হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে করণীয়
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জীবনের অনেক কিছুই বদলে যায়। আমরা হয়তো জীবনেরনানা শিক্ষা থেকে আরো নিয়মিত হয়ে উঠতে পারি। ছোট ছোট বিষয়গুলো উপভোগ করাটাশিখতে পারি। ভালো ভালো জিনিসের পাশাপাশি জীবন আমাদের জন্য কিছু নেতিবাচক জিনিসও বয়ে আনে। যেমন বয়সসংশ্লিষ্ট রোগ।
সময়ের সঙ্গে আমাদের জীবনধারায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। সেই সাথে বদলে গেছে পরিচিত রোগ-ব্যাধিগুলোও। হৃদরোগ, স্ট্রোক এসব আর এখন শুধু বার্ধক্যের অসুখ নয়। তরুণ বয়সের অনেকেই আজকাল এধরণের রোগের শিকার হচ্ছেন, আর এর পেছনে দায়ী মূলত অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। তাই এখনই সময় সচেতন ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মত রোগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে জীবনযাপনের জন্য করণীয়:
রোজ একটু ব্যায়াম করুন, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে যাবে অনেকখানি। দ্রুতপায়ে হাঁটা বা সাঁতার হতে পারে ভালো ব্যায়াম। কাজের চাপে সময় বের করতে পারছেন না? বেশ তো, ১৫ মিনিট করেই না হয় হাঁটুন- সকাল, দুপুর ও রাতে। এতেই আপনার প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শরীরচর্চা হয়ে যাবে।
আপনার ওজন কি অনেক বেশী? অনেক চেষ্টার পরও স্লিম হতে না পেরে হতাশ হয়ে চেষ্টাই ছেড়ে দিয়েছেন? ভুল করেছেন। হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে একেবারে রোগা পাতলা হয়ে যেতে হবে এমন কোনো কথা নয়। শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ ওজন কমালেই রক্তের কোলস্টেরল, শর্করা ও প্রেশার স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরতে শুরু করবে।
হাই প্রেশার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ওষুধ নিজে থেকে বাদ দেবেন না। আপনার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ যেভাবে বলেছেন সেভাবেই খেয়ে যান, এতে হঠাৎ কোন দুর্ঘটনার আশংকা কম থাকবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। পরিমিত পরিমাণে খাবেন এবং পেট ভরে যাওয়ার আগেই টেবিল থেকে উঠে পড়বেন।
ধূমপান পরিহার করা। এটি হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। ধূমপান ছাড়ার জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। শুধু যে নিজে ধূমপান করবেন না তাই নয়, যেখানে ধূমপান হচ্ছে এমন জায়গাও এড়িয়ে চলুন।
দুশ্চিন্তা থেকে হৃদরোগ হতে পারে, এমনকি হঠাৎ তীব্র মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকও ঘটাতে পারে। তাই হতাশা কমাতে সচেষ্ট হোন। নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, ধর্মীয় কাজকর্ম, হাসিখুশি থাকা এগুলো হতাশা দূর করতে সাহায্য করে।
কখনো শ্বাসকষ্ট, নাড়ির গতিতে অস্বাভাবিকতা বা অতিরিক্ত অবসন্নতা বোধ করলে উপেক্ষা করবেন না, কিংবা নিজে নিজে সেরে যাবার জন্য বসে থাকবেন না। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন কিন্তু খুব কঠিন কিছু না। প্রতিদিনের অভ্যাসে কিছু ছোট ছোট পরিবর্তনই হয়তো আপনার জীবনধারায় বিরাট ইতিবাচক প্রভাব এনে দেবে, আর বাঁচিয়ে দেবে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মত বিপর্যয় থেকে।