হাইপারটেনশন ডেকে আনে মৃত্যু, মুক্তির কয়েকটি উপায়
চিন্তা তো সবার বন্ধু। তাই চিন্তাকে বাদ দিয়ে জীবনের অর্থ গোল। সেই কারণেই বিশ্বজুড়ে দূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে টেনশন। দূষণ তো ক্ষতির মাত্রা বাড়াচ্ছে বই কমাচ্ছে না। চিন্তাও ঠিক তাই। মানবমনে বেশ শক্তপোক্ত জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু কিছু নিয়ম মেনে চলতে পারলেই এড়ানো যেতে পারে টেনশন। তার আগে জানুন আপনি হাইপারটেনশনের সমস্যায় ভুগলে উপরি পাওনা হিসেবে কী কী রোগে আক্রান্ত হতে পারেন:
বিঘ্নিত ঘুম
ভেতরে টেনশন থাকলে ঘুম ঠিক ভাবে হয় না। অর্থাৎ পর্যাপ্ত ঘুম ব্যাহত হয়। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মনে হয় শ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে বা অনেক সময় বেশি মাত্রায় শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা হয়। যার ফলে ঘুম ঠিকমতো হয় না, সারাদিন চোখ জ্বালা করা, ঘুম পাওয়া, খিটখিটে মেজাজ থেকেই যায়।
হার্টের সমস্যা বাড়ে
হাইপারটেনশনের সঙ্গে হার্টের সমস্যার যোগ নিবিড়। ঘুম কম হওয়া থেকে যাবতীয় সমস্যার সৃষ্টি। কোলেস্টেরল বাড়ে, ধমনীর আশেপাশে ব্লকেজ তৈরি হওয়ায় রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। যার থেকে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে।
মৃত্যু ডেকে আনে
বর্তমানে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হাইপারটেনশন। কাজের চাপ, পারিবারিক নানা সমস্যা, একাকিত্ব থেকেই হাইপারটেনশন শুরু হয়। দিনের পর দিন অনিদ্রা, সুগার, হাই ব্লাড প্রেসার সহজেই মৃত্যুকে ডেকে আনে। ৫০ থেকে ৫৩ বছর বয়সের মধ্যে এই সমস্যা খুব প্রকট।
হাইপারটেনশন এড়াবেন কীভাবে
নিজেকে ব্যস্ত রাখুন
নানা কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। অফিসের কাজের বাইরেও বই পড়া, গান শোনা, লেখালেখি, বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি চালিয়ে যান। নানা কাজের মধ্যে থাকলে দেখবেন বাজে চিন্তা খানিক কম হয়। আসলে জীবনে ভালো খারাপ দুই থাকে। কেন হল না অথবা কবে হবে এই নিয়ে অযথা চিন্তা না করাই ভালো। সময়ে সবই হয়।
পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটান
বাড়িতে একা থাকেন বা একা না থাকলেও খুব বেশি মিশতে ভালোবাসেন না। কথা বলার লোক নেই। এরকম পরিস্থিতিতে একাকিত্ব আসবে স্বাভাবিক। সেখান থেকে নানা সমস্যা। তাই পোষ্য ভালোবাসলে তাদের বাড়িতে রাখুন। তাদের সঙ্গে খানিক সময় কাটান। দেখবেন ভালো আছেন। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
পর্যাপ্ত ঘুম
ঘুম ভালো হওয়া জরুরি। তাই অভ্যাস থাকলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই পড়ুন, পছন্দের গান শুনুন, খুব ইচ্ছে হলে পছন্দের সিনেমা দেখুন কিন্তু স্মোকিং, মদ্যপান বা টিভি এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
অযথা চিন্তা করবেন না
যেটুকু বিষয় নিয়ে চিন্তা প্রয়োজন সেটুকুই করুন। তার বাইরে অযথা চিন্তা করবেন না। খুব বেশি চিন্তা করলে শরীর খারাপ হবে, এর বেশি কিছুই হবে না।
সুষম খাবার খান
সুষম এবং পর্যাপ্ত খাবার খান। নিয়ম করে প্রতিদিন ২ কিলোমিটার হাঁটুন। প্রচুর পানি পান করুন। তাহলে সুগার, প্রেশার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। টেনশন কম হবে। আর বাজে চিন্তা একেবারেই থাকবে না।
গবেষণা বলছে
যাঁরা গরমের দেশে থাকেন তাঁদের রক্তচাপ আবহাওয়ার সঙ্গে ওঠা নামা করে। ফলে শারীরিক সমস্যা বাড়ে। হাইপারটেনশনের প্রবণতা থেকে যায়। তুলনায় শীতের দেশে এই সমস্যা অনেক কম। ফলে সেদেশে উচ্চরক্তচাপে ভোগা লোকজনের সংখ্যাও কম। গরমের দেশের বাসিন্দা হলে এক্ষেত্রে আপনার হাতে কিছুই নেই। সাবধানবানী অবলম্বন করে চলতে পারেন কেবল।
হাইপারটেনশন থেকে আরও যা হয়
হার্টের সমস্যা তো ছিলই। বর্তমান গবেষণায় উঠে এসেছে হাইপারটেনশন থেকে কিডনিরও গুরুতর সমস্যা হয়। তাই কোনও রকম বেগতিক বুঝলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।