গর্ভধারণের আগে শারীরিক পরীক্ষা
মা হওয়া পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম সুখের মধ্যে একটি। শিশুর ছোট ছোট চোখ, হাত, পা, মুখ দেখা এক অসাধারণ অনুভূতি। অনেক দম্পতির সন্তান নিতে কোনো সমস্যা হয় না। আবার অনেকে আছেন, যারা বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় ভোগেন। এসব সমস্যা সাধারণত জীবনযাপনের ধরন, ওজনাধিক্য, জিনগত কারণ- এসবের জন্য হয়। তাই গর্ভধারণের আগে এসব জটিলতা এড়াতে কিছু পরীক্ষা প্রয়োজন।
বেশি থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণকে ‘হাইপার থাইরয়েডিজম’ বলা হয়। যা আগাম সন্তান জন্মদান এবং গর্ভপাত ঘটাতে পারে। আর যদি কম হরমোন নিঃসরণ হয় বা হাইপোথাইরয়েডিজম হয়, তাহলে নবজাতকের মস্তিস্কে সমস্যা হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, সন্তান ধারণের আগে অবশ্যই থাইরয়েড গ্রন্থির পরীক্ষা করাবেন।
গর্ভধারণের আগে সাধারণত ছয় ধরনের রক্তের পরীক্ষা করা জরুরি। এর মধ্যে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) পরীক্ষা করতে হবে। এই চেকআপের মাধ্যমে শরীরের হিমোগ্লোবিন, সাদা কণিকা (সেল) এবং প্লাটিলেট গণনা করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন রোগ যেমন : সিফিলিস, এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি- এগুলোর পরীক্ষা করতে হবে। পাশাপাশি রক্তশূন্যতা রয়েছে কি-না দেখতে হবে এবং সিস্টিক সিস্টিক ফাইব্রোসিসের পরীক্ষা করাতে হবে। এ ছাড়া রক্তে শর্করার মাত্রা ও প্রোটিনের পরিমাণ দেখতে হবে। পাশাপাশি ইউনারি ট্যাক্ট ইনফেকশন থাকলে অবশ্যই প্রস্রাব পরীক্ষা করাবেন। যদি রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা পাওয়া যায় তবে ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন। ইউনারি ট্যাক্ট ইনফেকশন দূর করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পানি পান করতে হবে এবং অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
স্মিয়ার টেস্টে যোনি, জরায়ুমুখ এবং পেলভিক এলাকার পরীক্ষা করা হয়। গর্ভধারণের আগে অবশ্যই এ পরীক্ষাগুলো করাবেন। এই পরীক্ষায় যোনি ও জরায়ুমুখের যে কোনো ধরনের সমস্যা ধরা পড়বে। সিমেন অ্যানালাইসিস বা ঊর্বরতা পরীক্ষা করা ছেলেদের জন্য খুবই জরুরি। সন্তান নেওয়ার আগে শুক্রাণু গণনা এবং শুক্রাণুর প্রকৃতি জানা প্রয়োজন। যেসব ছেলে ধূমপান, মদ্যপান করে এবং যাদের জিনগতভাবে এসব বিষয়ে সমস্যা রয়েছে তাদের এই পরীক্ষা অবশ্যই করতে হবে।