পুরুষের তুলনায় নারীরা কেন বেশিদিন বাঁচে?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দাম্পত্য জীবনের শেষ দিকে অধিকাংশ নারীকেই একা থাকতে হয়। প্রকৃতির নিয়ম মেনে যুগের পর যুগ নারীরা যেন তাদের সঙ্গী হারিয়ে বিধবা জীবন পার করছেন। অপরদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই মাত্রাটা উল্লেখযোগ্যহারে কম দেখা যায়। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, পুরুষরা নারীকে একা করে আগেভাগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। এই প্রবণতা শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও রয়েছে সমান হারে।
ব্রিটেনে ইউনিভার্সিটি অব এক্সিটার এর এক দল গবেষক একটি পরীক্ষা চালান। তারা জানান, যৌনজীবন এবং জাবতীয় কাজের চাপ মহিলাদের তুলনায় পুরুষরা বেশি নিয়ে থাকেন। তাই নারীর তুলনায় পুরুষের জীবনীশক্তি দ্রুত ক্ষয় হতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় সমবয়সী নারী সঙ্গীর চেয়ে পুরুষ সঙ্গী দ্রুত মারা যান।
এই তথ্যের প্রমাণ হিসেবে তারা একটি গবেষণামূলক পরীক্ষার ফলাফল ‘ফাউন্ডেশন ইকোলজি’ নামক জার্নালে প্রকাশ করেন। সেখানে তারা মাছির ওপর একটি পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন। কম বয়সে স্ত্রী প্রজাতির মাছির সঙ্গে জোরপূর্বক মিলিত হওয়ার কারণে পুরুষ মাছিদের জীবনকাল কমে আসে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নারী মাছির বেশি বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকার কারণ খুঁজে পেয়েছেন।
গবেষক দলের প্রধান ডেভিড হোসকেন বলেন, যৌনকর্মে পুরুষকে নিতে হয় প্রধান ভূমিকা। দৈনন্দিন জীবনে ঝুঁকিপূর্ন এবং কায়িক পরিশ্রমের কাজও বেশি করতে হয় পুরুষকে। নানা পরীক্ষায় বহু প্রাণীর পুরুষ প্রজাতির মধ্যে দেখা গেছে একই প্রবণতা। তাদের যৌনজীবনের সঙ্গে বেঁচে থাকার সময়ের গভীর যোগসূত্র রয়েছে। আর এই প্রাণীদের মধ্যে মানুষ অন্যতম। তাই পুরুষের জীবনীশক্তি নারীর আগেই ফুরিয়ে যেতে দেখা যায়।
গবেষণায় বলা হয়, যৌনতার ক্ষেত্রে স্ত্রীকে দখলের প্রতিযোগিতা এবং প্রয়োজন পূরণ পুরুষ প্রজাতির মাছিদের সহজাত প্রবণতা। আবার প্রকৃতিতে বেঁচে থাকার লড়াই করে তারাই। এ দুটো বিষয়কে নিয়ে বেঁচে থাকতে দারুণ চাপের মুখে থাকতে হয় পুরুষদের। বিপরীত দিক থেকে হিসেব করলে দুটো বিষয়ই মানব জাতির পুরুষদের ওপরও বেশি প্রভাব ফেলে। আর এতেই পুরুষের জীবনকাল এক-তৃতীয়াংশ কমে যায়।
ডেভিড হোসকেন আরও জানান, যৌনকর্মে যে মাছি দম্পত্তি সমান অংশীদার থাকে তাদের জীবনকালও প্রায় সমান থাকে। এ ধরনের প্রভাব মানুষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে জানান গবেষকরা।