হটাৎ বৃষ্টি-হঠাৎ ঠাণ্ডায় যা করবেন
নভেম্বরের শুরুতে টানা কয়েকদিন হালকা বৃষ্টির পর আজকাল বেশ ঠাণ্ডা পড়ছে। অনেকেই শুনছি ঠাণ্ডা লেগে অসুস্থ হচ্ছেন, কারও জ্বর হচ্ছে, গলাব্যথা, খাবারে অরুচি, মাথাব্যথা, নাক বন্ধ থাকায় নিশ্বাস নিতে কষ্ট, বার বার হাঁচি দেওয়া, আর কাশির সমস্যায় স্বাভাবিক জীবন যাপনে বেশ প্রতিবন্ধকতাই দেখা দিচ্ছে।
তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের এ সময়ে হালকা ঠাণ্ডা জ্বর হতেই পারে। এনিয়ে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। একটু সচেতন হলেই আমরা ঘরেই প্রকৃতিকভাবে এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে পারি।
জ্বর, ঠাণ্ডা লাগা থেকে উপসম দিতে আমাদের সাহায্য করতে পারে এমন কিছু টিপস:
তরল পানীয়
ঠাণ্ডায় আমাদের নাক বন্ধ হয়ে থাকে। নিশ্বাস নিতে ও ঘুমাতে কষ্ট হয়। অনেক সময় গলাব্যথা থাকার জন্য খাবার খেতেও কষ্ট হয়। শরীর আদ্র রাখতে এসময় গরম তরল পানীয় পান করতে হবে।
এই বিষয়গুলোর উপর ভিডিও বা স্বাস্থ্য বিষয়ক ভিডিও দেখতে চাইলে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি ঠিকানা: – YouTube.com/HealthDoctorBD
স্যুপ, হারবাল চা, কফি, মধু দিয়ে গরম পানি বারবার পান করুন।
জ্বর হলে
শরীরের অতিরিক্ত তাপ হলেই আমরা জ্বর বলি। সিজনাল জ্বর হলেও থার্মোমিটার দিয়ে নিয়মিত জ্বর মেপে একটি ছক করে লিখে রাখুন।
শরীর মুছে নিন
হালকা গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে বারবার শরীর মুছে নিন। এতে জ্বরের তাপ কমবে।
নাকে ক্রিম ব্যবহার করুন
ঠাণ্ডা সর্দিতে আমাদের নাক চুলকায়, নাক দিয়ে পানি পড়ে, টিস্যু দিয়ে বারবার নাক মোছার ফলে অনেক সময় নাকের চামড়া ছিলে যায়। এজন্য নাক বেশি ঘষা যাবে না। নাকে ক্রিম ব্যবহার করুন। আর নাক বেশি আটকে থাকলে গরম পানিতে লেবু কেটে দিয়ে সেই ভাপ নিশ্বাসের সঙ্গে টেনে নিন। তারপরও নিশ্বাস নিতে কষ্ট হলে ডাক্তারের পরামর্শে মেন্থল ব্যবহার করুন।
একটি অতিরিক্ত বালিশ নিয়ে ঘুমান
ঠাণ্ডা লাগলে নিশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় ঘুম ঠিকমতো হয় না। দ্রুত সুস্থ হতে পর্যপ্ত ঘুম অপরিহার্য্ । এজন্য একটি অতিরিক্ত বালিশ মাথায় দিয়ে ঘুমান।
খাদ্য
এসময় একবারে না খেয়ে বারে বারে অল্প অল্প খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য বেশি রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। লেবু, কমলা, পেঁপে, পেঁয়ারা, আমলকি বেশি বেশি খান। ঠাণ্ডা কমবে আর খাবার খেতেও রুচি হবে।
এ ছাড়াও জ্বর কমে আসে ব্লুবেরি খেলে, বেটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ গাজর, মরিচ, পেঁয়াজ, আদা শরীর পরিষ্কার করে ব্রংকাইটিস ও অন্যান্য সংক্রমণ থেকে রক্ষায় সাহায্য করে, সরিষা, গ্রিন টি প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিকের কাজ করে তাই নিয়মিত এগুলো খেতে হবে।
এন্টিসেপটিক দিয়ে হাত সব সময় পরিষ্কার করতে হবে।
দাঁত মাজার ব্রাশ, চিরুনি, তোয়ালে এগুলো আলাদা রাখতে হবে।
কাশি ও হাচিঁ দেওয়া সময় রুমাল ব্যবহার করুন।
কুসুম গরম পানি পান করতে হবে।
ঘরের ধুলা পরিষ্কার করে রাখতে হবে।
গোসল করতে অবশ্যই গরম পানি ব্যবহার করুন।
আঙ্গুল দিয়ে ঘন ঘন নাক অথবা চোখ চুলাকানো যাবে না।
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে।
পরিবারের কেউ ঠণ্ডা জ্বরে আক্রান্ত হলে অন্যদের সাবধানে রাখুন। ভাইরাল ফেভারের সময় আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে খুব ঘনিষ্টভাবে মেলামেশা না করাই ভালো। আর ছোটরা এবং বৃদ্ধদের শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। এদের জন্য নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা। যেমন, সন্ধ্যায় বাইরের বাতাসে না যাওয়া, গরম কাপড় ব্যবহার, ঠাণ্ডায় হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করা।
মনে রাখবেন সাধারণ ঠাণ্ডা দীর্ঘদিন না সারলে তা থেকে কোনো জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। তাই উপসর্গগুলো দ্রুত সমাধান না হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।