ত্বক থেকে স্থায়ীভাবে ব্রন দূর করার উপায়, জেনে রাখুন
জীবনের বিভিন্ন ধাপ পার করার সময় সবাইকে মুখোমুখি হতে হয় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হল ব্রণ। শুধু কিশোর কিশোরীই নয়। আজকাল তরুন তরুণী, মধ্যবয়সী নারীরাও এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাজারের বিভিন্ন রং ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে ত্বকের ক্ষতিসাধন করছেন। কে চায় এত সুন্দর মুখশ্রীর উপর ব্রণ বা এর দাগ
ব্রণ দূর করার চেয়ে ব্রণের দাগ দূর করা বেশ কঠিন। প্রাকৃতিক উপাদান এবং ডাক্তারের সাহায্যে ব্রণ দূর করা যায়। কিন্তু ব্রণের এই জেদি দাগগুলো থেকেই যায়। কিছুতেই যেতে চায় না। তবে একটি প্রবাদ আছে , “নাথিং ইজ ইম্পসিবল”।
অসম্ভব বলে কিছু নেই। যদিও সময় একটু বেশি লাগবে, কিন্তু নিয়মিত চেষ্টায় কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের সহায়তায় এই দাগ ধীরে ধীরে দূর করা সম্ভব। এই উপাদানগুলো প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার ত্বক থেকে স্থায়ীভাবে দাগ দূর করবে।
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। তাই আমি অবশ্যই বলব ত্বকের জন্য নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাস ত্যাগ করা ও ভালো কিছু অভ্যাস তৈরি করা।
১। আপনার ব্রণ থেকে নখকে দূরে রাখুন
আপনার ব্রণের সাথে খেলবেন না। একে একা থাকতে দিন। ভুলেও নখ লাগাবেন না বা চাপ দিবেন না। চুলকানি হলেও স্পর্শ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আর যদি প্রতিকারের জন্য কোন ওষুধ বা কোনও কিছু ব্যবহার করেন, তবে অবশ্যই আলতোভাবে করতে হবে।
২। সূর্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন
সূর্যের আলোতে ব্রণের দাগ বসে যায়। তাই চেষ্টা করবেন সূর্যের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রাখার। কিন্তু বাইরে না গিয়ে তো উপায় নেই। তাই যখনই বাইরে যাবেন, তখন অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম লাগিয়ে যাবেন। আর ছাতা, হ্যাট, ওড়না, স্কার্ফ ইত্যাদি দিয়ে নিজের ত্বককে সূর্যের রশ্মি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন।
ব্রণের দাগ দূর করার প্রাকৃতিক প্রতিকারঃ
১।লেবুঃ
(ক) লেবু একটি প্রাকৃতিক ব্লিচ। লেবুর রসের সাথে সামান্য পানি মিশিয়ে একটি তুলার বলের সাহায্যে তা মুখে ৩-৪ মিনিট ঘষুন।
(খ)যদি সেনসিটিভ স্কিন হয় তাহলে এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে নিবেন। সম্ভব হলে ১ চামচ লেবুর রসের সাথে ২ চামচ ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া একটানা ৭-১০ দিন নিচের ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
লেবুর ফেসপ্যাকঃ
১ টেবিল চামচ লেবুর রস, ১ টেবিল চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ আমন্ড তেল, ২ টেবিল চামচ দুধ একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ থাকা অবস্থায় দুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
২।মধুঃ
(ক) রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে মধু লাগান। সারারাত তা রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে তা ধুয়ে ফেলুন।
(খ) মধুর সাথে দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে শুধুমাত্র দাগের উপর লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে সারারাতও রাখতে পারেন।
মধুর ফেসপ্যাকঃ
২-৩ টি এস্পিরিন ট্যাবলেট এর সাথে ২ চামচ মধু ও ২-৩ ফোঁটা পানি মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এস্পিরিন এর স্যালিসাইলিক এসিড ব্রণের দাগ দূরের জন্য খুবই সহায়ক।
৩। অ্যালোভেরা জেলঃ
দিনে দুইবার অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগান এবং ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি শুধুমাত্র ব্রণের দাগই দূর করবে না, বরং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং টানটান হবে।
৪। বেকিং সোডাঃ
২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও সামান্য পানি একসাথে মিশিয়ে মুখে ২-৩ মিনিট ঘষুন এবং শুকানোর জন্য কয়েক মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর মুখ ধুয়ে এর উপর কোনও ময়েশ্চারাইজার ক্রিম বা অলিভ অয়েল লাগান।
৫।টমেটোঃ
একটি লাল টমেটোর কিছু অংশ নিয়ে তার রস নিন। এরপর তা শশার রসের সাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগান। (১০) মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ বার এই প্যাকটি লাগান। ব্রণের দাগ দূর তো হবেই সেই সাথে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
উপরের সবগুলো উপাদান ত্বকের দাগ দূরের জন্য বেশ উপকারী।, আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে উপাদান বেশি ভালো তা ব্যবহার করুন এবং আপনার মূল্যবান ত্বকের যত্ন নিন, বেশি করে পানি পান করুন, সুস্থ থাকুন।