসা বাঁধে তাহলে একে একে প্রায় প্রতিটি ভাইটাল অর্গানই অকেজো হতে শুরু করে। তাই আপনিই সিদ্ধান্ত নিন, চিনি খেয়ে জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলতে চান, নাকি সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে চান।

৩. হার্টের মারাত্মক ক্ষতি হয়
একবার ভাবুন তো হার্টের ওপর কেউ জোরে জোরে হাতুড়ি পেটাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কেমন অবস্থা হবে হার্টের! হঠাৎ এমন প্রশ্ন করছি কেন তাই ভাবছেন তো? আসলে চিনি শরীরে প্রবেশ করার পর এইভাবেই হার্টের ক্ষতি করে থাকে। তাই তো রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদপিন্ডের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। যে কারণে বাড়ে নানাবিধ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। প্রসঙ্গত, আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে মাত্রাতিরিক্তি চিনি খাওয়ার কারণে কেউ যদি একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তাহলেও হার্টের কর্মক্ষমতা তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রোক এবং হার্ট ফেইলিওরের সম্ভাবনাও প্রায় ৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই ভুলেও দিনে ৬ চামচের বেশি চিনি খাবেন না যেন!

৪. ব্লাড প্রেসার বাড়তে থাকে
শুনতে অবাক লাগলেও একথা একেবারে ঠিক যে বেশি মাত্রায় চিনি খেলে বাস্তবিকই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। আসলে দেহের অন্দরে চিনির মাত্রা বাড়তে থাকলে ইনসুলিনের উৎপাদনও বেড়ে যায়, যে কারণে ধমনিতে এক ধরনের দেওয়াল তৈরি হতে শুরু করে। এই কারণেই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্ট্রোকের মতো ভয়ঙ্কর রোগ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৫. রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়
জার্নাল অব দা আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বিপদ সীমা ছাড়িয়ে যায়। শুধু তাই নয়, উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমতে শুরু করে। ফলে হার্টের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। এবার বুঝেছেন তো চিনি আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকারক!

৬. এনার্জি কমতে শুরু করে
একথা ঠিক যে চিনি বা ওই জাতীয় কোনও খাবার খেলে নিমেষে ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। কিন্তু একথাও ঠিক যে কিছু সময় পরে যখন চিনির রেশ কাটতে শুরু করে, তখন এত মাত্রায় এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয় যে শরীর একেবারেই চলতে চায় না। শুধু তাই নয়, চিনি খাওয়ার মাত্রা বাড়ালে মস্তিষ্কের অন্দরে সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যে কারণে ঘুম আসতে থাকে। ফলে কাজ করার ইচ্ছা একেবারে চলে যায়।

৭. মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে
প্রায় ৯০০০ মানুষের ওপর, পাবলিক হেলথ জার্নালের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি খাওয়া শুরু করলে একটা সময়ের পর ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু চিনি খাওয়ার সঙ্গে মানসিক অবসাদের সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়তে থাকলে মস্তিষ্কের অন্দরে ডোপামাইন নামক ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ ঘিরে ধরে।

Comments

comments