৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার

Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Search in posts
Search in pages
Filter by Categories
Uncategorized
ইসলামী জীবন
ঔষধ ও চিকিৎসা
খাদ্য ও পুষ্টি
জানুন
নারীর স্বাস্থ্য
পুরুষের স্বাস্থ্য
ভিডিও
ভেসজ
যৌন স্বাস্থ্য
রান্না বান্না
লাইফ স্টাইল
শিশুর স্বাস্থ্য
সাতকাহন
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য
স্বাস্থ্য খবর

ভাঙা দাঁত কতটুকু ক্ষতিকর

ভাঙা দাঁতের গর্তে বা ফাঁকা স্থানে ঢুকে থাকা খাদ্যকণা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে

গত দু’বছর আগে মুড়ি খেতে গিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব রহমান সাহেবের ওপরের চোয়ালের পেছনের দিকের দু’টো দাঁত ভেঙে যায়। কিন্তু তিনি ভ্রুক্ষেপ করলেন না। সমস্যা হলেও এমনিভাবেই দু’টো বছর কাটিয়ে দিলেন। ধীরে ধীরে ব্যথা শুরু হলো। আর ব্যথা হলেই গইইঝ ডাক্তারের কাছ থেকে ব্যথার ওষুধ খেয়েই তিনি আরও বছরখানেক কাটিয়ে দিলেন। এবার হঠাৎ করেই এমন ব্যথা শুরু হলো যে, কোনো ব্যথার ওষুধই কাজে লাগছে না। প্রচণ্ড ব্যথায় রাতে তিনি ঘুমাতে পারলেন না। দিনে ঠিকমতো অফিস করতে পারলেন না। মুখটা এক পাশে ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় অফিসে তার এক অফিস সহকারী সুচিকিৎসার জন্য এক ডেন্টাল সার্জনের কাছে নিয়ে গেলেন এবং তখন রহমান সাহেবের দাঁতের অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, শেষের দাঁত দু’টো ফেলে দিতে হলো। ফলে তিনি ওই পাশ থেকে খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো করতে পারছেন না। সারাক্ষণ তার এত বড় ভুলের খেসারত নিয়ে তিনি কষ্ট পাচ্ছেন।
কথা হলো, শিক্ষিত মানুষ যদি জেনেশুনে এভাবে ভুল করে, তাহলে দেশের জনসাধারণ কী করবে?

ভাঙা দাঁত দীর্ঘ দিন ধরে ব্যথাহীন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমন-

– দীর্ঘ দিন ধরে দাঁতে ক্যারিজ বা গর্ত থাকলে যা প্রথম দিকে শির শির অনুভূতি, ঠাণ্ডা-গরম যেকোনো খাবার মুখে নিলে ব্যথা হতে পারে। এক সময় দাঁতের অভ্যন্তরীণ দন্তমজ্জা তার স্বাভাবিক অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় দাঁতের আরও কিছুটা অংশ ভেঙে গেলেও কোনো ব্যথা অনুভব হয় না।

– একটি দাঁতের বেশির ভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ার কারণে রুট ক্যানেল চিকিৎসা করার পর ওই দাঁতের ক্যাপ বা ক্রাউন না করা হলে এক সময় সম্পূর্ণ দাঁত ভেঙে যেতে পারে এবং দাঁত ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। এতেও অনেক সময় ব্যথার কোনো অনুভূতি হয় না।

– হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে দাঁত তোলার পর দাঁতের ভাঙা অংশ হাড়ের মধ্যেই বিদ্যমান থাকে এবং দেখা যায় সেখানেও কোনো ব্যথা থাকছে না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অবশ্যই সেই রোগীর ব্যথা হবে এবং ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়বে।

ভাঙা দাঁতের মুখে যেসব সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে :

– ভাঙা দাঁতের ভেতরে অবস্থিত দন্তমজ্জায় পচন ধরার ফলে ধীরে ধীরে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। যার ফলে পাশের দাঁতের সমস্যা হতে পারে।

