যে ৮টি লক্ষণে বুঝবেন লিভারে সমস্যা
আমেরিকার এক গবেষণায় বলা হয়, লিভারের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাটি হলো ননঅ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিস (এনএএফএলডি)। লিভারে অতিরিক্ত ফ্যাট সেল জমে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। এই কোষ লিভারের ৫-১০ শতাংশ অংশ দখল করে নেয়। আমেরিকার বিখ্যাত মাইয়ো ক্লিনিকের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ড. হারমিত মালহি জানান, বিশ্বব্যাপী এটাই ক্রনিক লিভার ডিজিস হিসাবে পরিচিত। এখানে জেনে নিন ফ্যাটি লিভার ডিজিসের ৮টি পরিষ্কার লক্ষণের কথা।
* পেটে চর্বি আছে: বিশ্বজুড়ে স্থূলতা এক বড় স্বাস্থ্যগত সমস্যা। আবার অনেকের দেহ বেশ সরু, কিন্তু পেটে চর্বি জমে যায়। এ সময় তাদের বডি ম্যাস ইনডেক্স বেড়ে যায় এবং বিএমআই ৩০-৪০ হয়ে যায়। এটি ননঅ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিসের লক্ষণ বলে জানান ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার এনএএফএলডি রিসার্চের পরিচালক ড. রোহিত লুম্বা।
* দেহে প্রচুর কোলেস্টরেল: আপনার দেহের রক্তে উচ্চমাত্রার ফ্যাট থাকার অর্থ ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টরেলের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অর্থ লিভারেও যথেষ্ট চর্বি জমেছে। আসলে রক্তে যে কোলেস্টরেল পরিমাপ করা হয়, তা মূলত লিভার থেকেই বেরিয়ে আসে বলে জানান ড. লুম্বা। লিভার নিজেই কোলেস্টরেল তৈরি করে এবং তা রক্তে ছড়িয়ে দেয়।
* ডায়াবেটিস ধরা পড়েছে আপনার: যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তবে এনএএফএলডি পরীক্ষা জরুরি আপনার জন্য। এক গবেষণায় বলা হয়, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ধরা পড়ে এমন রোগীদের ফ্যাটি লিভার ডিজিস দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী জানেনই না তার লিভারে সমস্যা রয়েছে।
* উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়: জার্মান বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় ৩০০০ মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়। যাদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় তাদের এনএএফএলডি হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুন বেশি থাকে। যাদের লিভারে এ সমস্যা থাকে তাদের কার্ডিওভাসকুলার ডিজিসে মৃত্যুঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
* পরিবার থেকে পাওয়া: ড. লুম্বা জানান, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যদি পরিবারের কোনো সদস্যের এনএফএলডি থাকে, তবে অন্য কারো একই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১৩ গুন বেড়ে যায়।
* সব সময় ক্লান্তি: এ সমস্যা শারীরিক কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না। দৃশ্যমান সমস্যা নেই বললেই চলে। রক্ত পরীক্ষা বা লিভার বায়োপসির মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব। একবার সিরোসিস বাসা বাঁধতে থাকলে অবসাদ ও দুর্বলতা দেখা দিতে থাকে। এমনটা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
* পেটের ডান পাশের ওপরের দিকে ব্যথা: এ স্থানে ব্যথা হওয়াটাও লিভারের ফ্যাটি ডিজিসের লক্ষণ হয়ে থাকে।
* ধাঁধার মধ্যে পড়ে যান: এ ঘটনা প্রায়ই ঘটতে শুরু করেছে আপনার। ভ্যাবাচেকা খাওয়া বা ধাঁধার মধ্যে পড়ে যাওয়া লিভারের বড় সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। বিপাক ক্রিয়ায় লিভার যখন সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারে না, তখন তার বিষাক্ত পদার্থ রক্তে ছেড়ে দেয়। এটা মস্তিষ্কে চলে যায়।