যেসব কারণে প্রসবকালে মায়ের মৃত্যু হতে পারে
অনেক সময় চোখের পলকে সুখ বদলে যায় দুঃখে। পালটে যায় জীবনের ধারা। যেখানে খুশির অবস্থান হওয়ার কথা ছিল সে জায়গা নিয়ে ফেলে দুঃখ। প্রসবের সময় যেখানে সমগ্র পরিবার নতুন সদস্য কে অভিনন্দন জানাবে বলে অপেক্ষা করে থাকে, সেখানে যদি কোনও দুঃসংবাদ আসে তাহলে সেই পরিবারের উপর দিয়ে কী যেতে পারে টা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তাই তো চিকিত্সকেরা বলে থাকেন প্রাসবকালীন সময়ে শুধু বাচ্চার নয়, মায়েরও সমানভাবে খেয়াল রাখাটা জরুরি। কারণ দেখা গেছে জন্মের সময় যেহারে বাচ্চার মৃত্যু হয়, তার থেকে অনেক বেশি হয় মায়ের মৃত্যু। বাচ্চার জন্ম দেওয়ার পরে যদি মায়ের মৃত্যু ঘটে তাহলে তা কতটা বেদনা দায়ক একটু ভাবুন তো। সেই নবজাতক কোনও দিন তার মা কে ছুঁতে পারবে না। মায়ের অস্তিত্ব বলে একটা ছবি ছাড়া কিছুই থাকবে না তার কাছে।
প্রসবকালে মায়ের জীবনাবসান হলে তাকে চিকিত্সা পরিভাষায় মেটারনাল ডেথ বলা হয়ে থাকে। অনেক কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে তো মায়ের সঙ্গে সঙ্গে নবজাতকের প্রাণটাও চলে যায়, আর এর জন্য মা না চিকিত্সক, কাকে দায়ী করা যায় তা বোঝার উপায় থাকে না। তাহলে এখন প্রশ্ন কী কী কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
মাত্রাতিরিক্ত রক্তপাত: প্রসবের সময় অতিরিক্ত মাত্রায় রক্ত ক্ষরণের কারণেও মায়ের মৃত্যু ঘটতে পারে। এই ধরনের রক্তপাতকে চিকিত্সা পরিভাষায় অবস্ট্রেট্রিকাল হেমারেজ বলা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে চিকিত্সক যদি রক্তক্ষরণ আটকাতে না পারেন বা প্রয়োজনীয় চিকিত্সা শুরু করতে ব্যর্থ হন, তাহলে একাধিক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ হয়ে গিয়ে মায়ের মৃত্যু ঘটে।
উচ্চ রক্তচাপ: মেটারনাল ডেথের কারণ হিসাবে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ। প্রসবের আগে থেকে মায়ের রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত থাকলে ডেলিভারির সময় তা আরও বেড়ে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই যারা রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তারা মা হওয়ার আগে দয়া করে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে ভুলবেন না।
ইউটেরাইন রেপচার: প্রসবকালীন সময়ে মায়ের মারা যাওয়ার পিছনে আরেকটি যে কারণ দায়ী থাকে, তা হল ইউটেরাইন রেপচার। ডেলিভারির সময় মায়ের ইউটেরাসের উপর মারাত্মক চাপ পড়ে। এই চাপকে যদি চিকিত্সক সামলাতে না পারেন তাহলে বাচ্চা বেরনোর সময় ইউটেরাসে মারাত্মক আঘাত লাগতে পারে। আর এমনটা হলে রক্তক্ষরণ এত বেড়ে যায় যে মায়ের মৃত্যু ঘটে। এই বিষয়গুলি মোটেও সুখের নয়। তবু লেখা এই কারণে যাতে কোনও বাচ্চা মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত না হয়। তাই আপনিও যদি মা হতে চলেছেন তাহলে এই বিষয়গুলির উপর নজর রাখতে ভুলবেন না।