আজব মানবদেহ!
মানবজাতি সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করে কিন্তু নিজ শরীর সম্পর্কে কতোটুকু জানি? মানবদেহে এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো হয়তো একদমই অজানা। জেনে নিন মানবদেহ সম্পর্কিত চমকপ্রদ কিছু তথ্য-
১. জিহ্বা:
ডিজিটাল সিকিউরিটির জন্য আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার বিষয় সম্পর্কে সকলেরই ধারণা রয়েছে। কারণ প্রত্যেকের আঙ্গুলের ছাপ ভিন্ন। মানব শরীরের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ রয়েছে যেটি আঙ্গুলের ছাপের মতই ইউনিক। আর তা হলো জিহ্বা। প্রত্যেকের জিহ্বার ছাপও ভিন্ন। তাই সিকিউরিটির প্রয়োজনে আঙ্গুলের ছাপের পাশাপাশি জিহ্বার ছাপও ব্যবহার করা সম্ভব। ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার মূলত তিন প্রকার হয়ে থাকে ১. অপটিক্যাল স্ক্যানার ২. ক্যাপাসিটিভ স্ক্যানার ৩. আলট্রাসনিক স্ক্যানার। এর মধ্যে জিহ্বা স্ক্যানের জন্য ব্যবহার হতে পারে সব থেকে আধুনিক আলট্রাসনিক স্ক্যানার। জানলে আরো অবাক হবেন মানব দেহের সবচেয়ে শক্তিশালী পেশী হল জিহ্বা। এ জিহ্বার সাহায্যে কয়েক কেজি ভর তোলাও সক্ষম।
২. হাড়:
শিশুকালে সকলেরই হাত-পাসহ প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই ছোট থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরিক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেহের হাড়গুলোও নির্দিষ্ট সীমা পর্যপন্ত বাড়ে। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে শিশুকালের হাড়ের সংখ্যা আর প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় হাড়ের সংখ্যার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। শিশু অবস্থায় হাড়ের সংখ্যা থাকে ৩০০টি। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরের হাড়ের সংখ্যা যথাক্রমে বেড়ে দাড়ায় ২০৬ টি। এখন প্রশ্ন দাঁড়ায় এ হাড়গুলো কোথায় যায়? শিশুদের দেহের কিছু হাড় একটি বিশেষ উপাদান দিয়ে তৈরি যাকে কার্টিলেজ বলে। এ হাড়গুলো খুবই নমনীয় ও স্পর্ষকাতর হয়ে থাকে। শারীরিক বৃদ্ধির মাধ্যমে এ ছোট ছোট হাড়গুলো জোড়া লেগে পূর্ণ হাড়ে পরিণত হয়।
৩. মুখের ব্যাক্টেরিয়া:
নিজেকে ব্যাক্টেরিয়া মুক্ত করতে কতো কিছুই না করি। কিন্তু সমগ্র পৃথিবীতে যত মানুষ রয়েছে তার থেকে বেশি পরিমাণে ব্যাক্টেরিয়া রয়েছে মানুষের মুখে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গড়ে ৬ বিলিয়ন ব্যাক্টেরিয়া বসবাস করে মুখের অভ্রন্তরে। ব্যাকটেরিয়া মুখের অভ্যন্তরে নানা প্রকার রোগসহ বিভিন্ন সংক্রমণ সৃষ্টি করে থাকে। ক্লসট্রিডিয়াম বটুলিনাম নামক ব্যাকটেরিয়া মুখে বিশেষ পদ্ধতিতে টক্সিন ও দূর্গন্ধ সৃষ্টি করে। তাই মুখকে দূর্গন্ধমুক্ত রাখতে প্রতিদিন দুই বেলা ব্রাশ করা উচিৎ।
৪. ব্যাক ডিম্পেল:
অনেকের মুখেই ডিম্পল বা টোল পড়ে। কিন্তু অনেকের মেরুদন্ডের নিচে ব্যাক ডিম্পেল থাকে। আসুন জেনে নেই এই ব্যাক ডিম্পেলের কাজ। চিকিৎসকদের মতে, যাদের এই ব্যাক ডিম্পল থাকে তাদের দাম্পত্য জীবন অনেক ভাল হয়। কারণ যাদের শরীরে ব্যাক ডিম্পেল থাকে তাদের লোয়ার ব্যাকে রক্ত সঞ্চলন বেড়ে যায় যার ফলে এর আশেপাশের অঞ্চলের স্নায়ুগুলো অনেক বেশী সক্রিয় হয়ে যায়। পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের ব্যাক ডিম্পল হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশী থাকে।
৫. চোখের জ্যোতি:
ক্যামেরার মেগাপিক্সেল সর্ম্পকে সকলেরই কমবেশি ধারণা রয়েছে। যত বেশি মেগাপিক্সেল তত বেশি নিখুঁত ছবি পাওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু চোখের মেগাপিক্সেল কত? অধ্যাপক ড. রজার ক্লার্ক যিনি পেশাদার ফটোগ্রাফার এবং নাসার মহাকাশ ফটোগ্রাফি প্রকল্পগুলোতে জড়িত। তার মতে, মানুষের চোখের রেজোলিউশন প্রায় ৫৭৬ মেগাপিক্সেল এবং ১২০ ডিগ্রী কোণে আমাদের আশেপাশের দৃশ্য দেখতে সক্ষম। এমনকি আধুনিক সময়ের বিভিন্ন ক্যামেরা ও সেন্সর মানব চোখ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই তৈরি হচ্ছে।