– ইনফেকশন বৃদ্ধি পেয়ে মুখের হাড়ে অসটিওমাইলাইটিস জাতীয় জটিল রোগ সৃষ্টি হতে পারে।

– ভাঙা দাঁতের গর্তে বা ফাঁকা স্থানে ঢুকে থাকা খাদ্যকণা মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।

– ভাঙা দাঁতের ধারালো অংশের ঘর্ষণে জিহ্বার বা গালের নরম অংশে ঘা হতে পারে। এই ঘা কিছু দিন পর ভালো হয়, আবার আঘাতের ফলে সেই ঘা আবার জেগে ওঠে। এভাবে কিছু দিন পর পর এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে থাকলে তা ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।

দাঁত ভেঙে গেলেই যে তুলে ফেলতে হবে এমনটি নয়। কারণ দন্ত চিকিৎসা এখন খুবই উন্নত এবং আধুনিক হয়েছে। এক একটি ভাঙা দাঁতকে রাখার জন্য রুট ক্যানেল করে গোরসেলিন বা মেটালিক ক্যাপ করে সংরক্ষণ করা সম্ভব। তাই দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সময়মতো সুচিকিৎসাই নিশ্চিত করতে পারে আপনার সুন্দর হাসি। তবে একটি কথা, অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টাল চিকিৎসকের সাহায্যেই কাজ করানো উচিত, তা না হলে ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে।

লেখিকা : ডাইরেক্টর ও ডেন্টাল সার্জন, নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, ১১৭/১, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। ফোন : ০১৭১২-২৮৫৩৭২

 

জীবনভর সুস্থ দাঁতের জন্য

কে না ভালোবাসে সুন্দর হাসি! হাসিতে ফাঁক হয়ে যাওয়া ঠোঁটের পরিসরে দু’সারি শুভ্র সুন্দর দাঁতের ঝিলিক। দাঁতের ব্যথা বড় ব্যথা। সহ্য করা যায় না। কোমল পানীয় পানে দাঁতে শিরশির করে ওঠা। মাড়ি পাতলা হয়ে যাওয়া। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের জেরিয়াট্রিকস বিভাগের প্রধান ডা: ববার্ট পামার বলেন, বয়স একটি বড় কারণ। দাঁত ও মাড়ি ক্ষয়ে যায় আর বয়স ৫০-৬০ হলে সমস্যার হয় শুরু।

সুখবর হলো : ডেন্টাল রুটিনে সামান্য কিছু পরিবর্তনে সুফল অবশ্য। সুস্থ দাঁতের জন্য টিপস। সতর্কসঙ্কেত চেনা বা ব্যবস্থা নেয়া।

সতর্কসঙ্কেত : দাঁত কনকন বা শিরশির করে ওঠা।

ফ্লুরিডেটেড পানি তো পাওয়া গেলো না সবসময়, তাই সুবমা যখন বেড়ে উঠেছিল তখন ফ্লুরাইড দিয়ে কুলি তো ছিল না। আমাদের তো সবার তেমন সুরক্ষা নেই, আমাদের অনেকের দাঁতে ফিলিং, ৫০ ঊর্ধ্ব মানুষের সেসব স্থানে চির দেখা যায়। একটি দাঁত যখন মেরামত করা হয় তখন আসল দাঁতের মতো এটি তত মজবুত হয় না। তবে বয়সের সাথে অনেক দাঁতে চির দেখা যায়। সেখানে জীবাণু বাসা বাঁধে।

মাড়ি রেখাতেও টিস্যু বয়সের সাথে সরে যায়। আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের কিমবাবলি হামস ডিডিএস বলেন, ‘যেহেতু স্থানটি দাঁতের স্নায়ুর খুব কাছে সেজন্য সেখানে ক্ষয় দ্রুত গুরুতর হয়ে ওঠে।’

