দিনের যে সময়টা নারী যৌনতায় বেশি আগ্রহী
যৌনমিলনের কোন সময়টা যৌনতার জন্য আদর্শ তা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। বহুকাল আগে কামসূত্রে বাৎসায়ন বলেছিলেন, যৌনসুখ ভোগের আদর্শ সময় দুপুরবেলা। তখনই নাকি দেহের রতিক্রিয়া উত্তমার্গে বিচরণ করে। খাজুরাহোর মতো স্থাপত্যেও নারী-পুরুষের মিলনের আদর্শ সময় বলা হয়েছে দুপুরকেই।
কিছুদিন আগে একটি গবেষণায় বেরিয়েছিল, যৌনতার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের শরীরে নাকি আলাদা আলাদা সময় কাম জাগে – নারীর প্রিয় রাত, পুরুষ ক্ষুধার্ত ভোরে। কিন্তু কোনটা কামের আদর্শ সময় সেটা বলা কঠিন।
তবে এটাই নাকি অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যৌনমিলনের ক্ষেত্রে পুরুষের সত্যিই রাত পছন্দ নয়। সারাদিনের খাটুনির পর রাতেই তারা নাক ডেকে ঘুমতে চায়। যেই না ভোর হয় সিংহের শক্তি নিয়ে জেগে ওঠে তার কাম। নারীর তা নয়। সে চায় রাতের আঁধারকেই। তাই তো রাতেই মেয়েদের পাউডার মাখা, চুল বাঁধার অত ঘটা। কিন্তু এই তারতম্য কেন? এর জন্য দায়ি হরমোন। হরমোন কীভাবে মানুষের মিলনেচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে চলুন জেনে নেওয়া যাক –
ভোর ৫টা – ভোরবেলাতেই পুরুষশরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোন সবচেয়ে বেশি নিঃসরিত হয়। পুরুষের পিটুইটারি গ্রন্থি চালু হয় রাতে। ভোরের দিকে বাড়তে থাকে। তাই ভোরেই সবচেয়ে তেজি পুরুষ। নারীর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারে উলটো। রাতেই তাদের টেস্টোস্টেরন হরমোন কাজ করে বেশি, এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রাকে বজায় রেখে।
ভোর ৬টা – সারারাতের ভালো ঘুম সেক্সের কামনা বাড়িয়ে তোলে পুরুষশরীরে। দেশবিদেশের বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ভালো ঘুম নাকি টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক।
ভোর ৭টা – এ সময় নারীর সেক্স হরমোনের মাত্রা সবচেয়ে কম থাকে। পুরুষের থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে ঋতুস্রাবের কারণে নারীর সেক্স হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে।
সকাল ৮টা – নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে নারীপুরুষ। শরীরে স্ট্রেস হরমোন করটিসলের মাত্রা বেড়ে যায়। এ সময় নারীপুরুষ কেউই যৌনতার জন্য তেমন আগ্রহ পায় না।
দুপুর ১২টা – দুপুর ১২টা প্রেম করার আদর্শ সময় হতে পারে। কিন্তু যৌনতার জন্য নয়। কেননা, মাথার উপর সূর্য জ্বলজ্বল করলে সেক্স হরমোন তৈরি হতে চায় না। কিন্তু খুব মেঘলা দিনে, সূর্য যখন মেঘের আড়ালে মুখ লুকোয়, সেক্সটাও কিন্তু দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে।
বেলা ১টা – মনের পুরুষের সঙ্গে যৌনকল্পনায় মেতে উঠতে চাইলে নারীর এটাই আদর্শ সময়। এ সময় নারীশরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ে। তবে পুরুষদের তেমন কিছুই হয় না। এ সময় পুরুষশরীরে টেস্টোস্টেরন তৈরি হয় না বলেই চলে। তাই সুন্দরী দরজায় কড়া নাড়লেও বড়জোর হাই-হ্যালো, এক কাপ কফি!
সন্ধ্যে ৬টা – বেলা ১টা থেকেই নারীশরীরে বাড়তে থাকে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা। সন্ধ্যে ৬টার সময় তা বেশ ভালোই বাড়ে। ফলে সন্ধেবেলাতে নারী কিন্তু রেডি। অপরদিকে পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন কমতে শুরু করে। কিন্তু যে পুরুষ নিয়মিত সন্ধেবেলায় জিম করে, তার টেস্টোস্টেরনের মাত্রাও ঊর্ধ্বমুখী।
সন্ধ্যে ৭টা – সন্ধে ৭টায় যে নারী গান শোনে তার সেক্স হরমোন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পুরুষের বেলায় তেমন কোনও প্রভাব লক্ষ্য করা যায় না।
রাত ৮টা – এমনিতে সন্ধ্যে হলেই পুরুষের কামেচ্ছা লোপ পায়। কিন্তু নারীর তো বাড়ন্ত হরমোন। এমন অবস্থায় পুরুষ যদি রাজিই না থাকে, খুব মুশকিল। একটা উপায়ের কথা বলেছে ইয়েটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা। এ সময়ে পুরুষকে টেলিভিশনে কোনও খেলার সামনে বসিয়ে দিতে হবে। টেস্টোস্টেরন আপনাআপনি বাড়বে।
রাত ৯টা – সাধারণ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এ সময় নারীশরীরে সেক্স হরমোন বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এখানেও একটা প্যাঁচ আছে। নারী যদি মনে করে তাকে খারাপ দেখতে লাগছে, তবে তার সব ইচ্ছে উড়ে যায়।
রাত ১০টা – এ সময় পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন কম থাকা সত্ত্বেও তারা সঙ্গমের ইচ্ছে প্রকাশ করে। আর নারী? সে তো সুখ খোঁজে আঁধারেই।