হস্তমৈথুনের অপকারিতা
পোস্টটির প্রথম অংশে পুরুষদের সম্পর্কে এবং শেষ অংশে নারীদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
হস্তমৈথুন(Masturbation) বা স্বমেহন বর্তমানে একটি বড় সমস্যা। ইসলামের দৃষ্টিতে এটা হারাম এবং কবীরা গুনাহ। শরীয়ত অনুযায়ী যারা হস্তমৈথুন করে তারা সীমালংগনকারী।
হস্তমৈথুনের কারণে দুই ধরনের সমস্যা হয়—
(১)মানসিক সমস্যা।
(২)শারীরিক সমস্যা।
পুরুষ হস্তমৈথুন করলে প্রধান যে্সব সমস্যায় ভুগতে পারে তার মধ্যে
একটি হল নপুংসকতা (Impotence)। অর্থাৎ ব্যক্তি যৌন সংগম স্থাপন করতে অক্ষম হয়ে যায়। পুরুষ হস্তমৈথুন করতে থাকলে সে ধীরে ধীরে নপুংসক (Impotent)হয়ে যায়।
আরেকটি সমস্যা হল অকাল বীর্যপাত(Premature Ejaculation)। অর্থাৎ খুব অল্প সময়ে বীর্যপাত ঘটে। ফলে স্বামী তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে অক্ষম হয়।বৈবাহিক সম্পর্ক বেশিদিন স্থায়ী হয় না।।
আরো একটি সমস্যা হল Temporary Oligospermia।[৩] ।Oligospermia হলে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায়।তখন বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ২০ মিলিয়নের কম।[২ কোটি]। যার ফলে Male infertility দেখা দেয়।অর্থাৎ সন্তান জন্মদানে ব্যর্থতার দেখা দেয়। একজন পুরুষ যখন স্ত্রী গমন করেন তখন তার থেকে যে বীর্য বের হয় সে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা হয় ৪২ কোটির মত। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান মতে কোন পুরুষের থেকে যদি ২০ কোটির কম শুক্রাণু বের হয় তাহলে সে পুরুষ থেকে কোন সন্তান হয় না।[৪]।অতিরিক্ত হস্তমৈথুন পুরুষের যৌনাঙ্গকে দুর্বল করে দেয়।
Dr.Liu বলেন– “There is a huge change in body chemistry when one masturbates excessively” [৮]
আর শরীরের অন্যান্য যেসব ক্ষতি হয়–
[১]Nervous system,heart,digestive system,urinary system এবং আরো অন্যান্য system ক্ষতিগ্রস্ত হয় । পুরো শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং শরীর রোগ-বালাইয়ের যাদুঘর হয়ে যায়।
[২]চোখের ক্ষতি হয়।
[৩]স্মরণ শক্তি কমে যায়।
[৪]মাথা ব্যথা হয় ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা হয় হস্তমৈথুনের কারণে।
আরেকটি সমস্যা হল Leakage of semen।অর্থাৎ সামান্য উত্তেজনায় যৌনাঙ্গ থেকে তরল পদার্থ বের হয়।ফলে অনেক মুসলিম ভাই নামায পড়তে পারেন না।মহান আল্লাহ্ তা’আলার স্মরণ থেকে মুসলিমদের দূরে রাখে হস্তমৈথুন।
আর কোন নারী যখন স্বমেহন বা হস্তমৈথুন করে তখন তার Hymen(fold of mucous membrane partly closing the vagina in a virgin)
break হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অর্থাৎ তার কুমারীত্ব (Virginity)হারানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
অনেকে স্বমেহন করতে গিয়ে কুমারীত্ব হারিয়ে ফেলে। ফলে তার বিয়ে করতে সমস্যা হয়।বিয়ের পর স্বামী তার এ অবস্থা দেখে তাকে সন্দেহ করে তালাক দেয়।তাই হস্তমৈথুন নারীদের অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি করে।[আরো অনেক সমস্যা আছে বিস্তারিত আলোচনা করলাম না।]
এখন একটু ভিন্ন প্রসংগে আসি।
মিসরীয় ফারাওদের আনুষ্ঠানিকভাবে নীল নদে হস্তমৈথুন করতে হত। এখন আধুনিক ফারাওদের কথা বলি, ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের মানুষের মাঝে করা একটি জরিপে দেখা যায় ১৬ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে ৯৫% পুরুষ ও ৭১% নারী তাদের জীবনের যে কোন সময়ে অন্তত একবার হস্তমৈথুন করেছে।
২০০৯ সালে নেদারল্যান্ড অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের সাথে যুক্তরাজ্যেও বয়সন্ধিকালীন ছেলে- মেয়েদের হস্তমৈথুন করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়। হস্তমৈথুন একটি ভাল অভ্যাস বলে তারা প্রচার করছে। কারণ? কারণ হল ব্যবসা। হস্তমৈথুনের সাথে পর্ণোগ্রাফির খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক।জুতার সাথে মোজার,চায়ের সাথে বিস্কুটের,কাগজের সাথে কলমের যে রকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হস্তমৈথুনের সাথে পর্ণোগ্রাফিরও সেরকমই সম্পর্ক।পর্ণোগ্রাফির ব্যবসা হল কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। পশ্চিমারা যদি হস্তমৈথুনের অপকারিতা মানুষের কাছে তুলে ধরে তাহলে তাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসার ক্ষতি হবে।কারণ তখন হস্তমৈথুনের হার কমে যাবে। পর্ণো সিডি,ম্যাগাজিন,Sex Toy, Sex Doll,এর বিক্রি ব্যাপকভাবে কমবে। এজন্য তারা হস্তমৈথুনের কোন অপকারিতা নেই বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা সমকামিতা বৈধ করেছে। সমকামিতার মত হস্তমৈথুনের অপকারিতাকেও তারা এড়িয়ে চলছে।
যাই হোক,আমার মুসলিম ভাই- বোনেরা হস্তমৈথুন নামের এই যৌন বিকৃতি থেকে দূরে থাকুন। মহান আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় করুন।আপনার বন্ধু-বান্ধবীদের এই ব্যাপারে সচেতন করুন।এই ব্যাপারে আলোচনা করুন। এই সামাজিক সমস্যা দূর করুন।
সব শেষে একটি হাদীস শেয়ার করছি। রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বলেছেন– “যে ব্যক্তি আমাকে তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিনিস (জিহ্বার) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী জিনিস (যৌনাঙ্গের) নিশ্চয়তা (সঠিক ব্যবহারের) দেবে আমি তার বেহেশতের নিশ্চয়তা দিব।”(বুখারী ও মুসলিম)