তাই দাঁত সামান্য কনকন করলে বা শিরশির করলে ডেনটিস্টকে দেখাবেন চটজলদি। দাঁতে চির দেখার জন্য এক্সরে করতে হতে পারে। এরপর একে মসৃণ করে দেয়া বা ফিল করে দেয়া।

বড় চির থাকলে পুরো ক্রাউন বা ক্যাপ প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

উপায় হলো দাঁত ব্রাশ করা, ফ্লস করা এবং ফ্লুরাইড কুলি করা। এলকোহল কুলি বরং ক্ষতিকর।

সতর্কসঙ্কেত

সংবেদনশীল দাঁত এবং ব্যথায় কাতর মাড়ি

যাদের দাঁত খুব সংবেদনশীল, এর পেছনে কারণ হতে পারে যে পেরিওডোন্টাল রোগ মাড়ি ক্ষয় করে ফেলেছে। এই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগটি শুরু হয় উপসর্গ ছাড়াই, আর বড় রকমের ক্ষতি হওয়ার আগে অনেকেই বুঝতেই পারেন না যে রোগটি অনেকদূর এগিয়েছে। ৫৫ ঊর্ধ্ব অর্ধেকের বেশি লোক মৃদু ধরনের এ রোগের শিকার হয়েই থাকেন।

ব্যাকটেরিয়া দাঁতের মূলে গজাতে থাকলে, ব্রাশের সময় সামান্য রক্তক্ষরণ চোখে ধরা পড়ে। তবে অণুজীবগুলো সংখ্যায় বাড়তে থাকলে মাড়ির টিস্যু আলগা হতে থাকে, নিচের লিগামেন্ট ক্ষয় হতে থাকে, যে হাড়গুলো দাঁতকে যথাস্থানে রাখে সেগুলোও ক্ষয়ে যায়। ব্যাকটেরিয়া চলে যেতে পারে রক্তে, বাড়ে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগের ঝুঁকি।

আগাম মাড়ি রোগ বোধ করা এবং সুস্থ দাঁত পেতে হলে প্রয়োজন হবে পেশাদারি দাঁতের গভীর ক্লিনিং, দৈনিক এন্টিবায়োটিক কুলি, মাঝে মাঝে ডেনটিস্ট দর্শন (তিন মাসে একবার) ফ্লসিং ভালো করে করা। নরম, গোলাকার কুচিসহ ব্রাশ ব্যবহার করা (soft brush) সেনসোডাইন পেস্ট সংবেদনশীল দাঁতের জন্য।

সতর্কসঙ্কেত : শুকিয়ে যাওয়া লালারস সুস্থ দাঁতের জাদুকরী সালসা বটে। এটি ব্যাকটেরিয়ানাশক অম্ল প্রশমক, খনিজ উপাদানে ভরপুর যা এনামেলকে মজবুত করে। তবে ৫০ বছর বয়স ২৫% মহিলার লালারস কম বের হয়, তাই মুখে দুর্গন্ধ হয় অনেকের।

জিব বা ঠোঁট প্রায়ই শুকিয়ে গেলে, ডাক্তারকে বলুন। অনেক ওষুধ খেলে মুখ শুকিয়ে যায়। বিষন্নতারোধক ওষুধ, রক্তচাপের ওষুধ, মূত্রনালির ওষুধ অনেক নিলে মুখ শুকাতে পারে। মুখ সামান্য শুকানো, মুখে বদ গন্ধ হলে পামাবের পরামর্শ হলো- সুগারহীন শক্ত ক্যানডি বা গাম জাইলিটল দিয়ে মিষ্ট করা। প্রতিদিন জিব পরিষ্কার করা ভালো। উপর নিচ, পেছনে জিবকে পরিষ্কার করতে হবে।

লেখক : অধ্যাপক ও ডিরেক্টর, ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস, বারডেম, ঢাকা।

সূত্র: নয়া দিগন্ত

Comments

comments