ছেলেদের কিছু প্রধান যৌন সমস্যা
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আছে সমস্যা আছে তার সমাধান।মানুষের যৌন জীবনে ও রয়েছে নানান রকম যৌন সমস্যাএবং সেই যৌন সমস্যার ও রয়েছে সমাধান। প্রতিটি মানুষই জন্মগতভাবে যৌবনের অধিকারী। জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই যৌবন মানুষের জীবনে আসে।
এই সময়টাই মানুষের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান সময়। এই সময়ে নারী ও পুরুষের দেহ-মনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। এসময় একই সাথে নারী ও পুরুষদের নানা ধরনের যৌন সমস্যাজনিত প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। যা তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে।
প্রশ্নঃ ছেলেদের যৌন সমস্যা কি
উঃ যৌন সমস্যার কথাটার অর্থ ব্যাপক হতে পারে। যৌনরোগ, গর্ভধারণে সমস্যা ইত্যাদি সব কিছুই যৌন সমস্যার মধ্যে ফেলা যায়। কাজেই তুমি যৌন সমস্যা বলতে ঠিক কি বোঝাতে চাইছ সেটা না জানলে উত্তর দেওয়া মুশকিল। এই পোস্টে ছেলেদের যৌন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হল যেগুলো সুস্থ যৌনসঙ্গম ও যৌন তৃপ্তির পথে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।
১. ছেলেদের যৌন সমস্যার সম্মন্ধে কথা বলতে গেলে প্রথমেই যেটা মনে আসে তা হল শীঘ্রপতন। পৃথিবীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ পুরুষরা জীবনে কোন না কোন সময়ে যৌন সমস্যায় পড়ে থাকে।তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে শীঘ্রপতনের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
২. শীঘ্রপতনের বিপরীত একটি যৌন সমস্যা হল বিলম্বিত বীর্যস্খলন। এক্ষেত্রে বীর্যস্খলন হতে অত্যধিক বিলম্ব হয় যা দুজন সঙ্গীর পক্ষেই অসুবিধাজনক। সঙ্গিনীর প্রতি আকর্ষনের অভাব, ধর্মীয় বা অন্য কারণে যৌনসঙ্গমে অপরাগ, স্নায়ুতে আঘাত, কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ফলে এই সমস্যা হতে পারে। সঠিক কারণ চিহ্নিত করতে পারলে বিলম্বিত বীর্যস্খলন নামক এই যৌন সমস্যার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
৩. যৌন সমস্যাজনিত অপর একটি গুরুতর ব্যাপার হল রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন। এক্ষেত্রে বীর্যস্খলনের সময় বীর্য মূত্রনালী দিয়ে বের হওয়ার পরিবর্তে মূত্রথলীতে প্রবেশ করে। ফলে হস্তমৈথুন বা যৌনসঙ্গমের সময় অর্গ্যাজম হলেও বীর্য বের হয় না। মূত্রথলীর স্ফিংটার পেশী ঠিকমত কাজ না করলে এই ধরণের যৌন সমস্যা হয়। রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের একটি সম্ভাব্য কারণ। কারণের উপর নির্ভর করে ওষুধ বা অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যার চিকিৎসা করা হয়।
৪. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ছেলেদের যৌন সমস্যা হল ধ্বজভঙ্গ । এইরোগে লিঙ্গ একেবারেই উত্তেজিত হয় না বা হলেও স্বল্প সময়েই শিথীল হয়ে যায়। প্রায় ৪০ শতাংশ পুরুষ জীবনের কোন না কোন সময় এই যৌন সমস্যায় উপনীত হয়। এই রোগের আধুনিক নাম ইরেকটাইল ডিসফাংশন (ইডি)। নানাবিধ শারীরিক বা মানসিক কারণে এই সমস্যা হতে পারে। শারীরিক কারণসমূহ হল মূলত হৃদরোগ, মধুমেহ, হরমোনের সমস্যা, স্নায়বিক দুর্বলতা, বয়সজনিত অন্যান্য অসুখ, ধুম্রপান, ঔষধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া, যৌনাঙ্গে আঘাত ইত্যাদি। মানসিক কারণসমূহ মধ্যে দুঃশ্চিন্তা, মানসিক রোগ, ভালভবে আদর না করতে পারার চিন্তা ইত্যাদি অন্যতম। তবে সুচিকিৎসায় ইডির নিরাময় সম্ভব। যেমন ভায়াগ্রা গোত্রের ঔষধ কার্যকরী। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক কসরৎ, বিশেষত এরোবিক এক্সারসাইজ বিশেষ উপকারী। তবে যদি মনে হয় যে ইরেকটাইল ডিসফাংশনের সমস্যা হচ্ছে তাহলে সত্বর কোন ভাল ইউরোলজিস্ট বা সেক্সোলজিস্টের পরমর্শ নেওয়া উচিৎ। উনি যথাযথ পরীক্ষা করে দেখবেন যে ধ্বজভঙ্গের কারণ শারীরিক না মানসিক এবং সেই অনুসারে চিকিৎসা করবেন।
৫. যৌন সমস্যাজনিত আরেকটি সমস্যা হলো পুরুষদের যৌনক্ষুধা কমে যাওয়া। মূলত শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে গেলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। তবে অনেক সময় মানসিক অবসাদ, দুঃশ্চিন্তা, মধুমেহ, অস্বাভাবিক রক্তচাপ ইত্যাদির ফলেও যৌনইচ্ছা কমে যেতে পারে। চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ। তবে দেখা গেছে যে শারিরীক কসরৎ করলে যৌনইচ্ছা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এগুলো বাদ দিলেও পুরুষদের বিভিন্ন যৌনরোগ যেমন এইচ.আই.ভি., গনোরিয়া, সিফিলিস ইত্যাদি যৌনমিলনে জটিলতা সৃষ্টি করে থাকে। তবে ধাতুদৌর্বল্য বলে যে রোগের কথা খবরের কাগজে বা ট্রেন-বাসে প্রচার করা হয় সেটা পুরোপুরি কাল্পনিক রোগ। মূত্রপাথুরীও কোন যৌনরোগ নয়, ওটা কিডনী ও মূত্রনালীর সমস্যা যার জন্য নেফ্রোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।